Advertisement
E-Paper

আইনকে বুড়ো আঙুল, এদ্দিনে পড়ল তালা

বছরের শুরুতেই অভিযান চালিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। তখনই নথিপত্র ঠিক রেখে, নিয়ম মেনে চালাতে বলা হয়েছিল কাকদ্বীপ মহকুমার সমস্ত নার্সিংহোম, ল্যাব এবং রোগ নির্ণয়কেন্দ্রগুলিকে। কিন্তু শনিবার দ্বিতীয় দফার অভিযানে বেরিয়ে কোনও পার্থক্য চোখে পড়েনি স্বাস্থ্যকর্তা এবং প্রশাসনের কর্তাদের।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০২:৩৭
বন্ধ: কাকদ্বীপের মেটারনিটি নার্সিংহোমে। নিজস্ব চিত্র

বন্ধ: কাকদ্বীপের মেটারনিটি নার্সিংহোমে। নিজস্ব চিত্র

বছরের শুরুতেই অভিযান চালিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। তখনই নথিপত্র ঠিক রেখে, নিয়ম মেনে চালাতে বলা হয়েছিল কাকদ্বীপ মহকুমার সমস্ত নার্সিংহোম, ল্যাব এবং রোগ নির্ণয়কেন্দ্রগুলিকে। কিন্তু শনিবার দ্বিতীয় দফার অভিযানে বেরিয়ে কোনও পার্থক্য চোখে পড়েনি স্বাস্থ্যকর্তা এবং প্রশাসনের কর্তাদের। বেনিয়মের অভিযোগে এ দিন বেশ কয়েকটি নার্সিংহোম ল্যাব এবং রোগ নির্ণয়কেন্দ্র বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কাকদ্বীপের গোবিন্দরামপুরে নিউলাইফ নার্সিংহোমের প্রচুর বেনিয়ম নজরে এসে স্বাস্থ্যকর্তাদের। এ দিন সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, পুরনো লাইসেন্স নিয়ে চলছে ওই নার্সিংহোম। দশ শয্যার অনুমোদন থাকলেও তা থেকে অনেক বেশি রোগী বেআইনি ভাবে ভর্তি করানো হয়েছে। কোনও রকমে পরিষেবা দিয়েই প্রচুর টাকার বিল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। কিন্তু সেই বিলের কাগজপত্র ঠিক নেই। একজন আবাসিক ডাক্তারের নাম থাকলেও তা দিয়ে চালাচ্ছেন অন্য একজন। এ সব নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা ওই নার্সিংহোমের মালিক রামপদ দিন্দাকে প্রশ্ন করলে তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। সাত দিনের মধ্যে নার্সিংহোম বন্ধ করার নোটিস দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।

কিছু দিন আগে নতুন নির্দেশিকা সম্পর্কে নার্সিংহোম মালিকদের জানানোর পরেই কাকদ্বীপের তিনটি নার্সিংহোম রোগী ভর্তি বন্ধ রেখেছে। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ রাখা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র নেওয়া ছাড়াও স্বাস্থ্য দফতরের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি অনেকের কাছেই। তাই রোগী ভর্তি বন্ধ রাখলেও নার্সিংহোম খোলা রাখা হয়েছিল। কাকদ্বীপের এ রকমই তিনটি নার্সিংহোম, সেবা ভবনের ওটি, প্রসূতি বিভাগ সিল করা হয়েছে। ত্রিবেণীকে নথি ঠিক করে না নেওয়া পর্যন্ত নার্সিংহোম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

যদিও নার্সিংহোমগুলির মালিকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরে, দমকলের কাছে আবেদন করেছেন। তবে সেই ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত রোগীভর্তি এবং চিকিৎসা বন্ধ রাখবেন।

নার্সিংহোমগুলির পাশাপাশি এ দিন কাকদ্বীপ এবং নামখানার একাধিক রোগনির্ণয় কেন্দ্রে হানা দেন দফতরের কর্তা এবং প্রশাসনের প্রধানেরা। নামখানার নারায়ণপুরে বিনা লাইসেন্সেই রক্ত পরীক্ষা, ইউএসজি চলছিল আশীর্বাদ রোগনির্ণয় কেন্দ্রে। এ দিন স্বাস্থ্যকর্তারা গিয়ে দেখেন, তার মালিক বিশ্বজিৎ দাস নিজেই এ সব পরীক্ষা করছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নেই তাঁর। সেটিকেও বন্ধের নোটিল দেওয়া হয়।

এ ভাবে দিনের পর দিন বেনিয়মে নজরদারি না থাকায় নামখানার বিএমওএইচের বিরুদ্ধেও গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। কারণ ব্লকের স্বাস্থ্যকর্তাদের উদাসীনতায় একের পর এক জায়গায় হাতুড়ে ডাক্তারদের পসার জমে উঠেছে এবং তাতে রোগীরাও বিপদে পড়ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। নামখানায় এ রকম বেশ কয়েকটি হাতুড়ে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এ দিন অভিযান চালায় স্বাস্থ্য দফতর।

কাকদ্বীপের সুরক্ষা এক্সরে ক্লিনিক, মডার্ন এক্সরে, নিউলাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নোটিস দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পপুলার এক্সরে এবং বিবেকানন্দ সায়েন্টিফিক সেন্টারের বিল বই, রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করে তাদের অবিলম্বে নথি ঠিক করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, বেশিরভাগ প্যাথ ল্যাব এবং রোগ নির্ণয়কেন্দ্রগুলি দালালদের খপ্পরে পড়ে নথি কিনতে গিয়েই বিপদ বাধাচ্ছে।

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই বেনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Mismanagement Nursing Home Kakdwip
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy