নাচের তালে নামল সন্ধে।
মহিলাদের খোঁপায় গোঁজা ফুল। পরনে রঙিন শাড়ি। সারিবদ্ধ ভাবে পরস্পরের কোমর ধরে ধামসা মাদলের তালে নাচছিলেন ওঁরা। হাতে গাছের কচি পাতা নিয়ে নাচে সামিল পুরুষেরাও। সঙ্গে গান, ‘‘হৈ সাসো, মা চটৈরৈ, যা গোসায়ে, টুডে মা রাগে কা...।’’ যার অর্থ, অশ্বত্থ গাছের পুরনো পাতা খসে যাচ্ছে। গাছে থাকা পাখি সেই দুঃখে চোখের জল ফেলছে। কেঁদো না পাখি, ফের গজাবে নতুন পাতা-ফুল।
প্রতি বছরের মতো বসন্ত বরণের জন্য বাহা বোঙা উৎসব ঘিরে শনিবার সাগরের খাসরামকর-খানসাহেব আবাদ আদিবাসী পাড়ার মহিলা-পুরুষেরা এ ভাবেই আনন্দে মেতে উঠলেন। সকালে তাঁরা পুজো দেন শাল-সেগুন গাছের গোড়ায়, জ়াহের থান-এ। বলি দেওয়া হয় পাঠা। বলির ভোগ দুপুরে সকলে এক সঙ্গে বসে পাত পেড়ে খান। বিকেলে নাচ-গানের আসর।
উৎসবের পুরোহিত সমায় টুডু বলেন, ‘‘শত শত বছর ধরে আমাদের এই পুজো হয়ে আসছে। পুজোর মূল কথা, এই সময়ে প্রকৃতিতে পরিবর্তন আসছে। পুরনো পাতা খসে নতুন পাতা বেরোচ্ছে। নতুন ফুলে রঙিন হয়ে উঠছে গাছ। সেই পরিবর্তনকে বরণ করে নেওয়া হচ্ছে।’’ এই উৎসবে যে গান গাওয়া হয়, তা বসন্তকে উদ্দেশ্য করে।
এলাকার বাসিন্দা গুপি হাঁসদা বলেন, ‘‘সাঁওতালদের বিভিন্ন পরবে বিভিন্ন গান গাওয়া হয়। বিয়ের গান আলাদা, শোকের গান আলাদা। তেমনই বাহার গানও আলাদা। এই উৎসবের গান নির্দিষ্ট করে দিয়ে গিয়েছেন আমাদের পূর্বপূরুষেরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy