Advertisement
E-Paper

BJP-TMC: বনগাঁ মহকুমার রাশ ক্রমশ হাতে নিচ্ছে তৃণমূল, বিজেপির হাতছাড়া হল আরও একটি পঞ্চায়েত

১৪ অগস্ট পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যেরা প্রধানের অপসারণ চেয়ে ব্লক প্রশাসনের কাছে চিঠি দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০৭
উচ্ছ্বাস: আস্থা ভোটে জয়ের পর তৃণমূল সমর্থকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

উচ্ছ্বাস: আস্থা ভোটে জয়ের পর তৃণমূল সমর্থকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

আস্থা ভোটে হেরে পঞ্চায়েত হাতছাড়া হল বিজেপির। গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি বনগাঁ মহকুমায় ৪টি পঞ্চায়েত দখল করেছিল। তার মধ্যে বাগদার সিন্দ্রাণী পঞ্চায়েত ও চৌবেড়িয়া ২— এই দু’টি পঞ্চায়েত হাতছাড়া হল বিজেপির। এদিন ভোটাভুটি হয়েছে চৌবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ভোট দিয়েছেন প্রধান নমিতা রায় ঘরামির বিরুদ্ধে। প্রশাসন জানায়, এদিন আট জন সদস্য ভোট দিয়েছেন প্রধানের বিপক্ষে। পক্ষে কোনও ভোট পড়েনি।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকের বিজেপি পরিচালিত একমাত্র পঞ্চায়েত ছিল চৌবেড়িয়া ২। ১৪ অগস্ট পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যেরা প্রধানের অপসারণ চেয়ে ব্লক প্রশাসনের কাছে চিঠি দেন। ৩১ অগস্ট আস্থা বৈঠক ডাকে প্রশাসন।

সেই বৈঠক ঘিরে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। গোলমাল, অশান্তি ছড়িয়েছিল। বিজেপির দাবি, প্রধানের অপসারণ চেয়ে তৃণমূল যে চিঠি দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত স্থগিতাদেশ দেয়। তারপরেও কী করে আস্থা বৈঠক হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিজেপি।

সেদিন ভোটাভুটি হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য ফল প্রকাশ করা হয়নি।

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ১৪ অগস্ট প্রধানের অপসারণ চেয়ে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ভাষাগত কিছু ত্রুটি ছিল। সে কারণে আদালত জানিয়েছিল, ৩১ অগস্টের বৈঠকে যদি কোনও সিদ্ধান্ত হয়, তা গ্রাহ্য হবে না। তবে নতুন করে আবেদন করা যাবে।

তৃণমূলের সদস্যেরা সেই মতোই নতুন করে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার নতুন করে আস্থা বৈঠক ডাকা হয়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের মোট সদস্য ১৫ জন। গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি পায় ৮টি আসন। তৃণমূল পেয়েছিল ৭টি আসন। পরে তৃণমূলের এক সদস্য মারা যান। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তৃণমূল ৬ জন সদস্য এবং বিজেপির ২ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সকলেই প্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। প্রধান-সহ বিজেপির বাকি সদস্যেরা ভোটাভুটিতে যোগ দেননি।

বিজেপি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মনস্পতি দেবের অভিযোগ, ‘‘এদিন আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বৈঠক ডেকেছিল প্রশাসন। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগে বিজেপির যে দু’জন সদস্য তৃণমূলে যোগদান করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে। তারপরে বৈঠকের বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোরানি সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সকলে সামিল হতে চেয়েছেন। পঞ্চায়েত আমরা দখল করলাম। আমরা ৭ দিনের মধ্যে বোর্ড গঠন করব।’’

এদিনের বৈঠকে প্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন উপপ্রধান, বিজেপির মাধুরী রায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানের প্রতি আমার আস্থা ছিল না। উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারছিলাম না। এ বার মানুষের জন্য উন্নয়ন করব। তৃণমূল যোগদানও করব।’’

এদিনের বৈঠকে ভোটাভুটিতে জয়ী হওয়ার পরেই কার্যত উৎসবে মাতেন তৃণমূলের কয়েকশো নেতা-কর্মী। চলে আবির খেলা। উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪২ জন। মারা গিয়েছেন ৪ জন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আর্জি জানাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে শাসকদলের কর্মী-সমর্থকদের এই আচরণের সমালোচনা করেছেন সচেতন মানুষজন।

গোলমাল ও জমায়েত এড়াতে পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন এলাকায় এদিন ১৪৪ ধারা জারি ছিল। প্রচুর পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন ছিল। তবু এড়ানো যায়নি জমায়েত। অভিযোগ, শারীরিক দূরত্ববিধি মানার বালাই ছিল না। অনেকের মাস্কও ছিল না। কারও কারও মাস্ক ঝুলেছিল থুতনির নীচে। কারও মাস্ক উঁকি দিয়েছে বুকপকেট থেকে। এ নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, কর্মী ও মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। বেশিরভাগই মাস্ক পরেছিলেন।

পুলিশের বক্তব্য, গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।

TMC BJP Panchayat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy