Advertisement
E-Paper

থানার নাম ভুল বলে গ্রেফতার ভুয়ো জওয়ান

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫৪
সনজিৎ প্রামাণিক

সনজিৎ প্রামাণিক

গাঁট্টাগোট্টা চেহারা। ছোট করে ছাঁটা চুল। জওয়ানের পোশাক গায়ে। মুখে হম্বিতম্বি।

বাড়িতে ঢুকে টাকা চেয়ে হুজ্জুত শুরু করেছিল যুবকটি। নিজেকে সেনা জওয়ান বলে পরিচয় দিয়ে কী তার দাপট! লোকজনকে মারধর, শ্লীলতাহানি করে বলেও অভিযোগ। তবে এলাকার লোকজন সন্দেহ হওয়ায় ওই যুবক ও তার ছয় সাগরেদকে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গ্রেফতার করেছে সনজিৎ প্রামাণিক নামে ওই যুবক ও তার সঙ্গীসাথীদের।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার শিমুলিয়াপাড়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, সনজিতের বাড়ি ভাঙড় থানার বৈরামপুর এলাকায়। নিজেকে সেনা জওয়ান বলে পরিচয় দিলেও কোনও নথিপত্র দেখাতে পারেনি সে। বাকি যারা ধরা পড়েছে, তাদের বাড়ি স্বরূপনগরের হরিশপুর গ্রামে। আটক করা হয়েছে ৩টি মোটর বাইক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সেনার উর্দিতেই সনজিৎ শিমুলিয়াপাড়ার এক ব্যক্তির বাড়িতে হাজির হয়। সঙ্গে আরও ৬ জন। বাড়ির সকলে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। যে ব্যক্তির খোঁজে সনজিৎরা গিয়েছিলেন, তিনি অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর স্ত্রীর কাছে যুবক নিজেকে সেনা বাহিনীর ক্রাইম ব্রাঞ্চের সিনিয়র অফিসার হিসাবে পরিচয় দেয়।

মহিলা স্বামীকে খবর পাঠান। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি হন্তদন্ত হয়ে হাজির হন। সনজিৎ তাঁর কাছে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে মারধর শুরু করে ওই ভুয়ো জওয়ান। স্ত্রী স্বামীকে বাঁচাতে এলে তাঁকেও মারধর, শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, স্বামী-স্ত্রীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন। প্রহৃত ব্যক্তি টাকা দিতে রাজি হন। তিনি জানান, রবিবার তিনি টাকা দিয়ে দেবেন।

এ সবের মধ্যে কেউ কেউ থানায় ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর কথা বললে, সেনা জওয়ান তাদের জানায়, থানায় জানিয়ে লাভ হবে না। সে চাঁদপাড়া থানায় গোটা বিষয়টি জানিয়ে এসেছে। জওয়ানের মুখে চাঁদপাড়া থানা শুনে সকলের খটকা লাগে। কারণ চাঁদাপাড়া বলে কোনও থানাই নেই। ওই এলাকা গাইঘাটা থানার আওতায় পড়ে। ওই যুবককে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, থানায় গিয়েও সনজিৎ থানার ওসি অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের কাছে নিজেকে জওয়ান হিসাবে পরিচয় দেয়। ওসি পরীক্ষা করার জন্য, শারীরিক কসরতের সামান্য দু’একটি উদাহরণ জানতে চান। কিন্তু সনজিতের সে সব কিছু জানা ছিল না। যেমন, ‘সাবধান’ শুনে দু’পা জোড়া করে দাঁড়ানোর কথা। সনজিৎ এক পা তুলে দাঁড়ায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। রকম সকম দেখে বোঝা যায়, গোটাটাই ভুয়ো। গ্রেফতার করা হয় সনজিৎ ও তার সঙ্গীদের।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, শিমুলিয়াপাড়ার ওই ব্যক্তি স্বরূপনগরের বিপুল সেন নামে এক যুবককে সৌদি আরবে চাকরি দেবেন বলে ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। বিপুল সে দেশে গিয়ে দেখেন, যে কাজ তাঁকে দেওয়ার কথা ছিল, সেই কাজ দেওয়া হয়নি। তিনি ফিরে আসেন। ওই ব্যক্তির কাছে ৩ লক্ষ টাকা ফেরত চান। কিন্তু ওই ব্যক্তি টাকা দিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, বিপুল সনজিতের পূর্ব পরিচিত। সনজিৎ জানায়, টাকা আদায় করে দেবে সে। বিনিময়ে তাকে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। সেই মতোই ভুয়ো জওয়ান সেজে শুক্রবার সে ওই ব্যক্তির বাড়িতে হাজির হয়। সেনার পোশাক সে কোথা থেকে পেল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

Fake Soldier Police Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy