পাল্লা দক্ষিণপাড়ার পুজো। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
একদিকে বহু প্রাচীন একটি পীর বাবার মাজার। আর এক দিকে পুজো হচ্ছে দেবী দুর্গার।
গোপালনগর পাল্লা দক্ষিণপাড়ার দুর্গাপুজোর ঢাকের তালে নাচেন কিশোর, দুলাল, অসীমরা। আর এক দিকে দোয়া করতে বসেন রহমান, আবদুল, তাহেররা। এ ভাবেই বছরের বছর পুজো পালন করা হয় ওই গ্রামে।
৮২ বছর ধরে এখানে পুজো হচ্ছে। এ বারের থিম, মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু মুসলমান। পীর বাবার মাজারের বারো ফুট দূরে তৈরি হয় মণ্ডপ। শিল্পী গুপিনাথ চক্রবর্তীর তৈরি করা ডাকের সাজের প্রতিমা। এখানকার তাহের, অসীম, রহমান, বিজয়রা এক সঙ্গে প্রতিমা ধরে মণ্ডপে তোলেন। চাঁদা তোলেন। পুজোতে সামিলও হন। ঢাকের তালে নেচে ওঠে পাড়ার ছোট ছোট কচিকাঁচারা। সেখানেও কোনও বিভেদ থাকে না। নতুন জামাকাপড় পড়ে পুজো দেখতে আসেন রাজিয়া, শালমা, আকবররা।
স্থানীয় যুবক মিজানুর মণ্ডল বলেন, ‘‘পুজোর সব কাজেই আমরা সামিল হই।’’ পুজো কমিটির সম্পাদক কিশোরকুমার দে বলেন, ‘‘আমাদের এখানে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির ভিতটাই দৃঢ়। প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তির সময়ে তিন দিনের মেলা বসে পীর বাবার মাজারে। সেটাও আমারা একত্রে আয়োজন করি।’’ বৃদ্ধ রহমান এ বার মণ্ডপের একাংশ তৈরি করেছেন। বলেন, ‘‘অন্যত্র কী অবস্থা জানি না। তবে আমাদের এখানে আমরা সকলে মিলে শান্তিতে বসবাস করছি।’’
শান্তিপুর থেকে আসা জীবন্ত সব মডেলের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে একদিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা নামাজ পড়ছেন, অন্য দিকে হিন্দু পুরোহিতেরা পুজো-আচ্চা করেন। চার দিকে বড় বড় পোস্টারে সাজিয়ে তোলা হয়েছে সম্প্রীতির ছবি। কিশোরবাবু জানান, সকলকে সম্প্রীতির বার্তা দিতেই এই থিম বেছে নেওয়া হয়েছে।
শুধু সম্প্রীতি নয়, বাল্য বিবাহ বন্ধ করা, নারী পাচার চক্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর বার্তাও দেওয়া হয়েছে প্রচারের মাধ্যমে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী করা উচিত সে সম্পর্কেও প্রচার করা হচ্ছে মানুষের মধ্যে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সমাজের সমস্যা নিয়ে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy