নিজের মৃত্যু কেমন হবে সে বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলেন ২২ বছরে তরুণী। হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন আত্মহত্যা করেন তরুণী। পরিবারের সদস্যদের কাছে যে ভাবে নিজের মৃত্যুর বর্ণনা দিয়েছিলেন ঠিক সেই অবস্থাতেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে বার করা হয় শেষমেশ। ঘটনাটি ২০১৫ সালের জুলাই মাসের। তরুণীর মৃত্যু সংক্রান্ত একটি মামলার রায় দিতে দেওয়ার সময় বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। লন্ডনের ২২ বছর বয়সি অ্যালিস ফিগুয়েরেডো মারা যান ইলফোর্ডের গুডমেইস হাসপাতালে।
মঙ্গলবার, হাসপাতালের চিকিৎসা ও পরিষেবা নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় নর্থ-ইস্ট লন্ডন ফাউন্ডেশন এনএইচএস ট্রাস্টকে ৬ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা জরিমানা করে আদালত। অ্যালিসের আত্মহত্যার ঘটনায় দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে ৫৩ বছর বয়সি ওয়ার্ড ম্যানেজার বেঞ্জামিন অনিনাকওয়াকে ছ’মাসের জন্য নিলম্বিত করা হয়েছে। অ্যালিস দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তার মধ্যে ছিল বাইপোলার ডিজ়অর্ডার এবং অ্যানোরেক্সিয়া। শৈশব থেকেই রোগগুলির সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল অ্যালিসকে। বাইপোলার ডিজ়অর্ডারের ফলে তাঁর মেজাজের ঘন ঘন পরিবর্তন ঘটত। অন্য দিকে না খাওয়ার বাতিক দুর্বল করে দেয় অ্যালিসকে। ফলে দ্রুত ওজন কমছিল। শেষের দিকে খাওয়াদাওয়া বন্ধই করে দেন তিনি। একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর অবস্থার অবনতি হয়েই চলেছিল।
হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়ই অ্যালিস বলতেন তিনি আর বাড়ি ফিরবেন না। হাসপাতাল থেকেই তাঁর দেহ একটি ব্যাগে করে বার করতে হবে। অ্যালিসের কথার গুরুত্ব দেননি পরিবার ও চিকিৎসকেরা। এর আগেও বহু বার অ্যালিস আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কয়েক দিন পর হাসপাতালের ভিতরে শৌচাগারে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন কর্মীরা। মাথায় জড়ানো প্লাস্টিকের ব্যাগ। শৌচাগারে ফেলে রাখা বিন ব্যাগ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তরুণী। অ্যালিসের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য যথাযথ যত্ন নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় ২০২৩ সালে। পরবর্তী তদন্তে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে প্রশ্ন ওঠে, অ্যালিসের আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে জানা সত্ত্বেও তাঁর ঘরে সম্ভাব্য বিপজ্জনক জিনিসপত্র রেখে যাওয়া হয়েছিল।