Advertisement
E-Paper

ছোটদের জন্য পোশাক প্রাক্তনীদের

রাজ্যের অন্যতম আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ব্লক বাগদা। বহু মানুষ আজও দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে বড় হতে হয় ছেলেমেয়েদের।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩৬
উপহার: খুশি খুদে পড়য়ারা। নিজস্ব চিত্র

উপহার: খুশি খুদে পড়য়ারা। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে আজ তাঁরা সকলেই কর্ম জীবনে প্রতিষ্ঠিত। প্রত্যেকের মনে এখনও ছেলেবেলার একটা দুঃখ কুড়ে কুড়ে খায়। পুজোর সময়ে নতুন জামা প্যান্ট পড়ে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরতে পারতেন না কেউ। এখনও ভোলেননি সে কথা।

রাজ্যের অন্যতম আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ব্লক বাগদা। বহু মানুষ আজও দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে বড় হতে হয় ছেলেমেয়েদের।

ছোটবেলার সেই দুঃখ বোধ থেকে স্থানীয় হেলেঞ্চা হাইস্কুলের প্রায় চল্লিশজন প্রাক্তন ছাত্র এ বার এলাকার বহু কচিকাঁচার হাতে তুলে দিলেন নতুন জামা-প্যান্ট। বাগদা এলাকায় দুর্গাপুজো নয়, কালীপুজোই প্রধান উৎসব। কর্মসূত্রে যাঁরা বাইরে থাকেন, তাঁরা এ সময়ে ঘরে ফেরেন। পুজো কেনাকাটাও হয়।

প্রসেনজিৎ সিংহ এখন কাশ্মীরে সেনা বাহিনীতে কর্মরত। পুজোর ছুটিতে গ্রামে ফিরেছেন। বলছিলেন, ‘‘২০০৩ সালে আমরা হেলেঞ্চা হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছিলাম। পুজোতে বাড়িতে এসেছি। বন্ধুদের মধ্যে গল্পগুজব করতে করতে উঠে এসেছিল, ছোটবেলায় নতুন জামা-প্যান্ট না পাওয়ার কথা। সেখান থেকে সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, এ বার থেকে প্রতি বছর পুজোয় কচিকাচাদের নতুন জামা-প্যান্ট দেওয়া হবে। সেই মতো এই ব্যবস্থা।’’

শুক্রবার হেলেঞ্চা হাইস্কুলে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্লকের প্রায় একশো জন কচিকাঁচার হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়া হল। এখন প্রতি বছর ওই কাজ করবেন প্রসেনজিৎ সিংহ, বিপ্লব বিশ্বাস, বিভাস বিশ্বাস অভিজিৎ সিংহের মতো ওই স্কুলে প্রাক্তন ছাত্রেরা, এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।

গোবিন্দ সরকার বক্রেশ্বর থার্মাল প্ল্যান্টে সহকারী বাস্তুকার। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সকলেই দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়েছি। এখন সরকারি চাকরি করছি। এখনকার ছোটরা যাতে ছোটবেলা পুজোয় যাতে নতুন পোশাক না পেয়ে দুঃখ পায়, সে কারণেই আমাদের এই উদ্যোগ। বন্ধুরা সকলেই শারীরিক ভাবে উপস্থিত থাকতে না পারলেও টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে জানালেন তিনি।

গ্রামে ঘুরে ঘুরে বন্ধুরা খোঁজ-খবর নিয়েছেন, কোন পরিবারের বাচ্চাদের নতুন পোশাক হয়নি। সেই মতো ডেকে আনা হয়েছে তাদের।

নতুন পোশাক পেয়ে খুশি কচিকাঁচারা। তৃতীয় শ্রেণির দেবজিৎ তরফদার বলে, ‘‘বাবা ভ্যান চালান। এ বার পুজোয় নতুন জামা কিনে দিতে পারেনি। কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু এ বার মন ভাল হয়ে গেল।’’

অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন হেলেঞ্চা হাইস্কুলের শিক্ষক অঘোরচন্দ্র হালদার। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের প্রাক্তনীদের এমন উদ্যোগে আমরাও গর্বিত।’’

Ex Students Dresses
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy