Advertisement
E-Paper

নিরাপত্তা বাড়ুক পর্যটন শহরে, চাইছেন সকলেই

পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবেই নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো হওয়া উচিত। তবে নিরাপত্তার নামে পর্যটকদের যাতে হেনস্থা হতে না হয়, সে কথাও পাশাপাশি মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।

নির্মল বসু 

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০২:২১
নয়নাভিরাম: এই সৌন্দর্যের টানেই টাকিতে আসেন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

নয়নাভিরাম: এই সৌন্দর্যের টানেই টাকিতে আসেন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

পর্যটন শহর টাকিতে কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে। এলাকার মানুষজন বলছেন, ইছামতীর পাড়ে নির্জন এলাকায় পাহারার কোনও ব্যবস্থা নেই। সিসিটিভি নেই। নজরদারির অভাব আছে শহরের আরও নানা প্রান্তে। পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবেই নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো হওয়া উচিত। তবে নিরাপত্তার নামে পর্যটকদের যাতে হেনস্থা হতে না হয়, সে কথাও পাশাপাশি মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।

শনিবার টাকির ইছামতীর পাড় ঘেঁষা গেস্ট হাউস, হোটেল, শ্মশান, বিভিন্ন পার্কে পাহারা দেখা যায়নি। টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই পর্যটন এলাকায় সিসি ক্যামেরা এবং আরও আলো লাগানো হবে। সীমান্তরক্ষী, পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নজরদারি বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। পুরকর্মীরাও দেখভাল করছেন।’’ তিনি জানান, পরিচয়পত্র ছাড়া ঘর ভাড়া দিলে গেস্টহাউসের লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন, পর্যটকদের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র জমা নেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিবাহের শংসাপত্র পর্যন্ত দেখতে চায় হোটেল-গেস্টহাউস। সে ক্ষেত্রে পর্যটকদের উপরে নৈতিক খবরদারি করার অভিযোগ ওঠে। বেড়াতে যাঁরা আসেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নামে যেন কোনও ভাবে হেনস্থা করা হয়, সে দিকটা দেখা দরকার বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই।

এলাকায় শান্তিরক্ষার জন্য প্রকাশ্যে মদ বিক্রি বন্ধ করা দরকার বলে মনে করেন নাগরিক সমিতির সম্পাদক প্রণব সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ ও পুরসভাকে বলেও মদের ঠেক বন্ধ করা যায়নি।’’ প্রায়ই মহিলাদের উত্যক্ত করার মতো ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তাঁর। স্থানীয় বাসিন্দা অধীর পাল, দীপক বসু, মণিদীপা গোস্বামীরা বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগেও টাকি শান্ত এবং নিরাপদ শহর ছিল। পুলিশ ও পুরসভার নজরদারির অভাবে সম্প্রতি আশপাশ থেকে মোটর বাইকে উঠতি কিছু যুবক এলাকায় ঢুকে পরিবেশ কলুষিত করছে। পর্যটকেরাও অস্বস্তি বোধ করছেন।’’

টালিগঞ্জের বাসিন্দা মালতি বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছেন ঘুরতে। বললেন, ‘‘কলকাতার কাছে টাকি আমাদের খুব প্রিয় শহর। ছুটির দিন পড়লেই চলে আসি এখানে। কিন্তু ইদানীং দেখছি, ইছামতীর ধারে সেই শান্ত ভাবটা নেই। বড্ড হুল্লোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে আবার গণধর্ষণের ঘটনা। এমনটা কাম্য নয়।’’ স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মনীষা মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক অজয় মুখোপাধ্যায়দের বক্তব্য, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের নিরাপত্তার দিকেও নজর রাখা উচিত পুলিশ-প্রশাসনের।

ধর্ষিতা ছাত্রীর পাশে থেকে সমস্ত রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহ সম্পাদক তথা হাসনাবাদ থানার প্রাক্তন সিআই অনাদি ঘোষ বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশ-প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। টাকির মানুষের নিরাপত্তা এবং ইছামতীর ধারে পুলিশি টহলের দাবিতে আমাদের পক্ষে থানা-পুরসভাকে স্মারকলিপি দেওয়া হচ্ছে।’’

একটি গেস্টহাউসের ম্যানেজার প্রলয় ঘোষের বক্তব্য, তাঁরা পরিচয়পত্র দেখেই কাউকে ঘর দেন। এবং এ ক্ষেত্রে পর্যটকদের হেনস্থা করা হয় না বলেও তাঁর দাবি।

Security Tourism
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy