ন্যাজাটকাণ্ডের এক দিন পরে অবশেষে রাজবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করলেন শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষী ভোলা ঘোষ। আদালতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর পুত্র এবং গাড়ির চালকের। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভোলা। তাঁর দাবি, ‘পরিকল্পিত ভাবে খুন’ করা হয়েছে দু’জনকে। কাদের নাম এফআইআরে রয়েছে, তা তিনি প্রকাশ করেননি। কেন ঘটনার এক দিন পরে এফআইআর, সেই জবাবও দিয়েছেন ভোলার আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন ভোলা। তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। তিনি এবং তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে ‘পরিকল্পিত ভাবেই খুন’ করা হয়েছে তাঁর সহযাত্রী পুত্র এবং গাড়ির চালককে। তবে কোন আট জনের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, তা প্রকাশ করেননি তিনি। তিনি এবং তাঁর আইনজীবী বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্তের স্বার্থে নামগুলি প্রকাশ্যে আনতে বারণ করেছে।’’ সঠিক তদন্তের দাবিও তুলেছেন ভোলা।
প্রশ্ন ওঠে, কেন ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরে অভিযোগ দায়ের হল থানায়? ভোলার আইনজীবী কালীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘ভোলা ঘোষ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। তাঁর এক পুত্র ওই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। তিনি শোকগ্রস্ত ছিলেন। তিনি আহতও হন। তাই দেরি হয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সকালে চার চাকার একটি গাড়ি বাসন্তী হাইওয়েতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে রাস্তার পাশের নয়ানজুলিতে পড়ে গাড়িটি। লরিটিও জলে পড়ে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় চার চাকার গাড়িতে থাকা দু’জনের। আরও দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মিনাখাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।
আরও পড়ুন:
খানিক পরে জানা যায়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিতে ছিলেন ভোলা এবং তাঁর ছোট ছেলে সত্যজিৎ ঘোষ। বসিরহাট আদালতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা। অকুস্থলে মারা যান সত্যজিৎ এবং গাড়িচালক শাহানুর মোল্লা। মৃতের পরিবারের দাবি, নিছক দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পনামাফিক হামলা হয়েছে। কারণ, বুধবার আদালতেই যাচ্ছিলেন শাহজাহানের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মামলার অন্যতম ওই সাক্ষী।
এ ব্যাপারে মিনাখাঁর এসডিপিও কৌশিক বসাক বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হননি। দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।’’