E-Paper

সাগর মেলায় মুড়িগঙ্গায় ড্রেজ়িংয়ে জোর

প্রশাসন সূত্রের খবর, এ বছর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গঙ্গাসাগরে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৫ ০৮:১২
অমাবস্যার কটালের পরে গঙ্গাসাগর সমুদ্রতটের অবস্থা।

অমাবস্যার কটালের পরে গঙ্গাসাগর সমুদ্রতটের অবস্থা। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।

২০২৬ সালের গঙ্গাসাগর মেলা ঘিরে শুরু হয়ে গেল জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার কাকদ্বীপ মহকুমাশাসকের দফতরে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। মেলার যাবতীয় আয়োজন, নিরাপত্তা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা— সব দিক খতিয়ে দেখা হয়। মূলত, মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজ়িং এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর নিরাপদ যাতায়াতের জন্য নদীর গভীরতা বাড়ানো ও জলপথ পরিষ্কার রাখা এ বার অন্যতম অগ্রাধিকার।

প্রশাসন সূত্রের খবর, এ বছর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গঙ্গাসাগরে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে বহু প্রতীক্ষিত গঙ্গাসাগর সেতুর শিলান্যাস করবেন। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মানুষের দাবি ছিল এই সেতুর। মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।

এ দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত, সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার, সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট, জেলা সভাধিপতি নীলিমা মিস্ত্রি, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা।

বঙ্কিম বলেন, “এ বার গঙ্গাসাগর মেলায় মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজ়িংকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, সমুদ্রতটে নেমে পুণ্যার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে স্নান করতে পারেন, সে জন্যও মেরামতির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

জেলাশাসক বলেন, “২০২৫ সালের মেলায় বহু সমস্যা সামনে এসেছিল। জেটিঘাট ও বার্জে সমস্যা, ব্যারিকেডের ঘাটতি, টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতা— সবই মানুষের অসুবিধা বাড়িয়েছিল। ঘন কুয়াশার কারণে মাঝনদীতে ভেসেল আটকে গিয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগও কম হয়নি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার আমরা সমস্ত ত্রুটি পূরণে বদ্ধপরিকর। লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে ধরে নিয়েই আমাদের প্রস্তুতি চলছে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কপিলমুনি মন্দিরের সামনে ভাঙন রুখতে বিশেষ পদক্ষেপ করা হবে। মেলাপ্রাঙ্গণ ও সাগরের বিভিন্ন এলাকাতেও সংস্কারের কাজ শুরু হবে। এ বার আরও বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। নদীর উপরে জিপিএস প্রযুক্তির সাহায্যে গ্রিন জ়োন তৈরি করা হবে, যার মধ্যে দিয়েই সব জলযান চলাচল করবে। এর ফলে মাঝনদীতে জট বা দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে বলে মনে করছে প্রশাসন।

মেলায় অস্থায়ী হাসপাতাল, মেগা কন্ট্রোল রুম, পর্যাপ্ত অ্যাম্বুল্যান্স ও ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে। গ্রিন করিডরের মধ্যে দিয়ে রোগীদের দ্রুত সরানোর বিশেষ রাস্তার ব্যবস্থা করা হবে। নজরদারির জন্য মেলাপ্রাঙ্গণে সর্বত্র সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। পাশাপাশি, মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবার উন্নতিতেও আলাদা জোর দেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসনের মতে, এ বারের বাজেটও দ্রুত বরাদ্দ করা হবে, যাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সব প্রস্তুতি শেষ করা যায়। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সব দফতরের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখার দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের দাবি, গত বারের সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০২৬ সালের গঙ্গাসাগর মেলা হবে আরও সুষ্ঠু, নিরাপদ ও প্রযুক্তিনির্ভর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ganga sagar kakdwip

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy