Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রথমবার রক্ত দিয়ে তৃপ্ত সুলতানা

মূল সড়ক থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার ভিতরে, প্রত্যন্ত এলাকা কুলতলির মেরিগঞ্জ-২ পঞ্চায়েতের পূর্ব তেঁতুলিয়া গ্রামে রবিবার কবাডির আসর বসল ঠিকই, কিন্তু এ বার পরিবেশটা সম্পূর্ণ আলাদা। সঙ্গে প্রথমবার রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হয়েছিল। রক্ত দিয়েছেন সংখ্যালঘু ৩৫ জন মহিলা-সহ ৬৫ জন।

দাতা: কুলতলিতে। নিজস্ব চিত্র

দাতা: কুলতলিতে। নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
কুলতলি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:৫০
Share: Save:

ইদ উপলক্ষে প্রতিবারই গ্রামে কবাডি প্রতিযোগিতার আসর বসে। প্রত্যন্ত এলাকা। আদিবাসী, সংখ্যালঘু শ্রেণির দরিদ্র মানুষের বাস। বেশির ভাগই পেশায় দিনমজুর। কবাডিকে ঘিরে গ্রামের পরিবেশ জমজমাট। এমনিতে তেমন উৎসব অনুষ্ঠানের চল নেই। ফলে কবাডিই গ্রামের বড় উৎসব।

মূল সড়ক থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার ভিতরে, প্রত্যন্ত এলাকা কুলতলির মেরিগঞ্জ-২ পঞ্চায়েতের পূর্ব তেঁতুলিয়া গ্রামে রবিবার কবাডির আসর বসল ঠিকই, কিন্তু এ বার পরিবেশটা সম্পূর্ণ আলাদা। সঙ্গে প্রথমবার রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হয়েছিল। রক্ত দিয়েছেন সংখ্যালঘু ৩৫ জন মহিলা-সহ ৬৫ জন। এতটা সাফল্য আসবে, বুঝতে পারেননি উদ্যোক্তারা। ৭০ জন মহিলা লাইনে দাঁড়িয়েও রক্ত দিতে না পেরে ফিরে গিয়েছেন। রক্ত দিয়ে ফেরার পথে জাহানারা বিবি, সুলতানা লস্কররা জানালেন, ‘‘সমাজের কাজে এলাম। ভাল লাগছে।’’

গ্রামের একটি ক্লাবের পরিচালনায় কবাডি প্রতিযোগিতা বসে। স্থানীয় শিক্ষক মনোরঞ্জন সর্দার ক্লাব-কর্তাদের পরামর্শ দেন, যদি খেলাধূলার পাশাপাশি সমাজসেবা বা স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে কোনও কাজ করা যায়। মনোরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমি গ্রামের আদিবাসী পরিবারের সদস্য হলেও এখন অন্যত্র থাকি। বারুইপুর এলাকায় দেখেছি, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বা খেলাধূলার অনুষ্ঠানের সঙ্গে নানা সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাই ভাবলাম, আমাদের গ্রামেও এমন কোনও উদ্যোগ করলে কেমন হয়। সে কথাটাই ক্লাব উদ্যোক্তাদের বলি। রক্তদান শিবির করা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হয়।’’

উদ্যোক্তাদের প্রস্তাবটা মনে ধরে। কিন্তু পিছিয়ে পড়া প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করা কিংবা সামাজিক কাজে উৎসাহ দানটা ছিল সময়সাপেক্ষ কাজ। দু’মাস ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্লাবের ছেলেরা সেই কাজটাই চালিয়ে যান। কথা বলা হয়, মূলত বাড়ির মেয়েদের সঙ্গে।

ফলও মেলে। ক্লাবের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ভাবতেই পারিনি এত মহিলা রক্তদানে রাজি হবেন।’’ হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই রক্তদানে এগিয়ে এসেছিলেন বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক বা সমাজসেবামূলক কাজ ভবিষ্যতেও করার ইচ্ছে আছে বলে জানালেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE