Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতল অশোকনগরের মিলনসঙ্ঘ

মহকুমা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফুটবল প্রতিযোগিতায় জয়ী হল অশোকনগরের মিলন সঙ্ঘ। রবিবার বনগাঁ স্টেডিয়ামে আয়োজিত ফাইনালে তারা ১-০ গোলে পরাজিত করে বনগাঁর ১২-র পল্লি স্পোর্টিং ক্লাবকে।

উত্তেজনার একটি মুহূর্ত। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

উত্তেজনার একটি মুহূর্ত। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৫ ০১:৪৬
Share: Save:

মহকুমা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফুটবল প্রতিযোগিতায় জয়ী হল অশোকনগরের মিলন সঙ্ঘ। রবিবার বনগাঁ স্টেডিয়ামে আয়োজিত ফাইনালে তারা ১-০ গোলে পরাজিত করে বনগাঁর ১২-র পল্লি স্পোর্টিং ক্লাবকে। দ্বিতীয়ার্ধে মিলন সঙ্ঘের পক্ষ থেকে খেলা শেষ হওয়ার সাত মিনিটের মাথায় পেনাল্টিতে গোল করেন শঙ্কু গুহ। তবে এ দিন দু’দলের খেলা দেখে মাঠে উপস্থিত হাজার দশেক দর্শকের মন ভরে গিয়েছে।

১২-র পল্লির দলে ছিল ছ’জন বিদেশি খেলোয়াড়। অন্য দিকে, মিলন সঙ্ঘের সব খেলোয়াড়ই ছিলেন কলকাতা মাঠে খেলা বিভিন্ন নামকরা ক্লাবের খেলোয়াড়। ফলে গত কয়েক দিন ধরেই এই খেলা দেখার আগ্রহ বনগাঁর মানুষের মধ্যে ছিল। উদ্যোক্তা বনগাঁ মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে এক সপ্তাহ ধরে বনগাঁ শহরে ফাইনাল খেলাকে নিয়ে প্রচারও হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তোরণ তৈরি করা হয়েছিল। অটোতে মাইক বেঁধে প্রচার হয়। শহরে মাইকও বাঁধা হয়েছিল। দীর্ঘদিন বাদে শহরে বড় কোনও ফুটবল প্রতিযোগিতার আসর বসছে। এ দিন খেলা শুরুর বহু আগেই টিকিট কাটার দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে। সব টিকিট কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। স্টেডিয়ামের চারপাশে থাকা স্কুল ভবনের ছাদ বা বাড়ির ছাদেও বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন। দর্শকদের মধ্যে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

খেলা শুরুর আগে এবং বিরতিতে মাঠ প্রদক্ষিণ করে রিমোট-চালিত তিনটি ছোট হেলিকপ্টার এবং ড্রোন। হেলিকপ্টার থেকে মাঠে ফুল ছিটানো হয়। উপস্থিত ছিলেন বনগাঁর সাংসদ মমতা ঠাকুর, বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক তথা বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য, প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ।

খেলার আগের কয়েকটি ম্যাচে রেফারির খেলা পরিচালনা নিয়ে ক্লাবগুলি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। সে কারণে ফাইনালে উদ্যোক্তারা ফিফা লাইসেন্সধারী রেফারি নিয়ে এসেছিলেন। খেলা দেখতে দেখতে সাংসদ মমতাদেবী বললেন, ‘‘অতীতে আমি নিজেও ফুটবল খেলেছি। আজ দু’দলের খেলা দেখে খুব ভাল লাগছে।’’ এ দিন মিলন সঙ্ঘ বাইরের দল হলেও বহু দর্শক তাদের সমর্থন করেছেন। ম্যাচের শুরু থেকেই মিলন সঙ্ঘের খেলোয়াড়েরা ১২-র পল্লিকে চেপে ধরে। একের পর এক আছড়ে পড়তে থাকে ১২-র পল্লির রক্ষণভাগে। প্রথমার্ধের ১২ মিনিটের মাথায় মিলন সঙ্ঘের বিবেকানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বিপক্ষের বক্সের মধ্যে থেকে ব্যাক ভলিতে একটি দুরন্ত শট নেন। গোলকিপার অবশ্য ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ঠেকিয়ে দেন। ওই ব্যাকভলি দেখে দর্শকেরা উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেন। প্রথমার্ধ্বের শেষ মুহূর্তে ১২-র পল্লির এক খেলোয়াড়ের দুরন্ত শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দ্বিতীয় অর্ধের শুরুতে ১২-র পল্লি খেলা সবে ধরতে শুরু করেছে, তখনই তাদের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় বক্সের মধ্যে মিলন সঙ্ঘের এক খেলোয়াড়কে ফেলে দেওয়ায় রেফারি পেলান্টি দেন। তা থেকে গোল করতে ভুল করেননি শঙ্কু। তারপরে খেলা আক্রমণ প্রতি আক্রমণের মধ্যে গড়ালেও আর গোল বাড়েনি।

ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক তথা পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘বনগাঁর মানুষকে উন্নতমানের খেলা দেখার সুযোগ করে দিতে এবং স্থানীয় খেলোয়াড়দের খেলার মান বাড়াতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। আগামী দিনেও এই ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।’’ বিধায়ক এবং প্রাক্তন বিধায়ক বলেন, ‘‘বহু দিন পরে বনগাঁয় এমন উন্নত মানের খেলা দেথে ভাল লাগল।’’

ফাইনালে হারের কারণ নিয়ে ১২-র পল্লির কর্মকর্তা নারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘খেলোয়াড়দের মধ্যে সম্মন্বয়ের অভাব ছিল। বিদেশি খেলোয়াড়েরা নিজেদের মধ্যে পাস দিয়ে খেলছিল।’’ মিলন সঙ্ঘের কোচ প্রাক্তন ফুটবলার শঙ্কর সাধু বলেন,‘‘দলের মধ্যে জেতার জন্য খেলোয়ারদের মধ্যে মানসিক প্রস্তুতি এবং একাগ্রতা ছিল। সর্বোপরি, টিমের প্রতিটি খেলোয়াড়ের মধ্যে ছিল সুন্দর বোঝাপড়া।’’ ফাইনালের গোলদাতা শঙ্কুর কথায়, ‘‘জয়ী হতে পেরে ভাল লাগছে। দর্শকদের উৎসাহ আমাদের মুগ্ধ করেছে।’’ ৮ অগস্ট আটটি দলকে নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। এ দিন ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন মিলন সঙ্ঘের বিবেকানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেয়ার প্লে ট্রফি পেয়েছে বনগাঁর বৈজয়ন্ত ক্লাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ashok Nagar Bangaon Champions trophy football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE