Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে বিক্ষোভ ব্যাঙ্কে

খুচরোর ঝাঁপি নিয়ে নাজেহাল বাদুড়িয়া

স্থানীয় বিধায়ক কাজি আব্দুর রহিম দিলুর নেতৃত্বে ওই বিক্ষোভে সামিল হন শতাধিক মানুষ। বিজয়া চলছে। তাই রসগোল্লা দিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হল।

গাঁধীগিরি: মিষ্টির হাঁড়ি রেখে বিক্ষোভ। ছবি: নির্মল বসু

গাঁধীগিরি: মিষ্টির হাঁড়ি রেখে বিক্ষোভ। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৩
Share: Save:

হাতে মিষ্টির হাঁড়ি। মাথায় খুচরোর বস্তা— এ ভাবেই এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে ঘেরাও করে বসে আছেন কংগ্রেস বিধায়ক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ, খুচরো নিচ্ছে না ব্যাঙ্ক। তার জন্য সমস্যায় পড়েছে মানুষ। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বাদুড়িয়ায়।

স্থানীয় বিধায়ক কাজি আব্দুর রহিম দিলুর নেতৃত্বে ওই বিক্ষোভে সামিল হন শতাধিক মানুষ। বিজয়া চলছে। তাই রসগোল্লা দিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হল। এরপরেও যদি পরিস্থিতি না বদলায়, তা হলে বড় আন্দোলনে নামার কথা বলা হয়।

কয়েক মাস খুচরো সমস্যায় জেরবার বসিরহাটের মানুষ। খুচরো নিয়ে বচসা লেগেই রয়েছে। তা মেটাতে ছুটতে হচ্ছে পুলিশকে। প্রশাসনের উদ্যোগে খুচরো নেওয়ার জন্য মাইকে প্রচার হচ্ছে। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ ব্যাঙ্কে খুচরো নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। অথচ অনেক ব্যাঙ্ক থেকেই খুচরো দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই ব্যাঙ্কগুলির জন্য এলাকায় খুচরো নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। মুদি, মাছ, অটো, বাস, বাদাম, ফুচকা, চপওয়ালা কেউ খুচরো নিতে চাইছেন না। ট্রেন-বাসের টিকিট কাটতে গিয়েও খুচরো না নেওয়ায় বিপাকে পড়ছেন মানুষ। ভিখারি পর্যন্ত খুচরো নিচ্ছেন না। বিশেষ করে ছোট এক টাকার কয়েন নিয়ে সমস্যা আরও বেড়েছে। গ্রামের মানুষের কাছে হাজার হাজার টাকা খুচরো জমে যাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে।

বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, খদ্দের খুচরো দিলে তা নিতে মুখ ভার হচ্ছে বিক্রেতাদের। খুচরোর জন্য ঘুম উড়েছে ব্যবসায়ীদের। বসিরহাটের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাঙ্কের শাখা, পেট্রলপাম্প, হাট ও বাজারে খুচরো না নেওয়া নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে গণ্ডগোল বাধছে। দিলু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের শাখা থেকে খুচরো নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে খুচরো নেওয়া হচ্ছে না। বাদুড়িয়ার কৃষি প্রধান এলাকার গরিব মানুষের কাছে খুচরোর পাহাড় জমছে। খুচরো নিয়ে একটা বড় চক্রান্ত শুরু হয়েছে।’’ অবিলম্বে খুচরো না নেওয়া হলে কংগ্রেসের পক্ষে বড় আন্দোলনে নামা হবে বলে তিনি জানান।

হাসনাবাদের মুরারিশা, বাদুড়িয়ার পেট্রলপাম্পের গায়ে লেখা, ব্যাঙ্কে কয়েন জমা না নেওয়ায় খুচরো নেওয়া হচ্ছে না। বাদুড়িয়ার এক ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামের কথায়, ‘‘আমরা কয়েন না নিলে পুলিশ আসবে। এ দিকে ব্যাঙ্ক খুচরো নিচ্ছে না, এখন পুলিশ কী করছে।’’

বসিরহাটের পুরনো বাজারের এক মুদি ব্যবসায়ী খগেন দাস বলেন, ‘‘আমার কাছে লক্ষ টাকার মতো কয়েন জমে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কিংবা মহাজন কেউই নিতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে পুঁজি বসে যাচ্ছে।’’ ব্যাঙ্কের কর্মী অনুপ মণ্ডল জানান, তাঁর ছেলের মুদি দোকানে ৩৫ হাজার টাকার কয়েন জমেছে। নেওয়ার কেউ নেই।

ব্যাঙ্ক ম্যানেজার দিলীপ দাস বলেন, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে প্যাকেট ভর্তি করে খুচরো আসে। গ্রাহকদের তা দেওয়া হয়। গ্রাহকেরা যদি খুচরো দেন, তা গুনে নিতে হলে কর্মীদের আর কোনও কাজ করা সম্ভব হয় না। তা সত্ত্বেও দু-এক হাজার টাকা খুচরো নেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coins Baduria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE