Advertisement
E-Paper

জ্বর গায়ে শেষকৃত্য মায়ের

জ্বর হওয়ায় পূর্বপাড়ার পূর্ণিমা হালদার (৩৯) সোমবার ভর্তি হন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। অনেকের সঙ্গে তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলে মানবও গিয়েছিল মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৭
হাসপাতালে: মায়ের কাজ সেরে এসেই বিছানায় ছেলে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

হাসপাতালে: মায়ের কাজ সেরে এসেই বিছানায় ছেলে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

জ্বর কেড়েছে মাকে। নিরুপায় ছেলে জ্বর গায়েই হাসপাতাল থেকে এসে মুখাগ্নি করল মায়ের।

বুধবার সকালে বনগাঁর পূর্বপাড়ায় হালদার পরিবারের এই বিপর্যয়ে ভেঙে পড়েন পড়শিরা। অনেকেই বলছেন, জ্বর কোন পরিবারে যে কী ভাবে হানা দেবে, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।

জ্বর হওয়ায় পূর্বপাড়ার পূর্ণিমা হালদার (৩৯) সোমবার ভর্তি হন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। অনেকের সঙ্গে তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলে মানবও গিয়েছিল মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে। মঙ্গলবার বিকেলে চিকিৎসকেরা পূর্ণিমাদেবীকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। পরিবারের সদস্যেরা তাকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে রওনা দিলেও মানব যেতে পারেনি। সে বাড়িতে ছিল। বনগাঁ পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনোতোষ নাথ পূর্ণিমাদেবীর বাড়িতে গিয়ে দেখেন, মানব জ্বর কাতরাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ডেকে মনোতোষবাবু তাকে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করান।

পূর্ণিমাদেবীকে অবশ্য কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পথেই তিনি মারা যান। তাঁর দেহ ফিরিয়ে আনা হয় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। বুধবার সকালে হাসপাতালে বন্ড দিয়ে ছুটি করিয়ে মায়ের শেষকৃত্যের জন্য মানবকে শ্মশানে নিয়ে যায়। তার পরে ফের ফিরিয়ে আনা হয় ওই হাসপাতালে।

মৃত: পূর্ণিমা হালদার।

চিকিৎসকেরা পূর্ণিমাদেবীর ‘ডেথ সার্টিফিকেটে’ মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘কার্ডিও রেসপিরেটরি ফেলিওর’-এর কথা লিখেছেন। স্ত্রী-বিয়োগের শোকের মধ্যেও বারবার ছেলের খোঁজ নিচ্ছিলেন পূর্ণিমাদেবীর স্বামী মহাদেববাবু। আর আঁকড়ে ধরছিলেন মেয়ে, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া পিউকে। মহাদেববাবু টিনের বাক্স বানানোর কাজ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘সংসারটা ভেসে গেল। মায়ের কাজ ছেলে ছাড়া কে করবে? তাই ওকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ছেলেটা দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরুক, ঈশ্বরের কাছে এটাই কামনা করি।’’

বুধবার সকালে বনগাঁ মহকুমায় আরও এক জন জ্বরে মারা যান। বিনয় মজুমদার (৩০) নামে ওই যুবক গাইঘাটার ফুলসরা ঢাকাপাড়ার বাসিন্দা। মঙ্গলবার তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বুধবার তাঁকে কলকাতায় পাঠানোর নির্দেশ দেন চিকিৎসক। পথেই মৃত্যু হয় বিনয়ের। তাঁর কাকা বাণীব্রতবাবু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আমাদের ওখানে মশা মারার কোনও কাজ হচ্ছে না। মশা মারলে হয়তো ভাইপোকে হারাতে হত না।’’ পঞ্চায়েত অভিযোগ মানেনি।

Fever patient Son Mother Funeral
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy