Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তা কেটে বিক্ষোভ, দেখা নেই প্রশাসন

টানা চার দিন রাস্তা কেটে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় মানুষ। ফলে হাবরা-বসিরহাট গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বিপর্যস্ত হচ্ছে। কিন্তু হেলদোল নেই প্রশাসনের। কোনও আধিকারিককে এ ক’দিনে এলাকায় দেখা যায়নি। দীর্ঘ দিন ধরেই স্থানীয় বাসিন্দারা ওই রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তিন দিন ধরে বন্ধ গাড়ি চলাচল। ছবি: শান্তনু হালদার।

গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তিন দিন ধরে বন্ধ গাড়ি চলাচল। ছবি: শান্তনু হালদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবরা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ০২:১১
Share: Save:

টানা চার দিন রাস্তা কেটে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় মানুষ। ফলে হাবরা-বসিরহাট গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বিপর্যস্ত হচ্ছে। কিন্তু হেলদোল নেই প্রশাসনের। কোনও আধিকারিককে এ ক’দিনে এলাকায় দেখা যায়নি।

দীর্ঘ দিন ধরেই স্থানীয় বাসিন্দারা ওই রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ, স্মারকলিপি দেওয়া— কিছুই বাদ রাখেননি তাঁরা। পরিণামে মিলেছে প্রশাসনিক প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস। যখনই গ্রামবাসীরা সড়ক অবরোধ করেছেন, প্রশাসন ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানিয়েছেন, শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। বার বার এমন আশ্বাস পাওয়ার পরেও পরিস্থিতির বদল না হওয়ায় এ বার এলাকার মানুষ জোটবদ্ধ ভাবে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করেছেন। সমস্যা না মেটা তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।

শনিবার হাবরা-বসিরহাট সড়কের চারটি জায়গায় কেটে বিক্ষোভ শুরু করেছেন তাঁরা। ফলে বাস-ট্রাক বা অন্য কোনও বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শুধু মাত্র সাইকেল ও মোটর বাইক কোনও মতে যাতায়াত করতে পারছে। রাস্তা কাটার ফলে মছলন্দপুর ও গোবরডাঙার মানুষকে ঘুরপথে হাবরায় আসতে হচ্ছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মূলত চোংদা মোড় থেকে নকফুল মোড় পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক বেহাল। জায়গায় জায়গায় ইট-পাথর উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। অতীতে এখানে গাছ লাগানো ধান পুঁতে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তাতেও টনক নড়েনি পূর্ত দফতরের।

এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, পিচের রাস্তা এখন ধুলোয় ঢাকা মাটির রাস্তার চেহারা নিয়েছে। রাস্তার পাশে দোকানি ও বাসিন্দাদের ধূলোর দাপটে প্রাণ ওষ্ঠাগত। প্রতি নিয়ত গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্ষার সময় বড় বড় খানাখন্দ তৈরি হয় রাস্তায়। যান চালকদের অবস্থাও শোচনীয়। বেহাল সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে যন্ত্রাংশের ক্ষতি হচ্ছে। ওই রাস্তায় চলাচল দিনে-রাতে যেন বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষের কাছে।

অথচ, প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষ ওই পথে যাতায়াত করেন। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। সে ক্ষেত্রে কার্যত দুর্ভোগের শেষ থাকে না। প্রসূতিদের সড়ক দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই প্রসবের ঘটনা ঘটেছে এর আগে। খেতের সব্জি নিয়ে চাষিরা যেতে পারেন না। পড়ুয়াদের স্কুল-কলেজে যেতে দেরি হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘তিন দিন হয়ে গেল আমরা আন্দোলন করছি, অথচ প্রশাসনের কেউ এলাকায় এলেন না। আসলে ওঁরা এত বার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে এখানে আসার আর মুখ নেই।’’

কী বলছে পূর্ত দফতর? জেলা পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার স্নেহাশিস সাহা আশার কথা শুনিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। নির্দিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা কাজের বরাত হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। রাস্তাটি সংস্কারের পাশাপাশি আরও চওড়া করা হবে। আশেপাশের গাছও কাটা হবে।’’

তবে ওই প্রতিশ্রুতিতে এলাকার মানুষ আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাঁরা জানালেন, অতীতে বহু বার এমন প্রতিশ্রুতি মিলেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE