কৌশিক কয়াল
এক কামরার ভাঙাচোরা বাঁশের বেড়ার ঘরে বাবা, অসুস্থ মা ও দাদার সঙ্গে থাকে কৌশিক। দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাবা কৃষ্ণপদবাবু দিনমজুর। তাই মা কৌশল্যাদেবীর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করার পাশাপাশি ভাই কৌশিককে লেখাপড়া শেখাতে গিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি সন্দীপ। তবে পরিবারের মুখ রক্ষা করছে সন্দেশখালির ধুচনেখালি গ্রামের কৌশিক কয়াল। সে এ বার মাধ্যমিকে সব বিষয়ে লেটার পেয়ে মান রেখেছে আতাপুর কেনারাম হাইস্কুলের। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৭।
কিন্তু আর পাঁচজন ছেলেমেয়ের মতো সকালে উঠে পড়তে বসা কৌশিকের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না। মা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই প্রায় দিনই কৌশিককে রান্না করতে হয়। সকালে বাড়িতে পড়ার সুযোগ খুব একটা পায় না সে। রাত জেগেই তাকে পড়ে হতো। সাহায্য পেয়েছে স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকেও। বিনা বেতনে অঙ্ক ও বিজ্ঞান পড়িয়েছেন শিক্ষক সেলিম গাজি এবং প্রশান্ত দাস।
প্রতিবেশী তথা ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সম্রাট গুপ্ত বলেন, ‘‘এক বেলা না খেয়ে তাকে ক্লাস করতে দেখেছি। ইচ্ছা শক্তির জোরে বরাবরই ভাল ফল করে এসেছে সে। সুন্দরবন এলাকার স্কুলগুলির মধ্যে কৌশিকের প্রাপ্ত নম্বর সব থেকে বেশি হওয়ায় আমরা এবং স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, গ্রামবাসী গর্বিত।’’
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপসকান্তি মজুমদার বলেন, ‘‘অভাবের কারণে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে সুযোগ পেয়েও কৌশিক সেখানে ভর্তি হতে পারেনি। এখন এক শিক্ষকের সহযোগিতায় বেলঘরিয়ার একটি স্কুলে ভর্তির চেষ্টা করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy