মহকুমার মানুষের রক্তের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত রক্ত রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করছে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাসে রাজ্যের চারটি হাসপাতালে দেড়শো ইউনিট রক্ত গিয়েছে এখান থেকে। কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল, ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতাল, ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল ও বীরভূমের রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা হাসপাতালে রক্ত গিয়েছে বনগাঁ থেকে।
বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৫৫০-৬০০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। জুন মাসে বিভিন্ন রক্তদান শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ হয়েছিল ৭০০ ইউনিট। গত বছর সেপ্টম্বর মাস থেকে হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা ব্লাড ব্যাঙ্কও চালু হয়েছে। মহকুমার প্রায় ১২ লক্ষ মানুষের রক্তের প্রয়োজন মেটাচ্ছে ব্লাড ব্যাঙ্ক। উদ্বৃত্ত রক্ত অন্যত্র দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত।
কী ভাবে এটা সম্ভব হল?
হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার বলেন, ‘‘নিয়মিত ভাবে প্রচার, রাজনৈতিক দল, জনপ্রতিনিধি, পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং পরিকল্পিত ভাবে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার ফলেই এখন আমরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে অন্য হাসপাতালের রক্ত-সঙ্কট মেটাতে রক্ত দিতে পারছি।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে রমজান মাসেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ মহকুমায় রক্তদান করেছেন। পুলিশ, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও নিয়মিত রক্তদান শিবির করা হয়। এমনকী, হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও প্রয়োজন পড়লে রক্তদান করছেন।
কয়েক বছর আগেও প্রয়োজনের সময়ে হাসপাতাল থেকে রক্ত না পেয়ে ক্ষোভ জানাতেন রোগীর আত্মীয়-স্বজন। রক্তের জন্য কার্ড সংগ্রহ করে রোগীর আত্মীয়দের বারাসত বা কলকাতায় ছুটতে হত। পরিবারের লোকজন নিজেরা যেতে না পারলে যাঁরা রক্ত এনে দিতেন তাঁদের মোটা টাকা দিতে হত। কারণ, সে সময়ে বনগা মহকুমা হাসপাতালে প্রয়োজন মতো রক্ত পাওয়া যেত না। এখন গভীর রাতেও রক্ত মিলছে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে।