Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Sundarbans

Sundarban: ক্ষতিপূরণ না মেলায় জমি দিতে আপত্তি মালিকের

মৌসুনির পয়লা ঘেরি এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বর্ষার মুখে বৃষ্টির মধ্যে বাঁধের কাজ হওয়ায় গুণগত মান একদমই ঠিক নয়।

অসম্পূর্ণ: এই অংশেই রিং বাঁধ দেওয়া যাচ্ছে না।

অসম্পূর্ণ: এই অংশেই রিং বাঁধ দেওয়া যাচ্ছে না। ছবি: দিলীপ নস্কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মৌসুনি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫৮
Share: Save:

ইয়াসের জেরে মাটির দেওয়াল, টালির চালের বাড়ি ভেঙে তছনছ হয়েছিল। কিন্তু বাড়ি তৈরির সরকারি কোনও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। তাই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জমির উপর দিয়ে যাওয়া চিনাই নদীর রিং বাঁধের কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। এ দিকে, মৌসুনির পয়লাঘেরি গ্রামের কাছে রিং বাঁধ তৈরি না হলে বর্ষায় এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।

মৌসুনি পঞ্চায়েত এলাকাটি চিনাই, হাতানিয়া-দোহানিয়া নদী ও সমুদ্রে ঘেরা। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার নদী বাঁধ ভেঙে সম্পূর্ণ এলাকা নোনা জলে প্লাবিত হয়েছিল। তখন সাড়ে ৬ হাজার মাটির বাড়ি নোনা জলে ডুবে যায়। পরে জল নামতেই প্রায় সমস্ত মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে। ভেঙে পড়া মাটির বাড়িগুলির বাসিন্দাদের জন্য ‘দুয়ারে ত্রাণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি ভাবে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ওই দ্বীপের বহু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারই ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা পায়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

মৌসুনি পয়লা ঘেরির বাসিন্দা রত্নেশ্বর দাসও ক্ষতিপূরণ পাননি বলে দাবি। চিনাই নদীর কাছেই ছিল রত্নেশ্বরের টালির চালের মাটির ঘরটি। ইয়াসের সময় সেটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। এদিকে বর্ষার মুখে ভেঙে যাওয়া বাঁধ, কোথাও আবার রিং বাঁধের কাজ শুরু হয়। রিং বাঁধ তৈরির সময় রত্নেশ্বরের জমির বেশ কিছুটা অংশ বাঁধের দিকে পড়ে যায়। অন্যদের জমিতে রিং বাঁধে কোনও বাধা না পেলেও, বেঁকে বসেন ওই জমির মালিক রত্নেশ্বর। তাই দীর্ঘদিন ধরে রিং বাঁধ কাজ বন্ধ রয়েছে।

রত্নেশ্বরের দাবি, “ইয়াসে বাড়িটি ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। ক’দিন ধরে ত্রাণ শিবিরে পরিবারে নিয়ে ছিলাম। এখন একটা পলিথিন ঢাকা অস্থায়ী কুঁড়েঘরে বসাবস
করছি। আমি জমির জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ চাইনি। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ক্ষতিপূরণ কেন পাব না। তাছাড়া অন্যের পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পেলেন, তা হলে আমি কেন পাব না।” তিনি বলেন, পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসনের কাছে দরবার করেও কোনও সুরাহা মেলেনি। শুধুই আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে যে, টাকা এসে যাবে।

মৌসুনির পয়লা ঘেরি এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বর্ষার মুখে বৃষ্টির মধ্যে বাঁধের কাজ হওয়ায় গুণগত মান একদমই ঠিক নয়। জোয়ার বাড়লে বাঁধ ভেঙে এলাকা ফের প্লাবিত হবে।

মৌসুনির পঞ্চায়েত প্রধান হাসনাবানু বিবি বলেন, “রিং বাঁধ নিয়ে কী সমস্যা হয়েছে আমাকে কেউ জানাননি। তবে ওই ব্যক্তি আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাঁকে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ব্লক প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছিলাম। এছাড়া নদী বাঁধের কাজ নিয়ম মেনেই হচ্ছে। এটা জল আটকানোর জন্য অস্থায়ী ভাবে তড়িঘড়ি তৈরি করা হয়েছে।” নামখানার বিডিও শান্তনু ঠাকুর সিংহ বলেন, “ওই ব্যক্তি আবেদন করতে গিয়ে কোনও সমস্যা হতে পারে। সেই কারণে ক্ষতিপুরণ পাননি। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sundarbans compensation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE