Advertisement
E-Paper

অসুস্থ মায়ের ওষুধ কিনতে পারছি না 

লকডাউনের কয়েকদিন আগে থেকেই গ্রামে মাটি কাটার যে কাজ করতাম তা বন্ধ হয়ে গেল।

         

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০৬:১৯
ঘরবন্দি গৌর দুলুই

ঘরবন্দি গৌর দুলুই

আমার বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা মা, ছেলে দীপ ও স্ত্রী মমতা। কয়েক বছর ধরে ডানকুনিতে কয়লার ডিপোতে শ্রমিকের কাজ করছি। দিনে আড়াইশো টাকা মজুরি। তা থেকেই আমার থাকা-খাওয়ার খরচ মিটিয়ে বাকিটা দিয়ে সংসার চলত। সরস্বতী পুজোর সময়ে বাড়ি এসেছিলাম। ভেবেছিলাম পুজোটা পরিবারের সঙ্গে কাটাই। সেই সময়ে কিছুদিন গ্রামে শ্রমিকের কাজও করি। ভেবেছিলাম, চৈত্র মাসে আবার কয়লার ডিপোতে যাব। কিন্তু করোনার জেরে সব এলোমেলো হয়ে গেল।

লকডাউনের কয়েকদিন আগে থেকেই গ্রামে মাটি কাটার যে কাজ করতাম তা বন্ধ হয়ে গেল। তার পর তো এতগুলি দিন হয়ে গেল কাজ পাইনি। ও দিকে, লকডাউনের জেরে কয়লার ডিপোও বন্ধ। কাছে যা সামান্য টাকা-পয়সা ছিল সব শেষ। এখন ভরসা শুধু রেশনের চাল-আটা ও প্রতিবেশীদের আনাজখেতের একটু টমেটো, একটু শাক। তা দিয়েই টেনেটুনে চলছে। কোনও বেলা আলু-টমেটো সেদ্ধ দিয়ে ভাত খাচ্ছি, কোনও বেলায় রুটি। এখনও বিনামূল্যের রেশন পাইনি। হয়তো পাব। আগের পাওয়া রেশনের চালও ফুরিয়ে এসেছে। আমাদের কোনও জমি-জায়গাও নেই।

লকডাউনে আমাদের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে উঠেছে। এখন যা পরিস্থিতি তাতে বাড়ির কেউ অসুস্থ হলে ওষুধ কেনার টাকাও নেই। মায়ের বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন ওষুধও কিনতে হয় তাঁর জন্য। এখন সব বন্ধ আছে। আর এক চিন্তা ছেলের পড়াশোনা। কী করে ওর পড়ার খরচ চালাব, কে জানে! আমার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করতে যেতেন। সামান্য কিছু আয় হত। এখন সেটাও বন্ধ। আমরা মাঝেমধ্যে গ্রামে যে খাল রয়েছে সেখানে মাছ ধরতে যেতাম। সেই মাছ গ্রামেই বিক্রি করতাম। ২০০-৩০০ টাকা আয় হত। কিন্তু এখন করোনা-আতঙ্কে বাইরে বেরোচ্ছি না। ফলে সেটাও হচ্ছে না। আমাদের রোজগারের সব পথগুলোই তো আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে! বাঁচব কী করে!

—অনুলিখন নবেন্দু ঘোষ

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy