স্মার্টফোনের দুনিয়ায় হইচই। দুই সংস্থার প্রসেসারের মধ্যে চলছে তুমুল প্রতিযোগিতা। মেডিয়াটেক না কি কোয়ালকম— কার তৈরি প্রসেসর বেশি ভাল? কোনটি থাকলে দুরন্ত পারফর্ম করবে ফোন? এই প্রশ্নেও দ্বিধাবিভক্ত আমজনতা। যদিও কিছু দিন আগে পরিস্থিতি এমনটা ছিল না। মেডিয়াটেকের প্রসেসার নিয়ে যথেষ্ট নাক সিঁটকানি ভাব ছিল গ্রাহকদের।
ব্যবহারকারীদের অবশ্য এর জন্য দোষরোপ করা ঠিক নয়। মেডিয়াটেকের প্রসেসর যে এত দিন দুর্দান্ত কাজ করেছে এমনটা নয়। বরং এই প্রসেসার থাকলে একগুচ্ছ সমস্যার মুখে পড়ত ফোন। মুঠোবন্দি ডিভাইস বার বার হ্যাং করা বা গরম হয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে মেডিয়াটেকের প্রসেসরকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী করতেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের কথায়, সস্তা প্রসেসর তৈরি করছে মেডিয়াটেক, যার গুণগত মান বেশ খারাপ।
কিন্তু, বর্তমানে সেই পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ভারতের স্মার্টফোন নির্মাণকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে মেডিয়াটেকের। এ দেশের প্রসেসরের বাজারের ৪৪.৩ শতাংশ রয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির দখলে। অন্য দিকে, এদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কোয়ালকম কিন্তু পিছিয়ে আছে অনেকটাই। প্রসেসরের বাজারের মাত্র ৩৩.৯ শতাংশ দখল করতে পেরেছে তারা।
বিশ্ব বাজারের দিকে চোখ রাখলেও দেখা যাবে, ছবিটা প্রায় একই রকম। সেখানে ৩৮ শতাংশ জায়গায় জাঁকিয়ে বসে আছে মেডিয়াটেক। কোয়ালকম ধরে রেখেছে ২৮ শতাংশ জায়গা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আগের তুলনায় বর্তমানে কিছুটা ভাল প্রসেসার তৈরি করছে মেডিয়াটেক। কিন্তু তাদের তৈরি টুল লম্বা রেসের ঘোড়া নয়। দীর্ঘ দিন চালালে এখনও গরম হয়ে যাওয়া এবং হ্যাং করার মতো সমস্যার মুখে পড়ে মেডিয়াটেকের প্রসেসর।
তা হলে কোন জাদুবলে স্মার্টফোনের প্রসেসারের বাজারে এতখানি আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হল মেডিয়াটেক? বিশেষজ্ঞদের দাবি, ২০ হাজার টাকা বা তার চেয়ে কম দামি স্মার্টফোনগুলিতে একচেটিয়া ব্যবহার হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির প্রসেসর। নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের নাগালের মধ্যে থাকায় এই দামের মুঠোবন্দি ডিভাইস বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। ফলে স্মার্টফোন নির্মাণকারী সংস্থাগুলির কাছে মেডিয়াটেকের প্রসেসারের বেশ ভাল চাহিদা রয়েছে। এটাই সংস্থাটির বাজারমূল্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করছে।
অন্য দিকে, ৩০ হাজার টাকা বা তার বেশি দামের ফোনে ব্যবহার হচ্ছে কোয়ালকমের তৈরি স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসার। এর দামও মেডিয়াটেকের প্রসেসারের চেয়ে অনেকটাই বেশি। বিশ্লেষকদের দাবি, দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোয়ালকমের প্রসেসার অনেকটাই বেশি ভাল। ফোন গরম হওয়া বা হ্যাং করার মতো সমস্যা এতে প্রায় হয় না বললেই চলে।