বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যু হল এক তরুণীর। কোনও মতে প্রাণে বেঁচেছেন তাঁর ভাই। পুলিশ জানায়, সোমবার গভীর রাতে ভাটপাড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের রুস্তম গুমটিতে একটি পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। সেই সময়ে ঘরের মধ্যে ছিলেন ইবরানা ওরফে খুশবু খাতুন (২৬) ও তাঁর ভাই মহম্মদ আফজল। বিকট আওয়াজ শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে খুশবু ও আফজলকে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে টেনেহিঁচড়ে বার করে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে খুশবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। আফজলের আঘাত গুরুতর নয় বলেই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
চটকলের কুলি লাইনের রুস্তম গুমটিতে বেশ কয়েকটি পুরনো বাড়ি আছে। পুরসভার তরফে অনেকগুলি বাড়ি ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিতও করা হয়েছে। তার মধ্যে এই বাড়িটিও ছিল বলে জানান স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি মনোজ পাণ্ডে। মনোজের দাবি, ‘‘পুরসভা সতর্ক করলেও বাসিন্দারা সরতে চান না, মাথা গোঁজার ঠাঁই হারানোর চিন্তায়। এই বাড়িটিও বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল। ভাই বেঁচে গেলেও দিদিকে বাঁচানো গেল না। আমরা আবার এই ধরনের বাড়িগুলির বাসিন্দাদের সতর্ক করব।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দেওয়াল ভাঙার আগে বাড়িটি বসে গিয়েছিল। তখন টের পেলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটত না। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে আফজলের। তার উপরে দিদির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তিনি। ওই যুবক বলেন, ‘‘কখন বাড়ি বসে গিয়েছে, টের পাইনি। ঘুমোচ্ছিলাম দু’জনেই। রাত দেড়টা নাগাদ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল দেওয়াল। ছাদটাও নেমে এল নীচে। যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠেছিলাম। সব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল মুহূর্তে। কিছু ক্ষণ পরে লোকজনের আওয়াজ শুনতে পেলাম। সবাই মিলে আমাদের বার করল। তখনও বুঝিনি, দিদি নেই।’’ প্রতিবেশী টিঙ্কু আলম সরকারি সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যে বেঁচে রইল, তার মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু সরকার দিক।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)