Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
CPM

CPM: দুয়ারে মহিলা গ্যাং! বোমা-বন্দুক দেখিয়ে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ

রায়দিঘির ভদ্রপাড়ার বাসিন্দা রেণুকা নাইয়ারের পরিবারের অভিযোগ, শনিবার সকালে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা দেখিয়ে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে।

মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ।

মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়দিঘি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:২৩
Share: Save:

বোমা-বন্দুক হাতে নিয়ে বাড়ি থেকে সিপিএমের মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যকে তুলে নিয়ে গেল ‘মহিলা গ্যাং’। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির রাধাকান্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভদ্রপাড়া এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। সিপিএমের অভিযোগ, এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতীরা। যদিও সিপিএমের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
রাধাকান্তপুরের ভদ্রপাড়া এলাকার বাসিন্দা রেণুকা নাইয়ারের পরিবারের অভিযোগ, শনিবার সকালে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা দেখিয়ে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। রেণুকার ছেলের কথায়, ‘‘আজ সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তিন মহিলা বাড়িতে আসে। তারা মায়ের কাছে প্রথমে ওষুধ চায়। মা ঘর থেকে বার হওয়ার পরে ওরা মাকে বোমা-বন্দুক দেখায়। মায়ের গয়না লুঠ করে। তার পর মাকে অটোয় তুলে নিয়ে চলে যায়।’’ রেণুকা রাধাকান্তপুর পঞ্চায়েতের সদস্য হলেও পেশায় তিনি আশা কর্মী। তাই আশপাশের অনেকে তাঁর বাড়িতে ওষুধ নিতে আসেন। শনিবার সকালে তিন মহিলাকে বাড়িতে ঢুকতে দেখে তাঁরা ওষুধ নিতে এসেছেন বলে আন্দাজ করেছিলেন রেণুকার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।

রেণুকার ভাইঝির অভিযোগ, ‘‘ওদের হাতে বোমা ছিল। তাও আমি বাধা দিয়েছিলাম। ওরা বোমা ফাটায়। বন্দুকও দেখায়। তার পর জেঠিমাকে অটোয় তুলে নিয়ে চলে যায়। তাজমহল, মহিউদ্দিন, ওমপ্রকাশ মামুদ আলি ফকির ছিল। তবে যে মেয়েরা এসেছিল, তাদের নাম আমার ঠিক মনে নেই।’’

ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার জয়নাল-কৃষ্ণচন্দ্রপুর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মী-সমর্থকরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাধাকান্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতটি সিপিএমের দখলে। এই পঞ্চায়েতের মোট ১৪ জন সদস্য রয়েছেন৷ তার মধ্যে নয় জন সিপিএম সদস্য, দু’জন এসইউসি সদস্য এবং তিন জন তৃণমূলের। সিপিএমের অভিযোগ, মাস দেড়েক আগে এই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ চার বাম সদস্যকে অপহরণ করেছিল তৃণমূল। তেমন ভাবে শনিবার সকালে মহিলাদের কাজে লাগিয়ে বোমাবাজি করে রেণুকাকে অপহরণ করা হয় বলেও অভিযোগ সিপিএমের। তাদের দাবি, বাম সদস্যদের অপহরণ করে জোর করে পঞ্চায়েতের দখল নিতে চাইছে তৃণমূল। বামেদের আরও দাবি, অপহৃতদের সকলকে স্থানীয় নগেন্দ্রপুর ফ্লাড সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রায়দিঘি থানার দ্বারস্থ সিপিএম। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘জেলার একমাত্র এই পঞ্চায়েতটি সিপিএমের। কিন্তু অন্যায় ভাবে তার দখল নিতে চাইছে তৃণমূল। দিনদুপুরে আমাদের সদস্যদের অপহরণ করা হয়েছে৷ তাঁদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে। আমরা পুলিশের কাছে যাচ্ছি। সদস্যদের ছাড়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে রায়দিঘিতে।’’

তবে সিপিএমের তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের তরফে মথুরাপুর দুই নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি জয় ভান্ডারীর পাল্টা দাবি, ‘‘সিপিএম মিথ্যা অভিযোগ করছে৷ যাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তাঁরা এলাকাতেই আছেন। তাঁদের পরিবারের লোকজন কোনও অভিযোগ করেননি। এই সব মিথ্যে কথা রটিয়ে প্রচারের আলোয় আসার চেষ্টা করছে সিপিএম। কিন্তু কুৎসা-অপপ্রচার করে কোনও লাভ নেই। রায়দিঘির মানুষ সব জানেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM TMC Abduction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE