Advertisement
E-Paper

পকেট বাঁচিয়ে একলা ভ্রমণ, দেশের কোন কোন জায়গা রাখবেন তালিকায়?

একলা বেড়াতে গেলে নিরাপত্তার প্রশ্ন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই প্রয়োজন পরিকল্পনার। পকেট বাঁচিয়ে একলা ঘুরতে গেলে বেছে নিন এমন জায়গা, যেখানে গণপরিবহণ মেলে, স্বল্প খরচে থাকাও যায়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৫ ০৮:৪৭
স্বল্প খরচে একলা ঘুরতে চান? কোন কোন জায়গা রাখতে পারেন ভ্রমণের জন্য?

স্বল্প খরচে একলা ঘুরতে চান? কোন কোন জায়গা রাখতে পারেন ভ্রমণের জন্য? ছবি:ফ্রিপিক।

মনে মনে প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু ভাবনা জায়গা নিয়ে। প্রথম বার একলা ভ্রমণ। কোথায় যাবেন? মহিলা হোন বা পুরুষ— সুরক্ষার প্রশ্ন সকলের জন্যই প্রযোজ্য। তার উপর হোটেল, গাড়িভাড়াও বিষয় বটে!

একলা একটা গাড়ি ভাড়া করে ঘোরার খরচ অনেক বেশি। তার উপর হোটেলভাড়া, খাওয়াও আছে। ফলে এমন কোনও জায়গা চান, যেখানে নিশ্চিন্তে ঘোরাও যাবে, গণপরিবহণ ব্যবস্থা ভাল, আবার সস্তায় হোটেল, হস্টেল বা হোমস্টে-র সুবিধা মিলবে। এমন কোন কোন জায়গা বেছে নিতে পারেন?

রম্ভা-বরকুল

ওড়িশার রম্ভাও ঘুরে আসতে পারেন একলাই।

ওড়িশার রম্ভাও ঘুরে আসতে পারেন একলাই। —নিজস্ব চিত্র।

শুরু করতে পারেন যে জায়গায় থাকেন, সেই রাজ্য বা পড়শি রাজ্যের কোনও জায়গা দিয়ে। ওড়িশার রম্ভা-বরকুল কিংবা গোপালপুরকেও সেই তালিকায় রাখা চলে। অনুচ্চ পাহাড় ঘেরা চিল্কার রূপ উপভোগের জন্য রম্ভা এবং বরকুল দুই জায়গাই জনপ্রিয়। নিরাপত্তার দিকটি মাথায় রাখতে চাইলে থাকার জন্য এখানকার সরকারি পর্যটক আবাস বেছে নিতে পারেন। যেখানে খরচও মোটামুটি আয়ত্তে। চিল্কা ভ্রমণের জন্য নৌকার ভাড়া অন্য পর্যটকদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যায়।

রম্ভা কিংবা বরকুলে সকাল অথবা বিকেলের দিকে ভেসে পড়তে পারেন চিল্কার বুকে। এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ‘লেগুন’ এটি। তিন জেলা জুড়ে তার অবস্থান। জলের ব্যাপ্তি দেখলে সমুদ্র বলে মনে করাও কঠিন নয়। জলপথে পর্যটকের সঙ্গী হতে পারে অজস্র সিগাল। এখান থেকে দেখে নেওয়া যায় ব্রেকফাস্ট পয়েন্ট, বার্ডস আইল্যান্ড। বরকুল থেকে ঘুরে আসা যায় চিল্কার বুকে অবস্থিত কালীযাই মন্দিরে। এ ছাড়া রয়েছে নির্মলঝাড়, সেখানেও বহু পুরনো এক মন্দির রয়েছে। দেখে নেওয়া যায় বানিয়া-চিকিলিতে কৃষ্ণসার। গোপালপুরে পাহাড়ের উপরে তারাতারিণী মন্দিরও রাখতে পারেন ভ্রমণের তালিকায়। গোপালপুরে মিলবে দীর্ঘ সৈকত এবং সমুদ্রের সান্নিধ্য।

জয়পুর

জয়পুর হতে পারে একলা ভ্রমণের গন্তব্য।

জয়পুর হতে পারে একলা ভ্রমণের গন্তব্য। ছবি: সংগৃহীত।

ইতিহাস, দুর্গ, রাজস্থানের স্থাপত্যের প্রতি আগ্রহ থাকলে ‘পিঙ্ক সিটি’ হতে পারে একাকী ভ্রমণের গন্তব্য। রাজপুত রাজত্বের স্মারক স্বরূপ একাধিক দুর্গ, হাওয়া মহল শোভা পাচ্ছে এই শহরে। অম্বর প্যালেস, সিটি প্যালেস, হাওয়া মহল, নাহারগড় ফোর্ট, যন্তরমন্তর, জয়গড় দুর্গ-সহ অনেক কিছুই এখানে দ্রষ্টব্য। আর আছে এখানকার সংস্কৃতি। এই শহরে বিভিন্ন মানের এবং দামের হোটেল রয়েছে। অটো ভাড়া করে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়া যায়। জয়পুর থেকে রাজস্থানের অন্য প্রান্তে ভ্রমণের জন্যও ট্রেন, বাসের সুবিধা রয়েছে। একলা ভ্রমণার্থীর জন্য যা সুবিধাজনক।

বারাণসী

বেনারসে গঙ্গার ঘাটে আরতি।

বেনারসে গঙ্গার ঘাটে আরতি। ছবি: সংগৃহীত।

শুধু ধর্মীয় স্থান নয়, এ শহরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, শিক্ষাও। আসলে যিনি যে ভাবে দেখেন, এই শহর তাঁর কাছে সেই ভাবেই ধরা দেয়। নৌকো নিয়ে গঙ্গাবক্ষে ভেসে পড়লে একে একে দৃশ্যমান হয় ঘাটগুলি। দশাশ্বমেধের অনতিদূরে মণিকর্ণিকা শ্মশান, যেখানে কখনও নেভে না কাঠের চিতার আগুন। মৃত্যুপথযাত্রী অসংখ্য মানুষ সেই ধোঁয়ায় ভর করে স্বর্গারোহণের বিশ্বাস নিয়ে আজও বসে থাকেন গঙ্গাতীরের এই প্রাচীন জনপদে। আবার এই শহর ভীষণ ভাবে ভোজনরসিকদেরও। সর দেওয়া ঘন লস্যি, চাট, কুলফি, কচুরি-তরকারি, পেঁড়া, রাবড়ি, বেনারসি পান, হজমি, মুখশুদ্ধি—এই শহরে শুধু খাওয়ার জন্যেও আসা চলে। বিশ্বনাথ মন্দির, দশাশ্বমেধ ঘাট, বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির, বিশালাক্ষী মন্দির, বৌদ্ধ তীর্থ সারনাথ, এমন অনেক জায়গাই রয়েছে ঘুরে নেওয়ার জন্য। এখানকার হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিও জগৎজোড়া। গলি, তস্য গলি, প্রাচীনত্বের স্বাদ পেতে এই শহরও একলা ভ্রমণের তালিকায় রাখতে পারেন।

কাসোল

হাঁটাহাটিতে বিশেষ আলস্য না থাকলে হিমাচল প্রদেশের কাসোল, মণিকরণ, মানালি বা যে কোনও জায়গাই হতে পারে একলা ভ্রমণের আদর্শ স্থান। হিমাচল প্রদেশে থাকার জন্য হস্টেল পাওয়া যায়। রয়েছে হোমস্টে। আবার মণিকরণের মতো জায়গায় খুবই সস্তায় ঘর মেলে। ধর্মশালায় বিনামূল্যে খাওয়ার সুবিধাও নিতে পারেন। মণিকরণে রয়েছে উষ্ণ প্রস্রবণ, গুরুদ্বার। সেখান থেকে খানিক গেলে পৌঁছোনো যায় পার্বতী নদীর তীরে কাসোলে। নদীর ধারে একাধিক ক্যাফে রয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগও ভাল। ফলে একলা ভ্রমণার্থীর পর্যটন তালিকায় এই স্থানের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এই সমস্ত জায়গায় বিভিন্ন মানের হোটেল পাওয়া যায়। ট্রেকিংয়ের শখ থাকলে কাসোল থেকে মালামা, ক্ষীরগঙ্গা, তোস ভ্যালি— অনেক জায়গাতেই যাওয়া যায়।

হৃষীকেশ

রিভার র‌্যাফটিং এর জন্যও যেতে পারেন হৃষীকেশ।

রিভার র‌্যাফটিং এর জন্যও যেতে পারেন হৃষীকেশ।

আধ্যাত্মিকতা, রোমাঞ্চকর ক্রীড়া, ট্রেকিং, ক্যাম্পিং— যাঁর যেমন পছন্দ, সে ভাবেই উপভোগ করতে পারেন হিমালয়ের কোলের এই জায়গাটি। ট্রেনে করে হরিদ্বার এসে বাস, গাড়িতে হৃষীকেশ আসা যায়। হরিদ্বার থেকে দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। দেহরাদূনে রয়েছে বিমানবন্দর। সেখান থেকে হৃষীকেশ মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। বাঞ্জি জাম্পিং, রিভার র‌্যাফটিং, প্যারা গ্লাইডিং-এর শখ থাকলে মিটিয়ে নিতে পারেন এখানে। এখান থেকে উত্তরাখণ্ডের অনেক জায়গাতেই ট্রেক করা যায়। ধ্যান, যোগব্যায়ামের প্রতি আগ্রহ থাকলে তেমন প্রশিক্ষণেরও সুযোগ মেলে এখানে। রামঝুলা, নীর গড় জলপ্রপাত, লক্ষ্মণঝুলা— অনেক জায়গাই ঘুরে নেওয়া যায়। হেঁটেও এই শহর ঘুরে নেওয়া যায়।

Solo Trip Travel Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy