Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রচারে আলো, আঁধারে পথ

বি টি রোডের আগরপাড়া তেঁতুলতলা থেকে খড়দহ পর্যন্ত অংশে এই চিত্র নতুন নয়। কিছু বছর আগেও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ৯ কিলোমিটার পথে আলো জ্বলত না বিদ্যুতের বিল কে মেটাবে সেই চাপান-উতোরে।

উলটপুরাণ: দৃশ্যমান শুধু বিজ্ঞাপন। বি টি রোডে। নিজস্ব চিত্র

উলটপুরাণ: দৃশ্যমান শুধু বিজ্ঞাপন। বি টি রোডে। নিজস্ব চিত্র

বিতান ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০২:২২
Share: Save:

আলো আছে। তবু আলো নেই।

দু’লেনের রাস্তার ডিভাইডারে ফুলের গাছ। নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর বাতিস্তম্ভ। ঝাঁ-চকচকে ওই বাতিস্তম্ভে এলইডি বা মার্কারি আলো লাগানো। নীচে স্তম্ভের গায়ে নানা বিজ্ঞাপনী গ্লোসাইনবোর্ড। রাতে সাইনবোর্ডের উজ্জ্বল আলোয় রীতিমতো চোখে ধাঁধা লেগে যায় গাড়িচালকদের। অথচ যেখানে আলো জ্বলার কথা, সেই বাতিস্তম্ভই অন্ধকারে।

বি টি রোডের আগরপাড়া তেঁতুলতলা থেকে খড়দহ পর্যন্ত অংশে এই চিত্র নতুন নয়। কিছু বছর আগেও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ৯ কিলোমিটার পথে আলো জ্বলত না বিদ্যুতের বিল কে মেটাবে সেই চাপান-উতোরে। এ ক্ষেত্রেও অভিযোগ, বিজ্ঞাপনের জন্য টাকা আয় করে পুরসভাগুলি। কিন্তু আলো জ্বালানোর ক্ষেত্রে তাদের দাবি, রক্ষণাবেক্ষণ ও বিদ্যুতের বিল মেটানোর টাকা তাদের নেই। নিয়ম অনুযায়ী, বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলা- নেভার জন্য স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকার কথা।

উত্তর শহরতলির ব্যস্ততম এই রাজ্য সড়কের সংশ্লিষ্ট কিছু পুরসভা বাতিস্তম্ভে মার্কারি ও ভেপারের বদলে এলইডি আলো লাগানো শুরু করে ২০১০ সাল থেকে। উদ্দেশ্য একটাই, খরচ কমানো। টিটাগড় পুরসভা বেশ কিছু বাতিস্তম্ভকে ছোট করে সিএফএল ও এলইডি লাগিয়েছে বেশি আলো পাওয়ার জন্য। সেখানকার চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী বলছেন, ‘‘এই স্তম্ভগুলো দেখাভাল করা প্রায় হাতি পোষার সামিল। আমাদের হাতে এত টাকা নেই।’’

সমস্যা অন্য পুর এলাকাগুলিতে। টিটাগড়ের পাশেই খড়দহ পুরসভা। রাজা রোড থেকে বি টি রোড ধরে খানিক এগোলেই টেক্সম্যাকো আর ইলেক্ট্রোস্টিল কারখানা। রাস্তার ধারে আবর্জনা, ইমারতি দ্রব্য ডাঁই করা। দিন-রাত দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক, ট্রেলার। কিন্তু বাতিস্তম্ভে আলোর বালাই নেই। অথচ বিজ্ঞাপনের আলো জ্বলছে। খড়দহের পুর চেয়ারম্যান তাপস পাল বলেন, ‘‘ডিভাইডার ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটলেই এমনটা হয়। কারণ, তার নীচ দিয়েই আলোর লাইন গিয়েছে। কেব্‌ল ছিঁড়ে বিপত্তি। এখন সারাতে বহু টাকা খরচ।’’ তা হলে বিজ্ঞাপনের আলো জ্বলছে কী করে? তাপসবাবুর সাফাই, ‘‘ওটা আলাদা লাইন।’’

গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় আলোর অভাবে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বিজ্ঞাপনে উজ্জ্বল আলো, অন্য দিকে গাড়ির হেডলাইট— দুইয়ে মিলে চোখে ধাঁধা যায় চালকদের। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘আলো জ্বালানোর দায়িত্ব পুরসভার। যেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে, সেখানে তো বিষয়টিতে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE