বিস্ফোরণে ছইন্নভিন্ন দেহ। প্রতীকী ছবি।
ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে কারও দেহ। কারও দেহ পুড়ে কাঠ। বুধবার সকালে নোদাখালি থানার মোহনপুরের সোনারিয়ায় বাজি কারখানার বিস্ফোরণের ঘটনায় দেখা গিয়েছে এমনই সব বীভৎস দৃশ্যের। যা দেখে শিউরে উঠছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিস্ফোরণ-কাণ্ড নিয়ে উঠে আসছে নানা অভিযোগও। আকিল মোল্লা নামে সোনারিয়া এলাকার এক বাসিন্দা যেমন বলেন, ‘‘সকালে কানফাটানো আওয়াজ শোনার পর থেকেই এলাকায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে দেখি এই ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে নিহত অসীম মণ্ডলের বাড়ির পাশে একটা কোচিং সেন্টার আছে। ভাগ্য ভাল যে সেখানে পড়তে যাওয়া শিশুরা বেঁচে গিয়েছে।’’ গ্রামের মধ্যে বাজি কারখানা তৈরি হল কী ভাবে? আকিলের উত্তর, ‘‘থানা এবং পঞ্চায়েত সব জানত। ওরা টাকা নিয়ে এই কারখানা চালাতে দিত। তৃণমূলের উপপ্রধান তড়িৎ মণ্ডলের মদতে এ সব চলছে। আমরা এ নিয়ে বার বার বলেছি। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। আমরা চাই, এই বেআইনি ব্যবসা এখান থেকে উঠে যাক।’’
আকিলের সুর শোনা গেল ওই এলাকার আর এক বাসিন্দা আল্পনা প্রামাণিকের গলাতেও। আল্পনার দাবি, ‘‘আমরা জিজ্ঞাসা করলেই অসীম বলত, ‘তড়িৎ মণ্ডল আমাদের অনুমতি দিয়েছে। আমরা বাড়িতে বারুদ রাখি না।’ আমরা বার বার বারণ করেছিলাম। কিন্তু ওরা শোনেনি।’’
বুধবার সেই অসীমের বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে বিস্ফোরণের তীব্রতায়। আশপাশের কয়েকটি বাড়ির জানালার কাচও ভেঙে পড়েছে। অসীম ছাড়াও অতিথি হালদার এবং কাকলি মিদ্যা নামে ওই কারখানার দুই কর্মী-সহ মোট তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে বিস্ফোরণের আকস্মিকতায় চমকে উঠেছেন স্থানীয়রা। সেই ঘোর কাটার আগেই তাঁরা আঁতকে উঠছেন তিন জনের দেহ দেখেও। কারণ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া, কয়লা-কালো দেহ দেখে নিহতদের চিনতে পারা তাঁদের কাছে দুস্কর হয়ে উঠেছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই বাজি কারখানা গজিয়ে ওঠার পিছনে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে কাদের মদত ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই কাণ্ডে স্থানীয় তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে সাতগাছিয়ার বিধায়ক মোহন নস্করের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। দলের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy