তখন চলছে বিনোদন। ছবি: নির্মল বসু।
‘দিল দিয়া হ্যায়,জা ভি দেঙ্গে,অ্যায় বতন তেরে লিয়ে।’ গানের তালে তালে নাচছেন সীমান্ত রক্ষীরা। কখনও বেজে উঠছে ‘দিল দে দিয়া হ্যায়, জান ভ দেঙ্গে’ কখনও অ্যায় বতন তেরে লিয়ে...।’
সঙ্গে নাচছে সীমান্ত-লাগোয়া গ্রামের ছোট ছোট মেয়েরা।
গান হল। কবিতা হল। বই-খাতা-স্কুল ব্যাগ থেকে খেলার সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হল ছাত্রছাত্রীদের হাতে। সব মিলিয়ে বিএসএফ জওয়ানদের অন্য মেজাজে দেখলেন স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ জন।
গাবর্ডা চৌকির ১৪৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের পক্ষে কৈজুড়ি পঞ্চায়েতের শোনপুর প্রাথমিক স্কুলের মাঠে বিএসএফের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান হল সোমবার। উপস্থিত ছিলেন ১৪৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট আজিথকুমার ভি, কোয়ার্টার মাস্টার বলবীর সিংহ, কোম্পানি কম্যান্ডার অমর সিংহ পাণ্ডে, জগদীশ চন্দ্র, গজেন্দ্র সিংহ, সাব ইন্সপেক্টর সত্যেনকুমার দাস-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
এ দিন স্কুলের মাঠে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার দু’ধার রঙিন পতাকায় সাজানো। সারি সারি রঙিন কাপড়ে মোড়া ছাউনি পড়েছে। কোথাও পুরস্কার বিতরণ হচ্ছে। কোথাও স্কুলের ছেলেময়েরা বসে। আবার কোনটায় বিএসএফের আধিকারিকেরা। গ্রামবাসীরাও আছেন। মাঝের ছাউনিতে চলছে নাচের অনুষ্ঠান। প্রচুর ক্যামেরায় ফটাফট ছবি উঠছে।
বিএসএফ সূত্রে জানা গেল, স্থানীয় সীমান্ত-লাগোয়া গ্রামের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষেই মূলত এই অনুষ্ঠান। এ দিনের অনুষ্ঠানে শোনপুর, খলসি, দবিলা, কৈজুড়ির চারটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নানা শিক্ষা ও খেলার সরঞ্জাম। নাচের অনুষ্ঠানে নগদ পুরস্কার পেয়ে খুশি শোনপুর গ্রামের জ্যোতি হালদার, অনুশ্রী মণ্ডল, বনানী মণ্ডল, বিত্তিপাড়ার কবিতা মণ্ডলরা। তাদের কথায়, “জওয়ানেরা যে ভাবে আমাদের নিয়ে অনুষ্ঠান করলেন, পুরস্কার দিলেন, খাওয়ালেন তা কখনও ভূলতে পারব না।” ছোট ছেলেমেয়েরা নাচ-গানের মধ্যে দিয়ে জওয়ানদের অন্য মেজাজে দেখে দিব্যি খুশি।
শোনপুর প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অভিজিত্ বাছাড় এবং শোনপুর শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা নিয়তি সরকার বলেন, “আমরা অভিভূত। বিএসএফের এমন ভূমিকা সীমান্তে জওয়ান এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে আরও সদর্থক ভূমিকা পালন করবে।” প্রদীপ মণ্ডল, কৈলাশ সরকার, কাদের মোল্লাদের কথায়, “সীমান্তে এ ভাবে জওয়ানেরা যদি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে গ্রামের গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ান, তা হলে দুষ্কৃতীরা সহজে সাধারণ মানুষ কিংবা বিএসএফের উপরেও হামলা চালাতে পারবে না।” বিএসএফের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে সীমান্ত এলাকায় ‘সিভিক অ্যাকশন প্রোগ্রাম’ নেওয়া হয়েছে বলে জানান কমান্ড্যান্ট আজিথকুমার ভি। তিনি বলেন, “সীমান্ত এলাকায় শিক্ষা খেত্রে শিশুদের এবং গরিব ছেলেমেয়েদের চাকরি পাওয়ায় সহযোগিতা করা বিএসএফের মূল লক্ষ। তারই অঙ্গ হিসাবে এখানকার স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় সাহা্য করা হল। এলাকার ছেলেমেয়েরা যাতে খেলাধূলার মাধ্যমে শরীর গঠন করতে পারে, সেই সাহায্যও করা হল।” আগামী দিনে এমন অনুষ্ঠান আরও করা হবে বলে প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy