গভীর খালে নামতেই সেখানে আটকা পড়ে গিয়েছিল একটি হাতি। বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পাচ্ছিল না সে। ২৮ ঘণ্টা ধরে সেখানেই ঘুরপাক খাচ্ছিল গজরাজ। তাকে উদ্ধারে নামলেন শতাধিক বনকর্মী। বন্দি হাতিকে বিশেষ কায়দায় উদ্ধার করলেন তাঁরা। কর্নাটকের একটি গভীর খালে পড়ে যাওয়া হাতি উদ্ধারের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে সমাজমাধ্যমে। মুহূর্তে ভাইরাল হয়েছে ভিডিয়োটি।
বন দফতরের আধিকারিক প্রবীণ কাসওয়ানের এক্স হ্যান্ডল থেকে উদ্ধার অভিযানের ভিডিয়োটি পোস্ট করা হয়েছে। প্রবীণ লিখেছেন, ‘‘দিন কয়েক আগে কর্নাটকের শিবানসমুদ্রে যা ঘটেছিল তা সিনেমার দৃশ্যের থেকে কম কিছু না।’’ গত রবিবার, ১০-১২ বছর বয়সি একটি হাতি জল খেতে এসে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬০ ফুট গভীর খালে পড়ে যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য জলের সঙ্গে লড়াই করতে করতে প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিল বন্যপ্রাণীটি। বনবিভাগের কর্মীরা তৎপর হতেই প্রাণ বাঁচল হাতিটির।
ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, হাতিটি খালের জলের তীব্র স্রোতে আটকে পড়েছে। খালটির কংক্রিটের তৈরি দেওয়াল মসৃণ এবং খাড়া। বিশাল দেহ নিয়ে সেই দেওয়াল বেয়ে ওঠা অসম্ভব ছিল হাতিটির পক্ষে। হাতিটিকে সোজা করে টেনে তোলাও বিপজ্জনক ছিল। কারণ এতে আঘাত লাগতে পারত সেটির। তাই বনকর্মীদের দলটি একটি যন্ত্র কাজে লাগিয়েছিলেন। প্রথমে চিকিৎসকেরা হাতিটিকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। তাতে সেটি কিছুটা শান্ত হয়। এর পর ক্রেনের সাহায্যে একটি বড় লোহার জালের প্ল্যাটফর্ম খালে নামানো হয়। নিজেদের জীবনের পরোয়া না করে বনরক্ষীরা জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁরা হাতির শরীরে শক্ত দড়ি বেঁধে প্ল্যাটফর্মে তুলে দেন।
বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে সেই উদ্ধার অভিযান চলে। এর পর ক্রেনের সাহায্যে ধীরে ধীরে হাতিটিকে লোহার প্ল্যাটফর্মে তুলে আনা হয়। একটি ট্রাকের উপর নামিয়ে দিয়ে তাকে নিরাপদ আস্তানায় ফিরিয়ে দেন বনকর্মীরা। ভিডিয়োটি এক্স হ্যান্ডলে ছড়িয়ে পড়তেই বহু মানুষ তা দেখেছেন। ২ হাজারের বেশি নেটাগরিক তাতে লাইক দিয়েছেন। বনকর্মীদের তৎপরতা ও সাহসকে কুর্নিশ জানিয়েছেন নেটাগরিকেরা। উদ্ধার অভিযানে জড়িত বনকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।