Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তায় ফেলে সিভিক ভলান্টিয়ারকে মার ভ্যানচালকের

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার সকালে বারাসত-টাকি রোডের বেড়াচাঁপা এলাকা যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সেই সময়ে এক ওই ভ্যান চালককে বারণ করা সত্বেও কথা না শোনায় তার গাড়ি আটকান আশাদুল মণ্ডল নামে এক সিভিক।

চিকিৎসাধীন: হাসপাতালে সিভিক ভলান্টিয়ার। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসাধীন: হাসপাতালে সিভিক ভলান্টিয়ার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

ট্র্যাফিক নিয়ম না মানায় এক মোটর ভ্যানচালকের পথ আটকে ছিলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ, তার প্রতিশোধ নিতে চার দিন পরে দলবল নিয়ে এসে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে বেধড়ক পেটাল ওই মোটর ভ্যানচালক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শনিবার রাতে বারাসত-টাকি রোডের দেগঙ্গা থানার বেড়াচাঁপার ঘটনা। ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার সকালে বারাসত-টাকি রোডের বেড়াচাঁপা এলাকা যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সেই সময়ে এক ওই ভ্যান চালককে বারণ করা সত্বেও কথা না শোনায় তার গাড়ি আটকান আশাদুল মণ্ডল নামে এক সিভিক। তা নিয়ে চলে দু’পক্ষের বচসা। অভিযোগ, ওই চালক ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয় আশাদুলকে। এর পরে ওই ভ্যান চালককে আশাদুলও পাল্টা চড় মারেন বলে খবর।

পুলিশ জানিয়েছে, সে দিনের মতো সমস্যা মিটে গেলেও প্রতিশোধ নিতে শনিবার সন্ধ্যায় ওই ভ্যানচালক দলবল নিয়ে গিয়ে বারাসত-টাকি রোডের উপরে ফেলে আশাদুলকে বেধড়ক পেটায়। তাঁর নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। অটো চালকেরা তাঁকে উদ্ধার করে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখন সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। রবিবার আশাদুল অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ওরা শাসক দলের লোক ছিল। আমি এর বিচার চাই।’’ যদিও এ দিন ওই এলাকার এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘যারা ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’ উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন,‘‘দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।’’

এ দিন ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, যানজটের জন্য বেড়াচাঁপা এলাকায় ওই রাস্তা পার হতে লেগে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্ৰতিদিন পথচলতি মানুষ, গাড়ি চালক নাজেহাল হন যানজটে। এর পাশাপাশি ওই রাস্তা দিয়েই যেতে হয় বাংলাদেশ সীমান্ত ঘোঁজাডাঙা সীমান্তে। ফলে প্রতিদিনই সীমান্তগামী হাজার হাজার পণ্যবাহী লরি ওই পথেই যাতায়াত করে। অভিযোগ, সেই রাস্তায় প্রশাসনের তরফ থেকে যানজট রুখতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দু’জন করে মোট ছয় জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে। পাশাপাশি থানা থেকে নজরদারি চালানোর জন্য চৌরাস্তায় চারটি ক্যামেরা ছিল। কিন্তু বছর খানেক আগে বাদুড়িয়ায় গোলমালের সময়ে ভেঙে দেওয়া হয় ক্যামেরাগুলি। আজও তা মেরামতি না হওয়ায় থানায় বসে নজরদারিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার জেরে যানজট সামলানো ওই ক’জন সিভিক ভলান্টিয়ারের পক্ষে কঠিন হয়ে গিয়েছে।

এ দিন সাবির আলি নামে এক পথচারী বলেন, ‘‘যানজট কাটতে কোনও কোনও দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায়। পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না।’’ পলি সিংহ নামে এক কলেজ ছাত্রী বলেন, ‘‘কয়েক জন সিভিক দিয়ে কি এত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার যানজট সামলানো যায়?’’

স্থানীয় মানুষের আরও অভিযোগ, সিভিকদের গুরুত্ব দিতে চান না গাড়িচালকেরা। ফলে কোনও সিভিক যখন কড়া হাতে পরিস্থিতি সামলাতে যান, তখনই তিনি গাড়িচালকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। এ দিনের ঘটনা তারই ফলশ্রুতি। যদিও এ দিন পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাস্তায় ট্র্যাফিক সম্যস্যা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি ওই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Civic Volunteer Deganga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE