ভোরবেলা উঠতে না পারলেও সন্ধেবেলার গঙ্গারতির দৃশ্য কিন্তু ‘মিস্’ করা যাবে না। —নিজস্ব চিত্র
শ্রাবণ মাসে কাশী বিশ্বনাথের পুজো দেওয়ার ইচ্ছা? তাই বারাণসী যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। কিন্তু বাড়ির ছোটদের নিয়ে যাবেন, একটু বেড়াতেও হবে। শুধু কয়েকটি ধর্মস্থানে ঘুরেই কেটে যেতে পারে কয়েকটি দিন। বারাণসীর আশপাশে দেখার জায়গার অভাব নেই। তবে দিন দুয়েক হাতে থাকলে কোথায় কোথায় যাবেন, তা আগে থেকে ভেবে নেওয়া জরুরি।
কাশী বিশ্বনাথ মন্দির
দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ অর্থাৎ শিবের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম হল কাশী বিশ্বনাথ। শিব এখানে ‘বিশ্বনাথ’ বা ‘বিশ্বেশ্বর’ নামে পূজিত হন। শোনা যায় মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব বিশ্বনাথের মন্দির ধ্বংস করে সেখানে একটি মসজিদ স্থাপন করেন। মন্দিরের পাশে সেই মসজিদটির অস্তিত্ব কিন্তু এখনও রয়েছে। ঐতিহাসিকদের মতে, আকবরের নবরত্ন সভার অন্যতম এক রত্ন রাজা টোডরমল এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পর আওরঙ্গজেব তা ধ্বংস করে দেন এবং শিবকে লুকিয়ে রাখেন জ্ঞানবাপী মসজিদে। ১৭৩৫ সালে মন্দির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন ইনদওরের মহারানি অহল্যাবাই। এই মন্দির নিয়েও অজস্র কাহিনি রয়েছে। পুজো দেওয়া ছাড়াও এই মন্দিরটির ইতিহাস সম্পর্কে জানতে গেলে গোটা একটা দিনই লেগে যেতে পারে।
দশাশ্বমেধ ঘাট
কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের সবচেয়ে কাছে রয়েছে এই দশ্বাশ্বমেধ ঘাট। এই ঘাট নিয়ে পুরাণে বহু কথাই বর্ণিত রয়েছে। শোনা যায় মহাদেবকে এই স্থানে আমন্ত্রণ করার জন্য ব্রহ্মা ১০টি অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। এই ঘাটের কাছাকাছি থাকতে পারলে ভোরে এবং সন্ধেবেলা গঙ্গা আরতি দেখতে ভুলবেন না। ঘাটের কাছেই বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে। চাইলে দেখে নিতে পারেন সেগুলিও। তবে হাতে যদি একটা গোটা দিন থাকে, তা হলে ‘মগনলাল মেঘরাজ’-এর মতো বজরা থুড়ি নৌকা করে সব ক’টি ঘাট এক বার করে ছুঁয়ে যেতে পারেন।
সারনাথ
বেনারস থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সারনাথ। এই জায়গার সঙ্গে আবার গৌতম বুদ্ধের যোগ রয়েছে। শোনা যায় বোধগয়ায় ‘বোধি’ লাভ করার পর সারনাথে এসেই প্রথম ধর্মের বাণী প্রচার করতে শুরু করেছিলেন। ফলে বৌদ্ধ তীর্থক্ষেত্র হিসাবে এই জায়গা বেশ জনপ্রিয়। বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর সম্রাট অশোক এখানে একাধিক স্তূপ এবং মঠও নির্মাণ করেছিলেন।
বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির
দুর্গা এখানে বিন্ধ্যবাসিনী নামে পরিচিত। মহিষাসুর বধের জন্য দেবতাদের তেজে দুর্গার আবির্ভাব হয়েছিল এই পর্বত শিখরেই। এই বিন্ধ্যবাসিনী দেবীই পরবর্তী কালে বধ করেছিলেন শুম্ভ-নিশুম্ভকে। আদ্যাশক্তির কোষ থেকে উৎপন্ন হয়েছিল বলে এই বিন্ধ্যবাসিনীর আরও এক নাম কৌষিকী।
বিশালাক্ষী মন্দির
সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম একটি পীঠ হল এই বিশালাক্ষী। জনশ্রুতি, দক্ষযজ্ঞে সতীর দেহ ছিন্নভিন্ন হওয়ার পর এখানে তাঁর চোখ এসে পড়েছিল। তাই ভক্তদের কাছে এটিও একটি দর্শনীয় স্থান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy