Advertisement
E-Paper

কোথাও সফল কোথাও বিফল, বন‌্‌ধ সারাদিন

বামেদের ডাকা দু’দিনের ধর্মঘটের প্রথমদিন মঙ্গলবার, বেশ কিছু জায়গায় তেমন প্রভাব পড়েনি। কিছু জায়গায় গোলমালও হয়েছে। সব মিলিয়ে দুই জেলায় কেমন হল বন‌্ধ— খোঁজ নিল আনন্দবাজার।বামেদের ডাকা দু’দিনের ধর্মঘটের প্রথমদিন মঙ্গলবার, বেশ কিছু জায়গায় তেমন প্রভাব পড়েনি। কিছু জায়গায় গোলমালও হয়েছে। সব মিলিয়ে দুই জেলায় কেমন হল বন‌্ধ— খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪২
ঘটনাস্থল থেকে সিপিএম কর্মীকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। হাবড়া যশোর রোডে। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

ঘটনাস্থল থেকে সিপিএম কর্মীকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। হাবড়া যশোর রোডে। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

বনগাঁ: বনগাঁ মহকুমায় বন্‌ধের কোনও প্রভাব পড়েনি। তবে দেগঙ্গাতে বেশ কিছু দোকানপাট বন্ধ ছিল। বনগাঁয় সকাল থেকে যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বাস, অটো, টোটো ভ্যান অন্য দিনের মতো যাতায়াত করেছে। পথে বেরিয়ে মানুষকে কোনও রকম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়নি। দোকানপাট কার্যত সবই খোলা ছিল। খোলা ছিল সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ, বাজারও। সরকারি অফিসে হাজিরা ছিল অন্য দিনের মতো। পেট্রাপোল বন্দরে বাণিজ্যের কাজ হয়েছে। কলকাতা-পেট্রাপোলের মধ্যে বাস চলাচল করেছে। এ দিন সকাল থেকে মহকুমা জুড়ে বামেদের মিছিল বের হয়। গোপালনগরের আকাইপুরে রেল অবরোধ করা হয়। পথ অবরোধ হয় মামুদপুর ও টালিখোলা মোড়ে।

হাবড়া: হাবড়ার স্টেশন রোডের মুখে ও নগরউখরা মোড়ে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা হলে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। ১৭ জন বন‌্ধ সমর্থককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মছলন্দপুর দত্তপুকুরে রেল অবরোধ হয়। কয়েকটি জায়গায় রেল লাইনে কলাপাতা ফেলে রাখা হয়। বিড়া স্টেশনের কাছে লাইনের পাশে পাঁচটি দেশি বোমা পড়ে থাকতে দেখে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। জিআরপি গিয়ে বোমাগুলো নষ্ট করে দেয়।

দেগঙ্গা: দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা চৌমাথা মোড়ে অবরোধ করা হয়। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বেশ কিছু দোকানপাট বন্ধ ছিল। লোকজন তুলনায় কম বেরিয়েছিলেন।

বসিরহাট: বন্‌ধের সমর্থনে ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে বসিরহাট পুরসভার এক সিপিএমের কাউন্সিলর-সহ ১১ জনকে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে বসিরহাট থানার সামনে সিপিএম কর্মীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। এ দিন এলাকার দোকান-বাজার খোলা ছিল। বসিরহাটে সকালে বন‌্ধ সমর্থকেরা মিছিল বের করেন। টাউন হল থেকে মিছিলটি বসিরহাট বোটঘাট এলাকায় যায়। সেখানে তাঁরা পথ অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ হটিয়ে দেয়। পরে তাঁরা বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সামনে গিয়ে কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেন। বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকাতে তৃণমূলও বন্‌ধের বিরোধিতা করে মিছিল বের করে।

স্বরূপনগর ও হাসনাবাদ: স্বরূপনগর এবং পার হাসনাবাদে দু’চার জায়গায় বন্‌ধ সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের সামান্য বচসা বাধে। কিন্তু পরে তা পুলিশের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয়ে যায়।

হিঙ্গলগঞ্জ: হিঙ্গলগঞ্জের কৃষিমান্ডিতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শতাধিক কৃষক ধান বিক্রি করতে এসেছিলেন। তাঁদের কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি বলে তাঁরা জানান। উল্টে রাস্তাঘাট একটু ফাঁকা থাকায় ধানের বস্তা নিয়ে আসতে সুবিধাই হয়েছে বলে তাঁদের দাবি।

ব্যারাকপুর: ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে সকাল থেকেই রেল অবরোধ শুরু হয়। বিদ্যুতের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় অবরোধকারীরা। আধ ঘণ্টা পরে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ফের ইছাপুরে ট্রেন রুখে দেয় অবরোধকারীরা। শ্যামনগরে বন্‌ধ সমর্থকেরা মিছিল করলেও তৃণমূলের বাধায় কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়। নোয়াপাড়ায় তৃণমূল বিধায়ক সুনীল সিংহকে লাঠি নিয়ে রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায়। ব্যারাকপুরে মোট চারটি চটকল বন্ধ ছিল। অন্যগুলিতে হাজিরা কম ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, জেলায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ২৯ জনকে।

ডায়মন্ড হারবার: ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ দুই মহকুমায় বন্‌ধের প্রভাব পড়েনি। সকাল থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে অন্য দিনের তুলনায় রাস্তায় ভিড় কম ছিল। সরকারি বাস চলেছে। বেসরকারি বাসের সংখ্যা ছিল কিছুটা কম। তবে সকালের দিকে হোটর স্টেশনে বন‌্ধ সমর্থকেরা অবরোধ করলে পুলিশ গিয়ে হটিয়ে দেয়। তার জেরে কিছুক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

সাগর: পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ছিল। নামখানা থেকে সাগরে যাওয়ার বাসে ছিল উপচে পড়া ভিড়। কচুবেড়িয়া পর্যন্ত যাওয়ার পথে বহু মানুষ লাইন ছিল চোখে পড়ার মত। সকালের দিকে শিয়ালদহ-দক্ষিণ শাখার নেত্রা স্টেশন ও সোনারপুর স্টেশনে অবরোধ হয়। কিছুক্ষণ পর অবরোধ উঠে যায়। নামখানা, ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ ও ক্যানিং শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। সাগর মেলায় ভিড় ছিল প্রচুর। ভিন রাজ্যের দর্শনার্থীদেরও কোনও সমস্যা হয়নি বলে প্রশাসনের দাবি। দর্শনার্থীরাও কপিলমুনি আশ্রম দর্শন করতে পেরে খুশি।

দক্ষিণ বারাসত: বামেদের ডাকা ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় দক্ষিণ বারাসত এলাকায়। একাধিক জায়গায় রাস্তায় নেমে অবরোধ করলেন বন‌্ধ সমর্থকরা। ভাঙচুর চালানো হল একটি ট্রাকে। সকালে দক্ষিণ বারাসত স্টেশনে রেল অবরোধ করা হয়। কিছুক্ষণের জন্য রেল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়। পরে রেল পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে রেল চলাচল স্বাভাবিক করে। সকাল থেকেই দক্ষিণ বারাসত মোড়ে গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বন‌্ধ সমর্থকরা। জয়নগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। পুলিশ সরতেই আবার রাস্তায় নেমে গাড়ি আটকায় বিক্ষোভকারীরা। এই ভাবেই পুলিশের চোখ এড়িয়ে এলাকার একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ অবরোধ চলতে থাকে। দক্ষিণ বারাসাত রেলগেটের কাছে একটি ইট বোঝাই ট্রাক আটকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখান একদল কর্মী সমর্থক। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে এলাকায় টহলে নামে র‌্যাফ। পুলিশি হস্তক্ষেপে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়। কিন্তু দোকানপাট অধিকাংশ বন্ধ ছিল।

জয়নগর: পুর এলাকায় বন্‌ধের মিশ্র প্রভাব দেখা গিয়েছে। দোকানপাট অন্য দিনের তুলনায় কম খুলেছিল। তবে রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচল ছিল স্বাভাবিক। স্কুল, পুরসভা ও অন্য সরকারি দফতর নিয়ম মতোই চলেছে। ছাত্রছাত্রী, সরকারি কর্মীদের উপস্থিতিও ছিল স্বাভাবিক। বন্‌ধের সমর্থনে অবশ্য এ দিন পুরসভায় আসেননি পুরপ্রধান সুজিত সরখেল। ছিলেন না কংগ্রেস, সিপিএমের অন্য কাউন্সিলররাও। সকালে জয়নগর থানার মোড়ে রাস্তা আটকে মিছিল করেন বাম কর্মী সমর্থকরা। তবে পুলিশি হস্তক্ষেপে তা উঠে যায়। কুলতলি এলাকায়ও বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করে রাস্তা আটকায় সিপিএম কর্মী সমর্থকরা। পুলিশ

হস্তক্ষেপ করে।

Bharat bandh 2019 CPM Strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy