Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

জ্বরে ভুগে মৃত আরও ১০ জন

বুধবার রাতেই মারা যান দত্তপুকুর থানার ছোট জাগুলিয়ায় বাসিন্দা মায়া পাকরে (৪৮)। ধুম জ্বর নিয়ে মায়াদেবীকে বুধবার রাতে ছোট জাগুলিয়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জ্বরে ভুগে মৃতের সংখ্যা। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতা-সংলগ্ন তিন জেলায় মারা গিয়েছেন ৯ জন। সাত জনই উত্তর ২৪ পরগনার। একজন হাওড়া এবং অন্যজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। মালদহে মারা গিয়েছেন আরও ১ জন। কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ, হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরে মারা যান তাঁরা। হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করালে মৃত্যু এড়ানো যেতে পারত বলে দাবি পরিবারগুলির।

মৃত ১০ জনের মধ্যে পাঁচ জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও নার্সিংহোম। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে এ পর্যন্ত মোট ৪০ জন মারা গেলেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২০,১২৫। তবে হাসপাতালের রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’’

বারাসত ২ ব্লকের কীর্তিপুর মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা সমরেশ ঘোষ (৪৮) গত রবিবার জ্বর নিয়ে মধ্যমগ্রাম মাতৃসদন হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাঁকে বারাসতের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বুধবার রাতে মারা যান চৌমহা পদ্মরাজপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমরেশবাবু। তাঁর স্ত্রী কীর্তিপুর ১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মিঠু ঘোষ জানান, স্বামীর মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গি লেখা হয়েছে।

বুধবার রাতেই মারা যান দত্তপুকুর থানার ছোট জাগুলিয়ায় বাসিন্দা মায়া পাকরে (৪৮)। ধুম জ্বর নিয়ে মায়াদেবীকে বুধবার রাতে ছোট জাগুলিয়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। তাঁর মৃত্যুর পরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকজন।

জ্বরে কিছু দিন ধরে ভুগছিলেন বারাসত-সংলগ্ন কদম্বগাছি মধুপুর রেলগেটের বাসিন্দা কবিতা দাস (৩৮)। বৃহস্পতিবার সকালে আরজিকরে মারা যান তিনি।

তিন দিন আগে জ্বরে পড়েন দেগঙ্গার নূরনগর পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর গ্রামের পাড়ুই পাড়ার বাসিন্দা কল্পনা মণ্ডল (৪৯)। তাঁর ছেলে বাপি জানান, সোমবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভর্তি না নিয়ে ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান কল্পনাদেবী।

দেগঙ্গার দক্ষিণ কলসুরের বাসিন্দা মাসকুরা বিবি (৩২) পাঁচ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। সোমবার তাঁকে ভর্তি করা হয় বাদুড়িয়ার রুদ্রপুর হাসপাতালে। বুধবার সেখান থেকে পাঠানো হয় বসিরহাট হাসপাতালে। নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় মাসকুরার। বনগাঁ ব্লকের মাধবপুর গ্রামের দিশা বিশ্বাস (১১) মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজে মারা গিয়েছে। মৃত্যুর শংসাপত্রে কারণ হিসাবে লেখা আছে, ‘ডেঙ্গি শক সিনড্রোম।’

বনগাঁর রসুলপুরের গোবিন্দ সরকার (৫২) জ্বরে ভুগছিলেন চার দিন ধরে। বুধবার বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার মারা যান হাওড়ার সলপের বাসিন্দা সুলতা নস্কর (৩৯) স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, তাঁর রক্তের নমুনায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। বিসি রায় হাসপাতালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুরের বাসিন্দা বছর দশেকের সাইনা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে ভুগে। পুরাতন মালদহের নারায়ণপুরের বাসিন্দা চায়না ঘোষ (৪০) বৃহস্পতিবার মারা যান। ২৩ অক্টোবর তাঁকে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। সাত দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গিই বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE