আদিত্য মাঝি
হোলির সকালে পড়শির বাড়িতে খেলতে গিয়েছিল চার বছরের শিশুটি। সেখান থেকে গোলাকৃতি একটি কৌটোকে বল ভেবে কুড়িয়ে এনে লোফালুফি খেলছিল সে। আচমকা কান ফাটানো একটা আওয়াজ। ওই কৌটো ফেটে এক হাতের কিছুটা অংশ উড়ে গেল শিশুটির। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্য হাত এবং দুই চোখও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আদিত্য মাঝি নামে ওই শিশুটিকে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার ডান হাতের বেশ কিছুটা অংশ উড়ে গিয়েছে বিস্ফোরণে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে খড়দহে। এই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন?
পুলিশ জানায়, টিটাগড় স্টেশনের কাছে খড়দহের জি সি রোডের খাটালপাড়ার বাসিন্দা সিকান্দর মাঝির ছেলে আদিত্য এ দিন প্রতিবেশী ভোলা যাদব ওরফে টনটনির বাড়িতে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ সেখানে কাটানোর পরে ভোলাদের বাড়িতে পড়ে থাকা একটি গোলাকৃতি কৌটো নিয়ে ফিরে আসে সে। শয্যাশায়ী বাবাকে কৌটোটি দেখানোর পরে ঘরের মধ্যেই সেটি নিয়ে লোফালুফি খেলছিল আদিত্য। তখনই কোনও ভাবে তার হাত ফস্কে কৌটোটি খাটে লাগতে বিস্ফোরণ হয়।
ঘটনার সময়ে পাড়ায় হোলির উৎসব চলছিল। সিকান্দরদের ঘর থেকে বিকট আওয়াজ পেয়ে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে ছটফট করছে আদিত্য। খবর পেয়ে আসে খড়দহ থানার পুলিশবাহিনী। প্রথমে শিশুটিকে ব্যারাকপুর বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় আর জি কর হাসপাতালে। প্রত্যক্ষদর্শীরাই পুলিশকে জানান, ভোলাদের বাড়ি থেকে ওই কৌটোটি এনেছিল আদিত্য। আদিত্যর মা লক্ষ্মীদেবী বলেন, ‘‘কোথাও কিছু পেলেই বাড়িতে আমাদের দেখাতে নিয়ে আসত। এ দিনও তাই করেছিল। কিন্তু সেটি যে আসলে বোমা, তা বুঝব কী ভাবে!’’
পুলিশ জেনেছে, ভোলার দাদা রমেশ যাদব ছিল ওই এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী। ২০০৫-এ সে খুন হয়। তাদের বাড়িতেই বহু দিন ধরে কৌটো বোমাটি পড়ে ছিল। বাড়িতে বোমা থাকার অপরাধে ভোলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, বোমাটি অনেক পুরনো হওয়ার কারণে শিশুটির শুধু হাত ও চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তা না হলে বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হতো তার। আশপাশের বাড়িরও ক্ষতি হতে পারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy