Advertisement
০৫ মে ২০২৪

মারধর করে ছিনতাই, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ

নাসিরের দাবি, ‘‘ফাঁড়িতে দু’ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পরে থানায় নিয়ে যাওয়ার নাম করে একটি মোটরবাইকে তোলা হয়। অন্য একটি বাইকে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার ওঠেন। থানায় নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে সাঁইপালা এলাকায় একটি নির্জন রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ওরা টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। কাউকে কিছু বললে ফল ভাল হবে না বলে হুমকি দিয়ে উধাও হয়ে যায়।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০২:২৭
Share: Save:

অটো থেকে নামিয়ে এক ব্যক্তিকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তিন সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের এক অফিসারও ছিলেন বলেন অভিযোগ।

মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের ইছামতী সেতুর কাছে বোটঘাটে। বুধবার পিঁফার দেভোগ গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ নাসির নামে ওই ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলের চোখের ওষুধ কিনতে বদরতলায় গিয়েছিলেন পেশায় রাজমিস্ত্রি নাসির। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওষুধ কেনার পরে অটোয় করে ফিরছিলাম। গাড়িতে আর তিন মহিলা যাত্রী ছিলেন। বোটঘাটে কর্তব্যরত এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে ধাক্কা মারে অটোটি। এই নিয়ে অটো চালক ও সিভিক ভলান্টিয়ারের মধ্যে বচসা বাধে। তা দেখে ওই পুলিশ অফিসার-সহ আরও দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার সেখানে আসেন। নাসিরের দাবি, ‘‘ওযুধ নিয়ে যেতে দেরি হচ্ছে দেখে অটো চালকের বলি, ঝগড়া না করে সমস্যাটি মিটিয়ে নিলে ভাল হয়।’’

এই কথা শুনে রেগে গিয়ে ওই পুলিশ অফিসার নাসিরকে বোটঘাট ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ। নাসিরের দাবি, ‘‘ফাঁড়িতে দু’ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পরে থানায় নিয়ে যাওয়ার নাম করে একটি মোটরবাইকে তোলা হয়। অন্য একটি বাইকে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার ওঠেন। থানায় নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে সাঁইপালা এলাকায় একটি নির্জন রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ওরা টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। কাউকে কিছু বললে ফল ভাল হবে না বলে হুমকি দিয়ে উধাও হয়ে যায়।’’

মঙ্গলবার তিনি অভিযোগ জানাননি কেন? নাসির বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পরে থানায় গিয়ে দেখি, গেটের সামনে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারই দাঁড়িয়ে। ফলে বাড়ির পথ ধরি।’’

এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস। বুধবার নাসিরকে সঙ্গে নিয়ে বসিরহাট থানায় আসেন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুল কাদের সর্দার। তিনি ওই অফিসার-সহ সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুলিশকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কাদের বলেন, ‘‘কিছু ছেলের জন্য সব সিভিক ভলান্টিয়াদের নাম খারাপ হচ্ছে।’’

অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের দাবি, গাড়ি চালকের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। গাড়ির এক যাত্রী খারাপ মন্তব্য করায় তাঁকে গাড়ি থেকে নামানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মারধর, ছিনতাইয়ের অভিযোগ মিথ্যা।

তবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। এর আগের বসিরহাটের পিঁফার তেঁতুলতলা এলাকায় দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ার তার কাকার সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। জনতার চাপে শেষে পুলিশ ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ও তার সঙ্গীদের গ্রেফতার করে। বাদুড়িয়ায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুলে কিছু দিন আগে ক্ষুব্ধ জনতা থানার সামনে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়।

বার বার সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে, জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE