Advertisement
০২ মে ২০২৪
Couple Organized Blood Donation camp

বিয়ের আগের দিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন হবু দম্পতির

রক্তদাতাদের হাতে সঞ্চয়িতা তুলে দিয়েছেন বর-কনের নামাঙ্কিত একটি করে চটের ব্যাগ।

শিবিরে সঞ্চয়িতা ও অঞ্জয়।

শিবিরে সঞ্চয়িতা ও অঞ্জয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

সীমান্ত মৈত্র  
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৩৮
Share: Save:

রিল্‌স, ট্রেন্ডস, ফলো আর লাইকের আশায় এ কালের বর-কনেরা বিয়েতে নতুন বিষয় ভাবনার খোঁজ করেন। কেউ বরের জন্য গান বাঁধেন (পরিনীতি চোপড়া) আবার কেউ মণ্ডপে প্রবেশের দৃশ্যে নিয়ে আসেন নাটকীয় মুহূর্ত (সিদ্ধার্থ মলহোত্রা-কিয়ারা আডবাণী)। তবে এ হেন ‘ট্রেন্ড সেট’ করার পথে না হেঁটে নিজেদের বিয়ে যতটা সম্ভব ছিমছাম রেখে মানুষের জন্য কিছু করার আশায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বনগাঁর জুটি— সঞ্চয়িতা রায় ও অঞ্জয় আইচ।

আজ, শুক্রবার বনগাঁর কালুপুর বাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা সঞ্চয়িতার বিয়ে। তিনি পেশায় আইনজীবী, বনগাঁ মহকুমা আদালতের সঙ্গে যুক্ত। বৃহস্পতিবার থেকে বাড়িতে উৎসবের মেজাজ, অতিথি সমাগম, খাওয়াদাওয়ার আয়োজন চলছে। তারই মধ্যে বিয়ের মণ্ডপে আইবুড়ো ভাতের দিন সঞ্চয়িতা আয়োজন করলেন রক্তদান শিবিরের। বনগাঁ ব্লাড সেন্টার কর্তৃপক্ষ রক্ত সংগ্রহ করতে এসেছিলেন। উপস্থিত ছিলেন অঞ্জয়ও। শিবির আয়োজনে হবু স্ত্রীকে উৎসাহ জুগিয়েছেন তিনি। শুধু আয়োজন নয়, হবু দম্পতি রক্তদানও করেছেন। রক্তদাতাদের তালিকায় ছিলেন আত্মীয়, বন্ধু ও পড়শিরাও।

এমন উদ্যোগ সকলেরই প্রশংসা কুড়িয়েছে। বনগাঁ ব্লাড সেন্টারের ইনচার্জ, চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার বলেন, “এর আগে বনগাঁ ব্লাড সেন্টারের পক্ষ থেকে জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে রক্তদান শিবিরের আয়োজন দেখেছি। কিন্তু বিয়েতেই রক্তদান, তা-ও আবার বর-কনেও রক্তদাতা— এই প্রথম দেখলাম। ওঁরা বহু মানুষের আশীর্বাদ পাবেন।” ব্লাড সেন্টার কর্তৃপক্ষ জানান, ২৩ জন রক্ত দিয়েছেন এ দিনের শিবিরে। গোপালের কথায়, ‘‘দাতার সংখ্যাটা এখানে বিবেচ্য নয়, এমন প্রয়াসটুকুই আসল।’’

রক্তদাতাদের হাতে সঞ্চয়িতা তুলে দিয়েছেন বর-কনের নামাঙ্কিত একটি করে চটের ব্যাগ। সেখানে লেখা, ‘প্রাণের স্পন্দনে, রক্তের বন্ধনে।’ রক্তদাতাদের জন্য ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেনের ব্যবস্থা ছিল।

সঞ্চয়িতারা দুই বোন। মা ললিতাই একা হাতে তাঁদের লালন-পালন করেছেন।সঞ্চয়িতা বলেন “কয়েক বছর আগে মা বলেছিলেন, অনেকেই বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্ম করে। তোর বিয়েতে রক্তদান শিবির করব। মায়ের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতেই এই আয়োজন।” সঞ্চয়িতার এক দাদা রক্তের অভাবে মারা গিয়েছিলেন। সেই ঘটনা তরুণীকে প্রভাবিত করেছিল। নিজে ইতিমধ্যে প্রায় ২০ বার রক্তদান করেছেন বলে জানালেন। সঞ্চয়িতার কথায়, “রক্তদানে কোনও শারীরিক অসুবিধা হয় না, সকলের উচিত এ কাজে এগিয়ে আসা।”

ললিতা বলেন, “আজ আমার মেয়ের বিয়েতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়েছে, ভবিষ্যতে এটা দেখে অন্যরাও এ রকম আয়োজন করবেন বলে আশা করি। এ ভাবে রক্ত সঙ্কট অনেকটাই দূর হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangaon Blood donation camp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE