Advertisement
E-Paper

বন্ধ লোকাল ট্রেন, সঙ্কটে রেল-হকার, ব্যবসায়ীরা

স্টেশন চত্বরের দোকানগুলিতে গত কয়েকদিনে কেনা বেচা কার্যত লাটে উঠেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২১ ০৬:০৫
শুনশান: ট্রেন বন্ধ, বিক্রিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্টেশনের ব্যবসায়ীদের।

শুনশান: ট্রেন বন্ধ, বিক্রিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্টেশনের ব্যবসায়ীদের। ক্যানিং স্টেশনে ছবিটি তুলেছেন প্রসেনজিৎ সাহা।

করোনার প্রথম ধাক্কায় লকডাউনের জেরে দীর্ঘ প্রায় আট মাস বন্ধ ছিল লোকাল ট্রেন চলাচল। সেই সময়টা কার্যত দুঃস্বপ্নের মধ্যে কেটেছে ট্রেনে বা স্টেশন চত্বরে হকারের পেশায় নিয়ুক্ত মানুষদের। এবার করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় ফের রেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে রেল হকারদের জীবনে ফের নেমেছে আঁধার। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে উত্তরে বনগাঁ, বসিরহাট, সর্বত্রই সঙ্কটে হকাররা।

ডায়মন্ড হারবার লাইনে লোকাল ট্রেনে জল বিক্রি করে দিন গুজরান করেন বাবলু নস্কর। গতবছর লকডাউনের জেরে প্রায় ন’মাস ঘরবন্দি ছিলেন। ধার দেনা করে কোনওরকমে সংসার চালিয়েছেন। লকডাউন কাটিয়ে নভেম্বরে ট্রেন চালু হতে আশার আলো দেখেছিলেন। কিন্তু এবার কী করবেন, ভেবে উঠতে পারছেন না তিনি। ক্যানিং স্টেশনে ঘুগনি-মুড়ি করতেন শম্ভু সাহা। লকডাউনের সময়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হতে সমস্যায় পড়েছিলেন। এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাস্ক বিক্রি করে ভাত জুগিয়েছিলেন পরিবারের মুখে। ট্রেন চলাচল শুরু হতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিলেন। ফের ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিশাহারা অবস্থা শম্ভুর। বাবলু, শম্ভুদের মতোই মাথায় হাত অন্য রেল হকারদেরও।

ক্যানিং রেলওয়ে স্টেশন হকার ইউনিয়নের সভাপতি পরেশ ঘোষ বলেন, “ক্যানিং স্টেশন-সহ ক্যানিং লাইনে প্রায় পাঁচশোর বেশি হকার এই লোকাল ট্রেনকে কেন্দ্র করেই জীবন জীবিকা চালান। সকলেই ফের বেকার হয়ে গেলাম। কী ভাবে যে সংসার চলবে বুঝে উঠতে পারছি না।” ডায়মন্ড হারবার স্টেশন রেলওয়ে হকার ইউনিয়েনের সদস্য রাজ্জাক খান বলেন, “খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছি। আগের বারে লকডাউনের ধারদেনা এখনও মেটাতে পারিনি।” এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে ট্রেন চলাচল শুরু করার বিষয়টি বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছেন অনেকেই। রাজ্জাক বলেন, “সরকার কিছু ট্রেন অন্তত চালানোর সিদ্ধান্ত নিক। নাহলে আমাদের কিছু আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করুক।”

হকারদের পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন রেল কেন্দ্রিক অন্য ছোট ব্যবসায়ীরাও। স্টেশন চত্বরের দোকানগুলিতে গত কয়েকদিনে কেনা বেচা কার্যত লাটে উঠেছে। স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় সাইকেল-বাইক রাখার গ্যারাজ চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকে। সমস্যায় তাঁরাও। টাকি স্টেশন চত্বরে এরকম গ্যারাজ রয়েছে প্রায় ১৯টি। এরকমই একটি গ্যারাজের মালিক মনিকা দাস বলেন, “এই গ্যারেজের আয়েই সংসার চলে। লকডাউনের সময় খুবই সমস্যায় পড়েছিলাম। গত কয়েক মাসে তবু দিনে প্রায় ৫০-৬০টি বাইক-সাইকেল আসছিল। কোনওরকমে চলছিল। এখন তো একদম বন্ধ। সংসার চালানোই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।” হাসনাবাদ স্টেশন চত্বরে প্রায় ৭০টি ছোট-বড় দোকান রয়েছে। দোকানগুলির কেনাকাটা মূলত রেলযাত্রীদের উপরই নির্ভরশীল। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় অধিকাংশ দোকানেরই ঝাঁপ বন্ধ। দু-একটা দোকান কিছুক্ষণের জন্য খুলছে। কিন্তু বিক্রিবাটা হচ্ছে না। স্টেশনের এক দোকানদার টুকাই চক্রবর্তী বলেন, “ট্রেন চললে দিনে ৫০০ টাকার কোনা-বেচা হয়। এখন কোনওরকমে ৫০ টাকা আয় হচ্ছে।”

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy