ফাঁকা দোকান। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের জেরে হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, সন্দেশখালির বিভিন্ন বাজারে কমে গিয়েছে পোলট্রির মুরগির বিক্রি। চাহিদা কমায় বিভিন্ন বাজারে মাংসের দামও পড়েছে অনেকটা। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।
হিঙ্গলগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা গেল, মুরগির মাংসের দোকানগুলি কার্যত সুনসান। মাংস বিক্রেতারা জানান, দিনে ৫০-৬০ কেজি করে মাংস বিক্রি হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ে হইচই শুরু হতেই বিক্রি ক্রমশ কমতে শুরু করেছে। এখন দিনে ১০ কেজি মাংস কোনওমতে বিক্রি হচ্ছে। হিঙ্গলগঞ্জ বাজারের মাংস বিক্রেতা মধুসূদন পাল বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় করোনাভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট ঘুরে বেরাচ্ছে। পোলট্রির মুরগির মাংস থেকে ভাইরাস ছড়াচ্ছে বলে বলা হচ্ছে। এই সব দেখেই ক্রেতারা পোলট্রির মুরগি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।’’
একই ছবি হাসনাবাদের বাইলানি বাজারেও। মাংস বিক্রেতা সফিকুল শেখ, রমানন্দ রায়রা বলেন, ‘‘ব্যবসা একেবারে ভাল চলছে না। বিক্রি খুব কমে গিয়েছে। বিয়ের মরসুম চলছে। এই সময়ে প্রচুর বরাত থাকে। কিন্তু এ বার একটাও বরাত আসেনি।’’ ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর এই সময়ে মাংসের দর ছিল কেজি প্রতি ১৭০ টাকা। চাহিদা কমায় দাম কমিয়ে এখন ১২০ টাকা কেজিতে মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু তা-ও বিক্রি তলানিতে।
বিক্রি কমায় সমস্যায় পড়েছে পোলট্রি ফার্মগুলিও। হাসনাবাদের বিশপুরের এক ফার্মের মালিক টিঙ্কু ঘোষ বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের ভয়ে মুরগির বিক্রি অনেকটাই কমে গিয়েছে। ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে।’’
করোনা-আতঙ্ক যে ভাল মতোই চেপে বসেছে, তা বোঝা গেল স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে। সন্দেশখালির খুলনার বাসিন্দা কর্ণ মণ্ডল, অচিন্ত মণ্ডলরা বলেন, ‘‘আগে সপ্তাহে দু’দিন পোলট্রির মাংস কিনতাম। কিন্তু গত এক মাস করোনাভাইরাসের ভয়ে পোলট্রির মাংসটা এড়িয়ে চলছি। দাম বেশি হলেও দেশি মুরগি বা পাঁঠার মাংসই কিনছি।’’
বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য করোনাভাইরাসের সঙ্গে পোলট্রির মুরগির কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। হাসনাবাদ ব্লকের প্রাণিসম্পদ বিকাশ আধিকারিক মৃণালকান্তি দাস বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সঙ্গে পোলট্রির মাংসের কোনও যোগ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। কেউ কেউ অযথা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।’’ হাসনাবাদের চিকিৎসক অর্ধেন্দুশেখর মণ্ডল বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোস্ট দেখে পোলট্রির মুরগির মাংসের ব্যাপারে এই ভয় নেহাতই অমূলক। এখনও এমন কোনও তথ্য হাতে আসেনি, যা থেকে বলা যায় পোলট্রির মুরগির মাংস বিপজ্জনক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy