Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Ghoramara Island

Natural Disaster: প্রকৃতির রোষেই বার বার ‘উদ্বাস্তু’, লড়াই যেন থামতেই চায় না ঘোড়ামারার পাঞ্চালীদের

কখনও আমপান, কখনও বা ইয়াস—  ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে বার বার ঘরহারা হয়েছেন পাঞ্চালী। তাঁর আক্ষেপ, প্রকৃতিই সর্বস্বান্ত করে দিচ্ছে তাঁদের।

আমপানের ঘূর্ণিঝড়ে  ভিটেমাটি হারিয়েছেন মন্দিরতলার বাসিন্দা পাঞ্চালী মণ্ডল।

আমপানের ঘূর্ণিঝড়ে ভিটেমাটি হারিয়েছেন মন্দিরতলার বাসিন্দা পাঞ্চালী মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:৫৮
Share: Save:

দুর্যোগ আসে-যায়, কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই যেন থামতেই চায় না। প্রকৃতির রোষে বার বার ‘উদ্বাস্তু’ হওয়াই যেন ভবিতব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘোড়ামারা দ্বীপের পাঞ্চালী মণ্ডলদের। কখনও আমপান, কখনও বা ইয়াস— ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে বার বার ঘরহারা হয়েছেন। পাঞ্চালীর আক্ষেপ, প্রকৃতিই সর্বস্বান্ত করে দিচ্ছে তাঁদের।

ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ আছড়ে পড়ার আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ঘোড়ামারা দ্বীপের ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে বহু বাসিন্দাকে সরিয়ে এনেছিল সাগরদ্বীপের বামনখালি হাইস্কুলের আশ্রয় শিবিরে। তবে দুর্যোগের আশঙ্কায় অনেকেই শিবির ছাড়তে সাহস করেননি। সেখানেই সপরিবার আটকে পড়েছেন ঘোড়ামারা দ্বীপের মন্দিরতলার বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের পাঞ্চালী। আমপানের ঘূর্ণিঝড়ে তাঁদের মাটির ঘর তছনছ হয়ে গিয়েছে। রাস্তার ধারে ছিটেবেড়া দেওয়া আস্তানা বানিয়েছিলেন। তবে ইয়াসের সময় জলস্ফীতির জেরে সেটিও হারিয়েছেন। পাঞ্চালীর স্বামী পরিমল মণ্ডল চাষবাস করেন। যদিও সংসারের অনটন মেটাতে মাঝেমধ্যে ভিন্‌ রাজ্যেও পাড়ি দিতে হয় তাঁকে। তাতে যে আর্থিক সুরাহা হয়েছে, এমন নয়। অভাবের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

আশ্রয় শিবিরে সন্তান-সহ পাঞ্চালী মণ্ডল।

আশ্রয় শিবিরে সন্তান-সহ পাঞ্চালী মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

আশ্রয় শিবিরে বছর তিনেকের ছেলেকে খাওয়াতে খাওয়াতে পাঞ্চালী বলেন, ‘‘নদীর ধারে থাকায় ঘর হারানোর চিন্তা লেগেই থাকে। দুর্যোগের জন্য বছরে তিন-চার বার আশ্রয় শিবিরে আসতে হয়। এ ভোগান্তিতে সরকারকে দোষ দিয়ে কী লাভ! প্রকৃতিই তো সর্বস্বান্ত করে দিচ্ছে।’’

পাঞ্চালীর দাবি, ঘোড়ামারা দ্বীপের কেউই ঝড়ের খবরে আর আতঙ্কিত হন না। দুর্যোগে ভিটেমাটি হারানোর যন্ত্রণা এখন যেন সহ্য হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আগে দুর্যোগের কথা শুনলেই আতঙ্ক হত। এখন জানি, ঝড়ের আগে ঘর ছাড়তে হবে। দুশ্চিন্তা করেও লাভ নেই। কারণ বাড়ি ফিরে দেখব, ঘর ভেঙেছে বা জমি চলে গিয়েছে নদীর তলায়। দুর্যোগ আসে-যায়, কিন্তু আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই থামে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE