জেমিনাই, পারপ্লেক্সিটি থেকে শুরু করে চ্যাটজিপিটি। নিখরচায় ডাউনলোড করে মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ-কম্পিউটারে দিব্যি ব্যবহার করা যাচ্ছে এই সমস্ত কৃত্রিম মেধা বা এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) প্রযুক্তি। অথচ সংশ্লিষ্ট টুলগুলি তৈরিতে কোটি কোটি ডলার খরচ হয়েছে গুগ্ল, ওপেনএআইয়ের মতো টেক জায়ান্ট সংস্থার। কোন জাদুতে বিনামূল্যে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করতে দিচ্ছে তারা? এর নেপথ্যে রয়েছে ব্যবসার অন্য ছক, বলছেন গ্যাজেট বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে ভারতের বাজার ধরতে জিয়ো বা এয়ারটেলের মতো টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলির সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের চুক্তি সেরে রেখেছে জেমিনাই, পারপ্লেক্সিটি ও চ্যাটজিপিটির নির্মাণকারী টেক জায়ান্টেরা। ফলে নিখরচায় সংশ্লিষ্ট এআই টুলগুলি মোবাইল ফোনে ব্যবহার করা যাচ্ছে। এর প্রথম কারণ হল এ দেশের বিশাল বৈচিত্রময় বাজার, যা বিশ্বের আর কোনও দেশে পাওয়া সম্ভব নয়।
ভারতে একাধিক ভাষাভাষী এবং সংস্কৃতির মানুষ বাস করেন। তাঁদের প্রত্যেকের রুচি আলাদা। আর তাই এ দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে এআই প্রযুক্তিকে নানা ভাবে কাজে লাগানোর প্রবণতা রয়েছে। টেক জায়ান্ট সংস্থাগুলি জানে ভারতীয়েরা যত বেশি কৃত্রিম মেধা ব্যবহার করবে, ততই ভাল প্রশিক্ষণ পাবে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি, যা এর উন্নতির জন্য একান্ত ভাবে প্রয়োজন।
এআইকে সঠিক ভাবে কাজ করতে চাই বিপুল তথ্য বা ডেটা। টেক জায়ান্ট সংস্থাগুলি মনে করে, নিখরচায় ব্যবহার করতে দিয়ে সেটা এ দেশের বাসিন্দাদের থেকে অনেকটাই পাচ্ছে তারা। এটা কৃত্রিম মেধাকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করছে। সংশ্লিষ্ট তথ্যের জন্য নির্মাণকারী সংস্থাগুলিকে আলাদা করে কোনও ব্যয় করতে হচ্ছে না। সে দিক থেকে দেখতে গেলে লাভবানই হচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয়ত, টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি থাকার কারণে সেখান থেকে অর্থপ্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে কৃত্রিম মেধা সংস্থার। তা ছাড়া টেক জায়ান্টগুলির একটা বড় অংশ জিয়োর মডেল অনুসরণ করছে। অর্থাৎ, প্রথমে সব কিছু বিনামূল্যে দিয়ে গ্রাহকের মন জয় করো। তার পর ধীরে ধীরে সেগুলির উপরেই বসিয়ে দাও চার্জ। তখন আর অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন না ব্যবহারকারী। এ-হেন ভবিষ্যৎ মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে বাজার দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কৃত্রিম মেধার টুলগুলি।
টেক জায়ান্ট সংস্থাগুলি যে এআই মডেল নিখরচায় ব্যবহার করতে দিচ্ছে, সেগুলি কিছুটা পুরনো। নতুন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কিন্তু বিনামূল্যের মেগা অফার নেই। সেগুলি টাকা দিয়েই কিনতে হচ্ছে ব্যবহারকারীদের। সে দিক থেকে একেবারেই সস্তা নয় জেমিনাই, পারপ্লেক্সিটি বা চ্যাটজিপিটি।