Advertisement
E-Paper

ত্রাণের ত্রিপলেই মাথা গুঁজে কাটছে দিন

সপ্তাহ দু’য়েক আগে ঘূর্ণিঝড় আমপান গোসাবার উপর আছড়ে পড়লে নদীর নোনা জল ঢুকে প্লাবিত হয় তাঁদের গ্রাম। জলে ডুবে যায় ঘরবাড়ি সব কিছুই।

প্রসেনজিৎ সাহা 

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৬:২৬
এ ভাবেই থাকতে হচ্ছে গৃহহীনদের। নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই থাকতে হচ্ছে গৃহহীনদের। নিজস্ব চিত্র

বাঁধ ভেঙে গ্রামে ঢোকা নদীর জল অনেকটাই কমেছে। ধীরে ধীরে জেগে উঠছে ডুবে যাওয়া বাড়ি ঘরগুলি। কিন্তু এখনই সেখানে গিয়ে বসবাস করার উপায় নেই। কাদা জল আর স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের উন্নতি না হলে পরিবারের সকলে সেখানে গিয়ে কী ভাবেই বা বসবাস করবেন!তাই এখনও ঠিকানা নদী বাঁধ। ত্রাণের ত্রিপলের ছাউনিতে আপাতত সেখানেই চলছে সংসার।

দুই সন্তান নিয়ে সংসার বন্দনা ও বিভূতি দাসের। গোসাবার রাঙাবেলিয়ায়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ৫ নম্বর রাঙাবেলিয়া গ্রামে তাঁদের বাড়ি। বাড়ি লাগোয়া বিঘা ছ’য়েক জমিতে চাষ-আবাদ করেই তাঁদের দিন কাটত। ফাঁকা সময়ে বিভূতি আশপাশের এলাকায় দিন মজুরির কাজ করতেন সংসারের হাল ফেরাতে। কিন্তু সপ্তাহ দু’য়েক আগে ঘূর্ণিঝড় আমপান গোসাবার উপর আছড়ে পড়লে নদীর নোনা জল ঢুকে প্লাবিত হয় তাঁদের গ্রাম। জলে ডুবে যায় ঘরবাড়ি সব কিছুই। দু’দিন ত্রাণ শিবিরে কাটিয়ে গ্রামে ফিরেছেন তাঁরা।

কিন্তু বাড়িতে সেই সময় এক কোমর জল থাকায় নদী বাঁধের উপরেই আশ্রয় নিয়েছিলেন গোটা পরিবার। সরকারি তরফ থেকে পাওয়া একটা ত্রিপল দিয়ে কোনও মতে মাথা গোঁজার ঠাঁই বানিয়েছেন তাঁরা। প্রথম দু-তিনদিন খাবারের সমস্যা হয়েছিল। সরকারি ভাবে পাওয়া চিঁড়ে, মুড়ি, গুড় দিয়ে পেট চলছিল। তবে এখন পরিস্থিতি একটু ভাল। কারণ বহু বেসরকারি সংস্থা এই এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিলি করছেন। কেউ চাল, ডাল, তেল, সয়াবিন দিচ্ছেন তো কেউ শুকনো খাবার দিয়ে গিয়েছেন।

এই মুহূর্তে খাবারের সমস্যা না থাকলেও অন্য চিন্তা গ্রাস করেছে বিভূতিদের। যে জমি চাষবাস করে সংসার চালাতেন তাঁরা, সেই জমিই এখন নোনা জলের তলায়। বাড়ি ঘর থেকে জল নেমে গেলেও এখনও জলমগ্ন চাষের জমি। আর এই নোনাজল ঢোকার ফলে আগামী কয়েক বছর যে এখানে কোনও চাষ হবে না সেটা একপ্রকার নিশ্চিত। ফলে কী ভাবে সংসার চলবে বুঝে উঠতে পারছেন না বছর পঁয়তাল্লিশের এই বিভূতি। তিনি বলেন, “আগে আর বেশ খানিকটা জমি ছিল। কিন্তু নদী ভাঙনের ফলে তা বিদ্যাধরীর কবলে চলে গিয়েছে। বিঘা ছ’য়েক জমিতেই বিভিন্ন চাষবাস করে দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলাম। কিন্তু এ বার যে কি হবে কে জানে?” বিভূতির স্ত্রী বন্দনা বলেন, “দু’সপ্তাহ হল আমরা ঘর ছাড়া। সন্তানদের নিয়ে নদীর পাড়েই রয়েছি। কবে যে বাড়ি ফিরতে পারব জানি না। সামনেই পূর্ণিমার কোটাল, আবার যদি বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢোকে সেই ভয়েও এখন বাড়ি ফিরতে চাইছি না।’’ বিভূতি, বন্দনাদের মতোই এই একই অবস্থা আশপাশের বহু পরিবারের।

Cyclone Amphan Relief River Dam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy