ঘরে-ফেরা: মায়ের সঙ্গে রাজেশ বিশ্বাস (বাঁ দিকে)। ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
আফগানিস্তান থেকে দিল্লি হয়ে বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরলেন বনগাঁ, অশোকনগর, গোপালনগরের তিন যুবক।
বনগাঁর খরুড়া রাজাপুর গ্রামের রাজেশ বিশ্বাস সে দেশে আমেরিকান ও ন্যাটো বাহিনীর সেনাদের খাবার পরিবেশন করার কাজ করতেন। গিয়েছিলেন মার্চ মাসে। শুক্রবার রাজেশ বলেন, “আপনারা যা টিভির পর্দায়, ইন্টারনেটে দেখেছেন, আমি তা চাক্ষুষ করেছি। দেখেছি, দেশ ছাড়তে চেয়ে দলে দলে আফগান কাবুল বিমানবন্দরে জড়ো হচ্ছেন। সকলেই বিমানে উঠতে চান। উঠতে না পেরে বিমান ধরে ঝুলতে দেখেছি মানুষকে। মাটিতে পড়েও গিয়েছিলেন অনেকে। গোলাগুলির শব্দে প্রতি মুহূর্তে কেঁপে উঠতাম। তবে কাবুল বিমানবন্দর এলাকায় আমেরিকান ও ন্যাটো সেনাদের মধ্যে থাকায় কোনও বিপদ হয়নি।”
২৬ অগস্ট ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে কাবুল থেকে রাজেশ দিল্লি পৌঁছন। দিল্লি ফেরার পরে কয়েকদিন নিভৃতবাসে থাকতে হয়েছিল। তারপরে বাড়ি ফেরেন। একমাত্র ছেলে বাড়ি না ফেরায় দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন বাবা-মা। রাজেশের মা ভক্তি বলেন, “দিন বারো আগে রাজেশের ছেলে হয়েছে। সে কবে সন্তানের মুখ দেখবে, সেই অপেক্ষায় ছিলাম।”
আর আফগানিস্তান যেতে চান না বলে জানান রাজেশ। তিনি বলেন, “তালিবান শাসনে দেশটা বসবাসের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে।”
অশোকনগরের আসরফাবাদ এলাকার বাসিন্দা সুজয় দেবনাথও কাবুলে আমেরিকান সেনাবাহিনীর ক্যান্টিনে কাজ করতেন। তাঁর কথায়, “২৬ অগস্ট ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানে করে দিল্লি রওনা দিই। পরদিন দিল্লি পৌঁছে খবর পাই, কাবুল বিমানবন্দরের গেটে বিস্ফোরণ হয়েছে। অনেকে মারা গিয়েছেন। ওখানেই আমরা ছিলাম। ভাবলেই ভয়ে শিউরে উঠছি।” আর সে দেশে ফিরতে চান না বলে জানান সুজয়ও।
তবে আমেরিকান সেনা ডাকলে আবার আফগানিস্তানে যেতে চান গোপালনগর থানার রামশঙ্করপুর গ্রামের যুবক জয়ন্ত বিশ্বাস। কাবুলে আমেরিকান ও ন্যাটো বাহিনীর জন্য রান্না করতেন তিনি। কয়েকজন পরিচিত যুবকের সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা অবশ্য আগেই বাড়ি ফিরে এসেছেন। জয়ন্ত এ দিন ফেরেন।
তাঁর কথায়, “কয়েক হাজার আমেরিকান সেনার খাবারের দায়িত্ব ছিল আমার হাতে। ফলে আগে আসতে পারিনি।” তাঁর কথায়, “আমেরিকান সেনারা ডাকলে আবার যাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy