প্রতীকী ছবি।
মেলা থেকে ছেলের ফিরতে দেরি হওয়ায় ফোন করেছিলেন বাবা। ১৮ বছরের তরুণ জানিয়েছিলেন, কিছু ক্ষণের মধ্যেই তিনি বাড়ি ফিরে আসবেন। এর কিছু পরে ওই তরুণের বন্ধুরা এসে
জানান, পিছন থেকে কেউ বা কারা গুলি করেছে তাঁকে। খবর পেয়ে পরিজনেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তরুণকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে টিটাগড় স্টেশন লাগোয়া ১০ নম্বর রেল গেটের কাছে ঘটেছে এই খুনের ঘটনা। পুলিশ জানায়, ওই তরুণের নাম সেলিম সাহাজি। এই ঘটনায় তাঁর এক বন্ধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে রহড়া থানার পুলিশ। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘খুনের তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
টিটাগড়ের ১০ নম্বর রেল গেট লাগোয়া এলাকাতেই বাড়ি সেলিমের। অভাবের সংসারের হাল ধরতে স্থানীয় একটি পরোটা তৈরির দোকানে কাজ করতেন তিনি। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ওই দিন সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির কিছুটা দূরেই মোড়লপাড়ায় ইদের মেলায় গিয়েছিলেন সেলিম। রাত হতে চললেও ছেলে বাড়ি না ফেরায় তাঁকে ফোন করেন বাবা সমর সাহাজি। তিনি বলেন, ‘‘ছেলে বলেছিল, কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসছে। কিন্তু তার পরে বেশ কিছু সময় কেটে গেলেও বাড়ি না ফেরায় চিন্তা হচ্ছিল। এর পরে ওর সঙ্গে যে বন্ধুরা মেলায় গিয়েছিল, তারাই এসে জানায় ঘটনার কথা।’’ খবর পেয়ে ১০ নম্বর রেল গেটের কাছে ছুটে যান সেলিমের পরিজনেরা। গিয়ে দেখেন, রাস্তার উপরেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই তরুণ। তাঁর পিঠে ফুঁড়ে গিয়েছে গুলি। হলুদ রঙের জামার পিছন দিক পুরো রক্তে ভিজে গিয়েছে।
পরিজনেরাই সেলিমকে উদ্ধার করে ব্যারাকপুরের বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় পুলিশও।
পেশায় দিনমজুর সমরের অভিযোগ, মাসকয়েক আগে টিটাগড় নয়াবস্তির তিন দুষ্কৃতী তাঁর কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করে। তিনি দিতে আপত্তি করায় মারধর করে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। সমর বলেন, ‘‘ওই দুষ্কৃতীরাই আমার ছেলেকে খুন করেছে।’’
পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকে নয়াবস্তির ওই তিন দুষ্কৃতী পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। অন্য দিকে, ঘটনার পরে সেলিমের এক বন্ধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের কাছে সেলিমের বন্ধুরা দাবি করেছেন, মেলা থেকে হেঁটে ফিরছিলেন তাঁরা। সেই সময়ে আচমকাই পিছন দিক থেকে সেলিমের পিঠে গুলি চালানো হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়া ওই তরুণকে নিয়ে তাঁরা ব্যস্ত হয়ে পড়ায় কে বা কারা সেই গুলি চালিয়েছে, তা ঠিক ভাবে বুঝতে পারেননি বলেও দাবি সেলিমের বন্ধুদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy