Advertisement
E-Paper

তীর্থভ্রমণ, মধুচন্দ্রিমা দুই-ই হবে, বেড়ানোর জন্য এমন কোন জায়গা বেছে নিতে পারেন নব্য বিবাহিতেরা?

নতুন জীবনের শুরুতে তীর্থভ্রমণের পুণ্য অর্জন করতে চান অনেক নবদম্পতি। সেই তালিকায় কোন স্থান রাখা যায়, যেখানে তীর্থ ভ্রমণের পাশাপাশি মধুচন্দ্রিমাও সম্ভব। রইল বিবিধ ধর্মবিশ্বাসের তিন তীর্থ তথা মনোরম স্থানের খোঁজ।

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৫ ১১:১৭

মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার জন্য কারও যেমন পছন্দের তালিকায় থাকে অরণ্য, পাহাড়, সমুদ্র, তেমনই কেউ কেউ খোঁজেন ধর্মীয় স্থানও। নতুন জীবনের শুরুতে তীর্থভ্রমণে পুণ্য অর্জন করতে চান অনেক নবদম্পতি। সেই তালিকায় কোন স্থান রাখা যায়, যেখানে তীর্থ ভ্রমণের পাশাপাশি মধুচন্দ্রিমাও সম্ভব।

বৈষ্ণোদেবী

কাটরা থেকে বৈষ্ণোদেবীও ঘুরে আসা যায়।

কাটরা থেকে বৈষ্ণোদেবীও ঘুরে আসা যায়। ছবি :সংগৃহীত।

জম্মুর কাটরায় বৈষ্ণোদেবী হল জনপ্রিয় তীর্থক্ষেত্র। কেউ বলেন, বৈষ্ণোদেবী আদিশক্তির প্রকাশ, আবার কারও মতে তিনি মহালক্ষ্মীর রূপ। তবে এই স্থানের জড়িয়ে নানা লোককথা। রয়েছে আধাত্ম্যিক মাহাত্ম্য। পাহাড়ের মাথায় দেব-দর্শনে উঠতে হয় পায়ে হেঁটে। পথ কম বেশি ১৪-১৬ কিলোমিটার। বাঁধাই পথের দু’পাশে সার দিয়ে দোকান। খাওয়া-বিশ্রামের বন্দোবস্ত।

ট্রেনে বা গাড়িতে জম্মু পৌঁছে সেখান থেকে কাটরা। কাটরা থেকেই যেতে হয় বৈষ্ণোদেবী দর্শনে। হাঁটতে না পারলে রয়েছে হেলিকপ্টারও। অনলাইনে আগাম বুকিং হয়। এ ছাড়া আছে ডুলি, ঘোড়াও। মধুচন্দ্রিমায় হেঁটে একসঙ্গে দেবীদর্শনে যাওয়ার পথে গল্প-কথায় হতেই পারে একে-অপরকে চিনে নেওয়ার পালা। বৈষ্ণোদেবী দর্শনের আগে অনলাইনে টিকিট কেটে নিতে পারেন, সুবিধা হবে।

বৈষ্ণোদেবী দর্শন করে চলে যেতে পারেন শ্রীনগর। ভুবন ভোলানো সৌন্দর্যের জন্য কাশ্মীর ভূস্বর্গ বলে পরিচিত। এক সময়ের জনপ্রিয় মধুচন্দ্রিমার এই স্থানে কিছুটা ছন্দপতন ঘটিয়েছে গত এপ্রিল মাসের ভয়াবহ জঙ্গি হামলা। তবে সম্প্রতি ছন্দে ফিরেছে জনজীবন। শ্রীনগর যাওয়ার নতুন রেলপথও পর্যটক আকর্ষণ বাড়িয়েছে। শ্রীনগর, পহেলগাঁও, সোনমার্গ, মোগল উদ্যান-সহ অনে স্থান রয়েছে এখানে। তবে যদি কাশ্মীর এড়াতে যান দিল্লিও ঘুরে নিতে পারেন। চলে যেতে পারেন পঞ্জাব-অমৃতসরের দিকেও। পঞ্জাবের স্বর্ণমন্দিরও একটি পবিত্র তীর্থক্ষেত্র।

অজমের শরিফ

অজমের শরিফও  ঘুরে নিতে পারেন।

অজমের শরিফও ঘুরে নিতে পারেন। ছবি:সংগৃহীত।

রাজস্থানের অজমের শহরের রয়েছে বহু পুরনো একটি তীর্থক্ষেত্র, যা সুফি সাধক খ্বাজা মইনুদ্দিন চিশতির মাজার নামে পরিচিত। লোকবিশ্বাস, এই মাজারে চাইলে মনস্কামনা পূরণ হয়। অজমের শরিফ এমন এক স্থান যেখানে হিন্দু, মুসলমান, শিখ নির্বিশেষে সমস্ত ধর্মের মানুষই আসেন। মাজারে চাদর চড়িয়ে ‘দোয়া’ চাওয়া হয়। অজমের শরিফে নজর কাড়ে বিশাল লোহার পাত্র। সেগুলি দেখতে গেলে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয়। একটির ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৪, ৭০০ কোজি এবং আরেকটির ২২০০ কেজি। লোকমুখে শোনা যায় সম্রাট আকবর এবং জাহাঙ্গির দরগায় এই দু’টি উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন। বিশেষ বিশেষ দিনে বিশাল পাত্রে রান্না করে তা বিতরণ করা হয়।

অজমের শরিফের অদূরেই রয়েছে আড়ই দিন কা ঝোপড়া। কিংবদন্তি অনুসারে, মসজিদটি মাত্র আড়াই দিনে নির্মিত হয়েছিল, যদিও বাস্তবে তা মানা প্রায় অসম্ভব। তবে অন্য একটি মত অনুসারে, এখানে মূলত আড়াই দিনের জন্য একটি মেলা অনুষ্ঠিত হত, যার থেকে এই নামটি এসেছে। শোনা যায় সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবকের হাতেই এটি নির্মিত। প্রবেশপথ এবং সম্মুখভাগের সাতটি খিলান ইসলামি স্থাপত্যের উদাহরণ।

অজমের শরিফ থেকে ঘুরে আসা যায় পুষ্কর। মোটামুটি ঘণ্টাখানেকেই পৌঁছনো যায় সেখানে। পুষ্কর হিন্দুদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্রে। এখানে রয়েছে বিশাল একটি হ্রদ। সেই হ্রদের চারপাশে আছে বাঁধানো ঘাট। এখানে রয়েছে ব্রহ্মার মন্দির। বিশেষ তিথিতে এখানে মেলা বসে।

অজমের শরিফ থেকে সড়কপথে জয়পুরের দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার, যোধপুরের দূরত্ব ২০৫ কিলোমিটার এবং উদয়পুরের দূরত্ব ২৬৫ কিলোমিটার। রাজস্থানের তিন শহরই মধুচন্দ্রিমার জন্য বেছে নেওয়া যায়।

ট্রেনে বা বিমানে জয়পুর এসে সেখানে থেকে অমের ফোর্ট, হাওয়া মহল-সহ দর্শনীয় স্থান ঘুরে অজমের শরিফ দর্শন করে রাজস্থানের অন্য শহরে চলে যেতে পারেন।

গোয়া

বম জেসাস ব্যাসিলিকা।

বম জেসাস ব্যাসিলিকা। ছবি:সংগৃহীত।

মধুচন্দ্রিমা যাপনের জন্য, বিশেষত শীতের দিনে গোয়া তুলনাহীন। পাহাড়-সমুদ্রের অসাধারণ মেলবন্ধন চোখে পড়ে এখানকার একাধিক সৈকতে। এই জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন, তেমনই এর আনাচ-কানাচে রয়েছে ঐতিহাসিক নানা স্থান। আছে বহু পুরনো গির্জাও। সেই দিক দিয়ে এই স্থানও কিন্তু তীর্থক্ষেত্রই।

পুরনো গোয়ায় রয়েছে বম জেসাস ব্যাসিলিকা। মূল গির্জাটিতে সেন্ট ফ্রান্সিস জ়েভিয়ারের দেহাবশেষ রয়েছে। পানাজি থেকে স্থানটির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। গির্জাটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অংশ।

গোয়া এক সময় ছিল পর্তুগিজদের উপনিবেশ। উত্তর থেকে দক্ষিণ— গোয়ার দুই প্রান্তে যেমন রয়েছে অজস্র সৈকত, তেমনই আছে গির্জাও। তার মধ্যে অনেকগুলি বেশ প্রাচীন। দেখে নিতে পারেন রোজ়ারি চার্চ, সেন্ট ফ্রান্সিস অফ অ্যাসিসির চার্চ-সহ একাধিক গির্জা। মান্ডবী নদী পানাজির সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। ঘুরে নিতে পারেন কালাঙ্গুট, অঞ্জুনা, বাগা, ক্যান্ডোলিম, পালোলেম, কোলভা-সহ একাধিক সৈকত। দোনা পাওলাও গোয়ার খুব সুন্দর একটি জায়গা। এখানে নজর মিনার থেকে সূর্যাস্ত উপভোগ্য।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy