ঝড়ে চাল উড়ে গিয়েছে জীবনতলার তীর্থমণি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
আমপানে উড়ে গিয়েছিল স্কুলের মিড ডে মিল খাওয়ার ঘর ও রান্নাঘরের ছাউনি। দু’বছর পার হয়ে এখনও স্কুলে সেই ছাউনি তৈরি হল না। বাধ্য হয়ে শ্রেণিকক্ষে বা স্কুলের বারান্দায় বসে মিড ডে মিল খেতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। দোতলা স্কুল ভবনে রয়েছে চারটি শ্রেণিকক্ষ। শিক্ষকদের অফিসঘর না থাকায় সিঁড়ির নীচে বসে চলে কাজকর্ম। রং চটে যাওয়া, দেওয়াল খসে পড়া ওই স্কুলটির নাম মঠেরদিঘি তীর্থমণি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ক্যানিং ২ ব্লকের জীবনতলায় অবস্থিত ওই স্কুলটি ১৯৭৩ সালে অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া একটি ঘরে পথ চলা শুরু করে। ২০০৫ সালে স্কুলের দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। অথচ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখার কোনও ব্যবস্থা নেই। চুরির ঘটনাও ঘটছে।
প্রত্যন্ত এলাকার এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৭৬ জন সেখানে শিক্ষক আছেন মাত্র ৫ জন। শিক্ষাকর্মী নেই। স্কুলে খেলার মাঠ আছে, তবে পাঁচিল না থাকায় সেই মাঠে প্রায়ই ঢুকে পড়ে গরু, ছাগল। গ্রামের মানুষও স্কুল ভবনের গায়ে জামা-কাপড় বা ধান রোদে শুকোতে দেন।
আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত ওই স্কুলে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি শৌচালয় তৈরি করে দেওয়া হয়। শিক্ষকেরা সেটি ব্যবহার করেন। কিন্তু পাম্প না থাকায় জলের সমস্যা রয়ে গিয়েছে। পানীয় জলেরও সমস্যা আছে।
পরিকাঠামোগত ত্রুটি-বিচ্যুতির ফলে স্কুলছুটের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় অভিভাবক রাখি নস্কর, জুব্বার মোল্লারা জানান, আগে অনেক ছেলেমেয়ে এই পুরনো স্কুলে পড়াশোনা করত। যত দিন যাচ্ছে স্কুলের পরিকাঠামোর কোনও উন্নতি না হওয়ায় অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির আলি মোল্লা বলেন, “আমপানের সময়ে স্কুলের রান্নাঘর ও খাবার ঘরের ছাউনি উড়ে গিয়েছিল। তা তৈরি না হওয়ায় বাচ্চাদের সমস্যা হচ্ছে। বর্ষার সময়ে রান্না করতে মুশকিলে পড়তে হচ্ছে। তবে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে ছাউনি মেরামত করার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্কুলের বেশ কিছু পরিকাঠামোর সংস্কার দরকার। ফান্ডের অভাবে কাজগুলি করা সম্ভব হচ্ছে না।”
এ বিষয়ে ক্যানিং ২ বিডিও প্রণব মণ্ডল বলেন, “আমরা সম্প্রতি কিছু টাকা পেয়েছি। ওই টাকা স্কুলগুলিকে দেওয়া হয়েছে ছাউনি মেরামত করার জন্য।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy