Advertisement
E-Paper

ভেলোরে শুধু চিকিৎসার জন্য নয়, ঘুরতেও যাওয়া যায়, কী কী দেখার আছে?

তামিলনাড়ুর ভেলোরের পরিচিতি চিকিৎসা পরিষেবার জন্যই। তবে দক্ষিণ ভারতের এই শহরে ঘুরে দেখার মতোও অনেক কিছু আছে। কী কী দেখবেন সেখানে?

ঘুরতেও যাওয়া যায় ভেলোর শহরে। ছবিটি ভেলোর ফোর্টের।

ঘুরতেও যাওয়া যায় ভেলোর শহরে। ছবিটি ভেলোর ফোর্টের। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:০১
Share
Save

তামিলনাড়ুর ভেলোর শহরের নাম শোনেননি, এমন লোক ভারতে বোধ হয় কমই আছেন। দক্ষিণ ভারতের ওই জনপদের পরিচিতি বিশ্বমানের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য। দেশ-বিদেশ থেকে সারা বছর বহু মানুষ যান সেখানে চিকিৎসা করাতে।

তবে ওই শহরে যে শুধু বেড়ানোর জন্যও যাওয়া যায়, তা জানেন কি? আছে ইতিহাস, রয়েছে স্থাপত্য। আর ভিড়ভাট্টা, কোলাহল ছাড়িয়ে খানিক পাড়ি দিলে পাবেন নিখাদ প্রকৃতির স্পর্শ। কাজেই যান বা চিকিৎসার জন্য, হাতে দু’টি দিন থাকলেই ঘুরে নেওয়া যায় এই শহরের আনাচকানাচ। ঢেউখেলানো পাহাড়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ভেলোর শুধু ঘোরার জন্যও তালিকায় রাখলে মোটেই হতাশ হবেন না।

ভেলোর দুর্গ: ভেলোর শহরের মধ্যভাগে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সাক্ষ্য বহন করে সগর্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন দুর্গ। যত্নে সাজানো প্রশস্ত বাগিচা, দুর্গকে ঘিরে রাখা জলাশয় নিমেষে মন ভাল করে দিতে পারে।

জানা যায়, বিজয়নগরের সেই দুর্গ এক সময়ে বিজাপুরের সুলতান, তার পর মরাঠাদের নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে। শোনা যায়, এক সময়ে দুর্গের নিরাপত্তার জন্য তৈরি হয়েছিল পরিখা। সেখানে ছাড়া থাকত কুমির, যাতে শত্রু বা কেউ তা সাঁতরে না পেরোতে পারে। গ্রানাইট পাথরে তৈরি দুর্গটি এখনও সেই পরিখা দ্বারা বেষ্টিত। যত্নে রক্ষিত পরিখা সৌন্দর্য বাড়িয়েছে সেই স্থানের। এখন অবশ্য আর কুমিরের ভয় নেই। দুর্গ চত্বরেই রয়েছে মন্দির, মসজিদ এবং গির্জা। দেখে নিতে পারেন সেগুলিও।

জলকন্দেশ্বরের মন্দির, ভেলোর।

জলকন্দেশ্বরের মন্দির, ভেলোর। ছবি: সংগৃহীত।

জলকন্দেশ্বরের মন্দির: ভেলোরের দুর্গ চত্বরেই আছে মন্দিরটি। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের স্থাপত্যরীতিতে তৈরি। দক্ষিণী মন্দিরের মতোই তার আদল। দেওয়াল জুড়ে রকমারি মূর্তি খোদিত। পাথরের স্তম্ভ, কাঠের প্রবেশদ্বার, মন্দির জুড়ে অপূর্ব ভাস্কর্য দেখার মতো। মন্দিরের আরাধ্য শিব। বিগ্রহের আগেই চোখে পড়ে প্রদীপের অনির্বাণ শিখা। সেই আগুন কখনও নেভে না, বলা ভাল নিভতে দেওয়া হয় না। শোনা যায়, মন্দির নির্মিত হয়েছে জলের উপর।

শ্রীলক্ষ্মীনারায়ণী স্বর্ণ মন্দির: তামিলনাড়ুর শহর থেকে খানিক দূরে থিরুমালাইকোড়ি পাহাড়ের কোলে উজ্জ্বল সোনালি মন্দিরটি নজর কাড়ে দূর থেকেই। নামেই প্রকাশ, এই মন্দির নির্মিত সোনায়। গর্ভগৃহকে আচ্ছাদিত করে রাখা মন্দিরের চূড়া স্বর্ণে মোড়া। অর্ধমণ্ডপেও রয়েছে সোনার পাত। ১০০ একর জায়গার উপরে তৈরি মন্দির নির্মাণে ১৫০০ কেজি সোনা ব্যবহার হয়েছে বলে শোনা যায়। ভিতরে ফোয়ারা, যত্নে বানানো বাগিচা। উন্মুক্ত চত্বর থেকে দেখা যায় পিছনে ঢেউখেলানো পাহাড়ের সারি। সূর্যের আলোয় সোনার রূপ দেখার মতোই। তবে মন্দিরের সৌন্দর্য সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে পড়ন্ত বিকেলে।

পালামথি পাহাড়: শহর ছাড়িয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্য চান? তা হলে ঘুরে নিতে পারেন পালামথি পাহাড়। ভেলোরের দক্ষিণ-পূর্বে তার অবস্থান। পূর্বঘাট পর্বতমালার রূপ উপভোগ চাইলে ঘুরে নিতে পারেন এই স্থান। কাছেই রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, ওত্তেরি হ্রদ। শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশে খানিক ক্ষণ খাকলে কানে আসবে পাখির কলতান। শেষ বিকেলে পাহাড়ের বুকে অস্তমিত সৌন্দর্যের রূপ উপভোগের জন্যই এই জায়গা। পাহাড়ের মাথায় রয়েছে বালা মুরুগান মন্দির। পাহাড়ের কোলে হ্রদের সৌন্দর্যও অনুপম।

ইয়েলাগিরি: ইয়েলাগিরি পাহাড়ের কোলে রয়েছে পুনাগানুর হ্রদ। জলাশয়ের পাশেই সাজানো বাগান। ভেলোর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে এই স্থানে দু’দিন কাটিয়েও যাওয়া যায়। ঝর্না, পাহাড়, হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে এই স্থান আদর্শ।

কৃত্রিম ভাবে তৈরি পুনাগানুর হ্রদে নৌকাবিহারের সুযোগ মেলে। এ ছাড়াও অন্যান্য জলক্রীড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এখান থেকে চাইলে কাছেপিঠে হাইকিংয়ে যেতে পারেন। স্থানীয় চকোলেট তৈরির কারখানা ঘুরে খেয়ে দেখতে পারেন চকোলেটও।

এ ছাড়াও এখান থেকে ঘুরে নেওয়া যায় জ়ুলজিক্যাল পার্ক, মিউজ়িয়াম। হাতে দু’-তিন দিন সময় থাকলে এখান থেকে উটিও ঘুরে নিতে পারেন। তিরুপতি মন্দিরও দর্শন করে আসতে পারেন।

কোথায় থাকবেন?

চিকিৎসার জন্যই এই শহরের বিশেষ পরিচিতি। ফলে শুধু ভাল মানের হোটেল নয়, থাকার জন্য ভাড়ায় ঘর মেলে। বিভিন্ন মানের, দামের হোটেল রয়েছে এই শহরে।

কী ভাবে যাবেন?

ভেলোরে রয়েছে বিমানবন্দর। দেশের যে কোনও বড় শহর থেকে এখানে বিমানে যাতায়াত করা যায়। সড়কপথেও ভেলোর দেশের বড় বড় শহরের সঙ্গে যুক্ত। নিকটবর্তী স্টেশনের মধ্যে পড়ে ভেলোর ক্যান্টনমেন্ট, ভেলোর টাউন, কাটপড়ি রেলওয়ে স্টেশন।

Travel Destination Vellore South India Tourist Spots

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}