Advertisement
E-Paper

শীত পাততাড়ি গোটানোর আগেই চলুন কলকাতার আশপাশে তিন জায়গায়, এক দিনেই ঘুরে আসা যায়

শহুরে জীবনের ক্লান্তি কাটাতে প্রকৃতির সান্নিধ্য চাই? রইল এক দিনে ঘুরে আসার তিন ঠিকানা। শীত ফুরনোর আগেই ঢুঁ মারতে পারেন সেখানে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:২৭

ছবি: সংগৃহীত।

গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রার পারদ ক্রমশই চড়ছে। সকাল-সন্ধ্যা হালকা শিরশরানি থাকলেও, দিনের বেলা উধাও শীত। ঠান্ডা পুরোপুরি বিদায় নেওয়ার আগেই ঘুরে আসতে চান কোথাও? বেছে নিতে পারেন কলকাতার আশপাশের ৩ জায়গা, যেখান থেকে এক দিনেই ঘুরে আসা যায়।

আন্দুলপোতা

আন্দুলপোতার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নজরকাড়া।

আন্দুলপোতার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নজরকাড়া। ছবি: সংগৃহীত।

নিখাদ প্রকৃতির সঙ্গ চাইলে ঘুরে আসতে পারেন আন্দুলপোতা। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা মহকুমার ছোট্ট গ্রাম এটি। জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রের তালিকায় না পড়লেও পড়ন্ত বিকেলে এখানকার সৌন্দর্য মন ভোলানো। বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে রয়েছে মাছের ভেড়ি। তার মধ্যে দিয়েই চলে গিয়েছে পিচের আঁকাবাঁকা পথ। বাইক, টোটো দিব্যি চলে সেখানে। আকাশে রঙের খেলা চললে, সৌন্দর্য হয়ে যায় দ্বিগুণ। ভেড়িতে যখন মাছকে খাওয়ানো হয়, সে-ও দেখার মতো। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ খাবার খাওয়ার জন্য জলে ভেসে উঠেছে। খাবার পড়তেই তা নিমেষে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

ভেড়ি ছাড়া আশপাশে তেমন কিছু নেই অবশ্য। জায়গাটিও নির্জন। জলের পাড়ে বসে হাওয়া খেতে খেতে দিব্যি সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়। যে কোনও মরসুমেই সূর্য ডোবার সময় এই জায়গার রূপ পাল্টে যায়। সূর্যের রক্তিম আভা পড়ে জলেও।

শীতের মরসুমে দিনভর আশ মিটিয়ে ঘুরতে পারেন এই জায়গায়। গরমের দিনেও আসা যায়, তবে বিকেল ছাড়া অন্য সময় ভাল লাগবে না। আন্দুলপোতার জলাভূমির সৌন্দর্য বর্ষাতেও কিন্তু অপরূপ।

কী ভাবে যাবেন?

শিয়ালদহ স্টেশন থেকে হাসনাবাদ লোকালে যেতে হবে চাঁপা পুকুর। সেখান থেকে টোটো করে আন্দুলপোতার মাছের ভেড়ি এলাকায় চলে যেতে পারবেন। বাইকে বা গাড়িতেও আসা যায়।

বাসন্তী হাইওয়ে দিয়ে গেলে কলকাতা থেকে আন্দুলপোতার দূরত্ব পড়বে ৬৭ কিলোমিটার। টাকি রোড ধরে গেলে খোলাপোতা বাজার হয়ে চাঁপাপুকুর স্টেশনের লেভেং ক্রসিং পার করতে হবে। তার পর রাজাপুর বাজার হয়ে পৌঁছতে হবে আন্দুলপোতায়।

সবুজ দ্বীপ

নদীর বুকে গজিয়ে ওটা চর সবুজ দ্বীপ।

নদীর বুকে গজিয়ে ওটা চর সবুজ দ্বীপ। ছবি: সংগৃহীত

হুগলি নদীর বুকে তৈরি হয়েছে একটি চর। গাছগাছালি ভরা সেই স্থানই সবুজ দ্বীপ নামে পরিচিত। স্থানীয়দের কাছে এটি পিকনিকের স্থান। তবে নদী-প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে মাঝেমধ্যেই পর্যটকেরা সেখানে ভিড় করেন।

হুগলির বলাগড়ের সবুজদ্বীপে ঘুরে আসা যায় এক দিনেই। নদীর সান্নিধ্য, সবুজের সমারোহ আর নির্জনতা চাইলে এই জায়গা হতে পারে মনের মতো। হাওড়া-কাটোয়া লাইনের সোমরাবাজার স্টেশনের অদূরেই রয়েছে ফেরিঘাট। সেখান থেকে নৌকোয় ২০ মিনিটের পথ।

পানকৌড়ির শিকার ধরা, গাছগাছালিতে পাখির উঁকিঝুকি দেখতে দেখতেই পৌঁছনো যায় সবুজ দ্বীপ। শীতের মরসুমে এখানে ভিড় জমান স্থানীয় মানুষ, আশপাশ থেকে পিকনিকের জন্য আসা লোকজন। তবে এই দ্বীপের একটি অংশ সাজিয়ে গুছিয়ে কটেজ তৈরি করে থাকার ব্যবস্থা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফতর (ডব্লুবিটিডিসিএল)। তবে থাকতে না চাইলে পায়ে হেঁটেই ঘুরে নিতে পারেন দ্বীপটি। চাইলে নৌকা ভাড়া করে ভেসেও পড়তে পারেন নদীবক্ষে। সবুজদ্বীপ ঘুরে সময় থাকলে ঘুরে নিতে পারেন কালনার ১০৮ শিব মন্দিরও। বলাগড় থেকে কালনার দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া থেকে কাটোয়া লাইনের ট্রেন ধরে নামতে হবে সোমরাবাজার স্টেশনে। সেখান থেকে টোটোয় ফেরিঘাট। তার পর ২০ মিনিট নৌকায় করে সবুজদ্বীপ। কলকাতা থেকে দিল্লি রোড হয়ে বলাগড় বা সোমরাবাজার আসতে সময় লাগবে আড়াই ঘণ্টা। দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার।

দেউলটি

দেউলটিতেই রয়েছে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি।

দেউলটিতেই রয়েছে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। ছবি:সংগৃহীত।

শহরের কোলাহল থেকে কয়েক ঘণ্টার বিরতি চাইলে চলে যেতে পারেন রূপনারায়ণের কূলে দেউলটিতে। খানিক গ্রাম্য পরিবেশের স্বাদ পাবেন এখানে। দেউলটিতেই সামতাবেড় গ্রামে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। জীবনের শেষ কয়েক বছর তিনি এই গ্রামেই কাটিয়েছিলেন। শোনা যায়, এই বাড়িতে বসেই শেষের দিকের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় উপন্যাস লেখেন তিনি। কাঠের তৈরি আসবাবপত্র, লেখার টেবিল থেকে শরৎচন্দ্রের ব্যবহৃত ঘড়ি— সবই সযত্নে রক্ষিত রয়েছে। চাইলে রূপনারায়ণের তীরে খানিকটা সময় কাটাতে পারেন। শীতের নদ বড় শান্ত। তবে এই রূপনারায়ণের রূপই বদলে যায় ভরা বর্ষায়।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া থেকে মেদিনীপুর বা খড়গপুর লোকাল ধরে পৌঁছতে হবে দেউলটি। শরৎচন্দ্রের বাড়ি যেতে দেউলটি স্টেশন থেকে অটো ধরতে হবে। এ ছাড়া সড়কপথেও গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। কলকাতা থেকে সড়কপথে দূরত্ব ৬৩ কিলোমিটার। যেতে ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগবে।

travel Day Trip Sabuj Dweep Andulpota Deulti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy