সুস্মিতা ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক কলেজ ছাত্রীর। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ শহরে স্টেশন রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুস্মিতা ঘোষ (২২)। বাড়ি শক্তিগড় এলাকায়। পুলিশ ট্রাকটি আটক করেছে। দুর্ঘটনার পরে সঙ্কীর্ণ স্টেশন রোড চওড়া করার দাবি জানিয়েছেন মানুষজন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুস্মিতা গোবরডাঙা হিন্দু কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। এ দিন সকালে কলেজে যাবেন বলে বাড়ি থেকে সাইকেলে বনগাঁ স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। স্টেশন রোড ধরে যাওয়ার সময়ে পিছন থেকে একটি ট্রাক তাঁকে ধাক্কা মারে। সুস্মিতা ছিটকে পড়েন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, স্টেশন রোডটি খুবই সঙ্কীর্ণ। রাস্তা দিয়ে সারাক্ষণই অটো, টোটো, ভ্যান, সাইকেল, বাইক চলাচল করে। এরই মধ্যে ট্রাক ও ভারী গাড়িও চলাচল করে। দীর্ঘ দিন ধরে এই রাস্তা চওড়া করার দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানালেন, সঙ্কীর্ণ রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বনগাঁ স্টেশনে ট্রেন থামার পরেই রাস্তায় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। এক দিকে ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের বাড়ি বা কর্মস্থলে যাওয়ার তাড়া থাকে, অন্য দিকে অনেকের ট্রেন ধরার ব্যস্ততা থাকে। নিত্যযাত্রীরা জানালেন, সকাল-সন্ধ্যায় রাস্তা দিয়ে দ্রুত যাতায়াত করা যায় না। যাত্রীদের হাতে সময় নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে হয় ট্রেন ধরতে। অভিযোগ, সঙ্কীর্ণ রাস্তার পাশে মাঝে মধ্যে ইমারতি মালপত্র ফেলে রাখা হয়। এর ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বাড়ে।
বনগাঁ শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে নিউ বাটা মোড় পর্যন্ত গিয়েছে স্টেশন রোডটি। ১ নম্বর রেলগেট থেকে মাল গোডাউন এলাকা পর্যন্ত রাস্তাটি ৯৫০ মিটার লম্বা। কিন্তু চওড়া মাত্র ৪ মিটার।
পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, “পূর্ব রেলের ডিআরএম-এর কাছে স্টেশন রোডটি চওড়া করার দাবি করেছি। রেল কর্তৃপক্ষকে বলেছি, তাঁরা রাস্তাটি করতে না পারলে পুরসভাকে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হোক। পুরসভা বা রাজ্য সরকার রাস্তাটি চওড়া করবে।” রাস্তার এক পাশে রেলবস্তি। বেশ কিছু পরিবার বসবাস করেন। এ বিষয়ে গোপাল বলেন, “রেলের অনেক অব্যবহৃত জমি পড়ে আছে। রেল কর্তৃপক্ষকে সেখানে পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। পুরসভা সেখানে বাড়ি তৈরি করে দেবে।” পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই স্টেশন রোডটি চওড়া করার জন্য পুরসভা ও রেল কর্তৃপক্ষ যৌথ সমীক্ষা করেছে। পুরপ্রধান বলেন, “রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা স্টেশন রোডটি সংস্কারের পরিকল্পনা করছে।”
সুস্মিতার মামা সঞ্জয় ভদ্র বলেন, ‘‘ভাগ্নি ভূগোল অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করছিল। এ ভাবে তার মৃত্যুতে আমরা সকলেই ভেঙে পড়েছি। ভাবতে পারছি না, কলেজ যাওয়ার পথে একটা প্রাণ এ ভাবে চলে গেল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy