E-Paper

শোভাবাজার রাজবাড়ির নিয়ম মেনেই পুজো নেতড়ার চক্রবর্তী বাড়িতে

জনার্দন সার্বভৌমের টোল চালাতেন। তাঁর পঞ্চম পুরুষ পণ্ডিত রামব্রহ্ম চক্রবর্তী শোভাবাজারের রাজবাড়ির পুরোহিত ছিলেন। তিনি ১৮৮২ সালে দানের জমির আয়ের টাকায় নেতড়ায় পুজো শুরু করেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৪
তৈরি হচ্ছে নেতড়ার নন্দীপাড়ার চক্রবর্তী বাড়ির প্রতিমা। ছবি: দিলীপ নস্কর।

তৈরি হচ্ছে নেতড়ার নন্দীপাড়ার চক্রবর্তী বাড়ির প্রতিমা। ছবি: দিলীপ নস্কর।

নবাব আলিবর্দি খাঁ জনার্দন সার্বভৌমের পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ হয়ে হাজার বিঘা জমি দান করেছিলেন। সেই জমির আয়ের টাকায় শুরু হয়েছিল ডায়মন্ড হারবারের নেতড়া নন্দীপাড়ার চক্রবর্তী পরিবারের দুর্গাপুজো। এ বছর এই পুজো ১৪২ বছরে পড়ছে।

জনার্দন সার্বভৌমের টোল চালাতেন। তাঁর পঞ্চম পুরুষ পণ্ডিত রামব্রহ্ম চক্রবর্তী শোভাবাজারের রাজবাড়ির পুরোহিত ছিলেন। তিনি ১৮৮২ সালে দানের জমির আয়ের টাকায় নেতড়ায় পুজো শুরু করেছিলেন। শুরুর দিকে প্রথম দু’বছর ঘট পুজো হয়েছিল। পরে একই কাঠামোয় ডাকের সাজের প্রতিমা পূজিত হন। পরিরারের সদস্যেরা জানান, বিদেশি জিনিস বর্জন নিয়ে দেশ তখন উত্তাল। সে সময় থেকে বিদেশি রেশমি কাপড় বর্জন করে সাবেক বাংলা সাজের প্রতিমা পুজোর চল শুরু হয়। সেই থেকে একই ভাবে পুজো হয়ে আসছে।

চক্রবর্তী পরিবারের সদস্য দেবাশিস, উৎপল চক্রবর্তীরা জানান, নবাবের দেওয়া সম্পত্তি এখন নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। কিছু জমি দখল হয়ে গিয়েছে। তবে নবাবের দেওয়া জমির দালানে এখনও দেবীর পুজো হয়। বর্তমানে রামব্রহ্মের ১০ ছেলের নাতি-নাতনিরাই পুজোর দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এই পুজো অন্য পুজোর থেকে একটু আলাদা ভাবে চলে। শোভাবাজার রাজবাড়ির নিয়ম মেনে পুজো শুরু হয় মহালয়ার কৃষ্ণপক্ষের তিথিতে। পুজো শুরুর কয়েক দিন আগে পাশের শীতলামন্দিরে ঘট বসিয়ে দেবীর আরাধনা চলে। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত মাছভাজা-সহ ১৫-২০ রকমের তরকারি ও ভাজাভুজি দিয়ে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। এ ছাড়া থাকে খিচুড়ির ব্যবস্থা। সমস্ত দর্শনার্থীকে খিচুড়ি খাওয়ানো হয়। পরিবারের সদস্য মানসী, গৌরী, রুবি, ইলা, অঞ্জলি চক্রবর্তীরা জানান, ক’দিন সকাল থেকেই ভোগ রান্নার কাজ শুরু করতে হয়। প্রায় সারা দিন ধরে ভোগ ও খিচুড়ি রান্নার কাজ চলে। খুব আনন্দে কাটে কয়েক দিন।

পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা স্বপন চক্রবর্তী বলেন, “রামব্রহ্মের প্রথম পুত্র দীননাথ বিদ্যারত্নের লেখা পুঁথি পাঠ করে পুজো হয়। শুরু থেকে একই কাঠামোয় দেবী তৈরি করা হয়। পুজোর ক’দিন পরিবারের ছেলেমেয়েরা নানা অনুষ্ঠান করে থাকে। এলাকার
হিন্দু-মুসলিম দুই সম্পদায়ের মানুষই পুজো দেখতে ও খিচুড়ি ভোগ খেতে আসেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2023 diamond habour

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy