দরিদ্র পরিবারে অন্তসঃত্ত্বা তরুণীকে হাসপাতালের মেঝেতে সর্বসমক্ষে সন্তান প্রসব করতে বাধ্য করলেন চিকিৎসক। এমন বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের এক হাসপাতালে। গত মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির আবেদন করেও কোনও ফল হয়নি তরুণীর। উল্টে তাঁকে চিকিৎসকের কটূক্তি শুনতে হয়। মেঝেতে বসিয়ে রাখা হয় অন্তসঃত্ত্বা তরুণীকে। মর্মান্তিক ঘটনাটির একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তা ভাইরাল হয়েছে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে মাটিতে বসে তীব্র ব্যথায় চিৎকার করছেন তরুণী। তাঁকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেননি কোনও কর্মীই। কেবল এক বয়স্ক আত্মীয়াকে তরুণীর পাশে বসে তাঁকে শান্ত করতে দেখা গিয়েছে। সেই ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। হাসপাতালের পরিষেবার মান নিয়ে সরব হয়েছেন নেটাগরিকেরা। ঘটনার দিন রাত ৯:৩০টা নাগাদ প্রসববেদনা উঠতে তরুণীকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, এই হাসপাতালে প্রসব করানো হয় না। কোনও সহায়তা ছাড়াই মহিলাটি হাসপাতালের মেঝেতে কয়েক ঘণ্টা ধরে পড়েছিলেন। ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে রাত ১:৩০ মিনিট নাগাদ জনসমক্ষে সন্তান প্রসব করেন। প্রসবের সময় কোনও চিকিৎসাকর্মী তাঁকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেননি বলে পরিবারের অভিযোগ।
অন্তসঃত্ত্বা তরুণীকে হাসপাতালের শয্যাতেও শুতে দেওয়া দূর, প্রসবের পর এক জন নার্স তরুণীকে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েননি। নার্স জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘মজা হল, আর মা হবি?’’ এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন সদ্য মা হওয়া তরুণীর পরিবারের এক সদস্যা। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, যদি শিশুটির কিছু হত তাহলে কে দায়িত্ব নিত? হরিদ্বারের মুখ্য চিকিৎসা আধিকারিক আরকে সিংহ জানিয়েছেন, তাঁর কাছে এই ধরনের একটি ঘটনার অভিযোগ জমা পড়েছে। বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষা করছেন তিনি। তিনি জানান, রাত সাড়ে নটা নাগাদ তরুণী হাসপাতালে আসেন, রাত দেড়টার সময়ে জরুরি বিভাগে প্রসব করেন তিনি। সিংহ নিশ্চিত করেছেন যে, রাতে কর্তব্যরত চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক সোনালিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও, এই ঘটনায় কর্তব্যরত দুই নার্সের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে সরকারি নোটিস জারি করা হয়েছে।