Advertisement
E-Paper

হাত বাড়ালেই নদী, পাহাড়, অরণ্য, বর্ষার শ্যামলিমা উপভোগে চলুন রংগো

বর্ষার সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এই বছর আর বেশি সময় নেই। চারদিকে সবুজ-সতেজ এখন। ফুলে-ফেঁপে উঠেছে নদী। এমন সময় কোথায় যাবেন? রইল উত্তরবঙ্গের একটি পাহাড়ি গ্রামের হদিস।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ১২:১১
পাহাড়, নদী, অরণ্যের হাতছানি একইসঙ্গে। ঘুরে নিন রংগো।

পাহাড়, নদী, অরণ্যের হাতছানি একইসঙ্গে। ঘুরে নিন রংগো। ছবি: সংগৃহীত।

এই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি তো, পরক্ষণেই রিমঝিম ধারাপাত। আবার মেঘের ফাঁক দিয়ে সূর্যের উঁকিঝুকি। বর্ষার প্রকৃতির রোম্যান্টিক রূপ বড্ড প্রিয়? কিন্তু উঁচু বহুতলের ফাঁকফোকর দিয়ে আকাশ দেখা যায় কই? শৈশবে দেখা জলে একাকার হয়ে যাওয়া খাল-বিলই বা কোথায় এখন?

বরং বর্ষা এলেই বিরক্তি লাগে। প্লাস্টিক ভেসে আসা কর্দমাক্ত নর্দমার পাঁক জলে পা ফেলতে হয় বলে। তা ছাড়া ব্যস্ত জীবনে প্রকৃতি উপভোগের ফুরসত কই? তার চেয়ে বরং ছুটির বন্দোবস্ত করে চলুন মেঘ-পিয়নের দেশে। শ্যামল প্রকৃতি নিয়ে অপেক্ষা করে রয়েছে উত্তরবঙ্গ। কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকে রয়েছে ছোট্ট একটি গ্রাম। নাম তার রংগো। বর্ষা উপভোগের সেরা ঠিকানা হতে পারে সেই স্থানই।

বর্ষার পাহাড়ে ধসের ভয় থাকে, থাকে জোঁকও। তবে ছোটখাটো সমস্যা যদি এড়ানো যায়, তা হলে বর্ষা উপভোগের সেরা জায়গা হতে পারে পাহাড়। পাহাড় ছাড়া এমন নিবিড় অরণ্য, খরস্রোতা নদীর উচ্ছ্বলতা, মেঘ-কুয়াশার কাটাকুটি খেলা দেখার সুযোগই বা কোথায়?

উত্তরবঙ্গের চাপড়ামারি অরণ্য পরিচিত নাম। সেই জঙ্গল, ঝালং পার করে পৌঁছতে হয় রংগো। বেশির ভাগ রাস্তাই অরণ্যের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। বর্ষায় ঘন সবুজ, সতেজ সেই অরণ্য। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রংগোর দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের মতো, নিউ মাল জংশন থেকে দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

কয়েক ঘণ্টার যাত্রাপথের পুরোটাই উপভোগ্য। যেতে যেতে মনে হতেই পারে, উত্তরবঙ্গে অসংখ্য পাহাড়ি গ্রাম থাকতে রংগো কেন? ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়লে যদি কোথাও ছাতা নিয়ে বেরোতে ইচ্ছা না-ও করে, তা হলেও হতাশ করবে না এই স্থান। ভারত-ভুটান সীমান্তবর্তী গ্রামটির উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে জলঢাকা। রংগো গ্রামের বেশির ভাগ হোম স্টে-ই গড়ে উঠেছে এক্কেবারে নদীর পাশে। হোম স্টে-র বারান্দায় বসলেই মনে হবে, হাত বাড়ালে পাহাড় ছোঁয়া যায়।

নদী-পাহাড় যেখানে এত কাছে মেলে, সেখানে বসে বৃষ্টি দেখাও কিন্তু কম রোম্যান্টিক নয়। রংগো গ্রামটি বড় অকৃত্রিম। নির্জন। পাহাড়ি কাঠের ছোট ছোট বাড়িগুলি রকমারি ফুল দিয়ে সাজানো। এখানে এলে সাক্ষী থাকা যায় সুন্দর প্রকৃতির, পাহাড়ি সরল জীবনযাত্রার। বর্ষার ভ্রমণে এর চেয়েও বেশি কিছু আর কী-ই বা চাওয়ার থাকতে পারে?

হাত বাড়ালেই নদী। একবার চলুন রংগোয়।

হাত বাড়ালেই নদী। একবার চলুন রংগোয়। ছবি: সংগৃহীত।

রংগোতে জলঢাকার উপর দিয়ে ছোট্ট একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়েছে। সেখান দেখে দেখা যায় নদীর আপন বেগে বয়ে চলা। দেখা যায়, সবুজ পাহাড়, মেঘ-কুয়াশার খেলা। আর আছে অজস্র পাখি। চাইলে হেঁটে এই গ্রামটির আনাচ-কানাচ ঘুরে নিতে পারেন। এই স্থান দু’দিন বসে জিরিয়ে নেওয়ার জন্য। এই স্থান ক্লান্ত জীবন থেকে মুক্তির জন্য। আর যদি চান, বৃষ্টি মাথায় করেই বেরিয়ে পড়তে পারেন এদিক-সেদিক। তবে সাবধান, বর্ষায় পাহাড়ি এলাকায় পা পিছলে যাওয়ার ভয় যেমন থাকে, তেমন থাকে জোঁকও। তাই বর্ষায় পা ফেলতে হয় সাবধানে। পোশাকও হতে হয় মরসুমের উপযোগী।

কাছেই রয়েছে দলগাঁও ভিউ পয়েন্ট। খুব সুন্দর বাঁধানো চত্বর। সযত্নে তৈরি করা বাগিচার মধ্যেই হাঁটা পথ। এই পথে যাওয়ার সময় দেখতে পাবেন সিঙ্কোনা গাছও। চাইলে অবশ্য গাড়ি নিয়ে ঝালং, বিন্দু ঘুরে নিতে পারেন। চলে যাওয়া যায় পারেন। চাইলে মূর্তির দিকেও যেতে পারেন। ঘুরে নেওয়ার অনেক জায়গাই আছে, ক’দিন ছুটিতে যাচ্ছেন, কী ভাবে সফর সাজাতে চাইছেন, তার উপর নির্ভর করবে পরিকল্পনা। রংগো গ্রামটি উপভোগ করার জন্য ২-৩ দিন যথেষ্ট।

কোথায় থাকবেন?

রংগো গ্রামে হোটেল খুঁজলে হতাশ হবেন। তবে হোম স্টে-র পরিচ্ছন্নতা বা আরাম কোনও অংশ কম নয়। বাড়তি পাওনা হবে পাহাড়ি মানুষের আতিথেয়তা। বড় যত্ন করে খাওয়ান তাঁরা। বেশ কয়েকটি হোম স্টে রয়েছে রংগোতে।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে নিউ মাল জংশন আসতে পারেন ট্রেনে। নিউ জলপাইগুড়ি হয়েও আসা যায়। মরসুম এবং গাড়ির উপর নির্ভর করে ভাড়া। নিউ মাল হয়ে এলে দূরত্ব পড়বে ৪০ কিলোমিটার। বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়েও রংগো আসতে পারেন। গ্রামে আসার জন্য গাড়ি ভাড়া করে নেওয়া ভাল। যাওয়ার আগে অবশ্যই আবহাওয়া এবং সেখানাকার রাস্তাঘাটের বর্তমান পরিস্থিতি জেনে নেওয়া দরকার।

Rongo Offbeat travel destinations North Bengal Travel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy