Advertisement
০৬ মে ২০২৪

তরুণীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার, সন্দেহ খুন

গ্রামের মানুষ জানান, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিল দীপান্বিতা। পাড়ায় নম্র-শান্ত স্বভাবের মেয়ে হিসেবেই পরিচিত ছিল। সেই মেয়েটির এমন দশা হয় কী করে। ওই তরুণীর মৃত্যু আত্মহত্যা হতে পারে না বলে দাবি এলাকাবাসীর। আর যে ভাবে দীপান্বিতার দেহ উদ্ধার হয়েছে তাতে ধোঁয়াশা থেকেই যায় বলে দাবি এলাকাবাসীর।

দীপান্বিতা মজুমদার

দীপান্বিতা মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৮
Share: Save:

এক তরুণীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের ছোট জিরাকপুরের বিশ্বাসপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম দীপান্বিতা মজুমদার (১৯)। তিনি বসিরহাট কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

তবে এলাকাবাসীর দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়। ওই ছাত্রীকে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেলে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।

কী ঘটেছিল?

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে ওই তরুণীর বাবা দিলীপবাবু মারা যান। ওই ছাত্রীর মা কৃষ্ণাদেবী তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকতেন। ওই দিন রাত সাড়ে ৩টার সময় দীপান্বিতা মায়ের সঙ্গে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর মা কৃষ্ণাদেবী জানান, বাড়ির কাছেই শৌচালয়। সেখান থেকে ফিরে দু’জনেই ঘুমিয়ে পড়ি। তাঁর কথায়, ‘‘ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘুম ভাঙে। দেখি, মেয়ে পাশে নেই। বাইরে বেরিয়ে দেখি শৌচালয়ের কাছে আগুনে কী একটা পুড়ছে। সামনে যেতেই বুঝি আমার মেয়ে।’’ কৃষ্ণাদেবীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা বেরিয়ে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। হরিশপুরের শাখা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার ওই তরুণীর দাদা দীপাঞ্জন বলেন, ‘‘কী ভাবে কী হল কিছুই বুঝতে পারছি না। পুলিশের সঠিক তদন্ত চাই।’’

গ্রামের মানুষ জানান, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিল দীপান্বিতা। পাড়ায় নম্র-শান্ত স্বভাবের মেয়ে হিসেবেই পরিচিত ছিল। সেই মেয়েটির এমন দশা হয় কী করে। ওই তরুণীর মৃত্যু আত্মহত্যা হতে পারে না বলে দাবি এলাকাবাসীর। আর যে ভাবে দীপান্বিতার দেহ উদ্ধার হয়েছে তাতে ধোঁয়াশা থেকেই যায় বলে দাবি এলাকাবাসীর।

ধোঁয়াশা কোথায়? এক: ওই তরুণীর পোড়া দেহ যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে সেখানে চাপ চাপ রক্ত পড়েছিল। পুড়ে গেলে রক্ত বেরোয় কী করে?

দুই: যেখানে ওই তরুণী গায়ে আগুন দিয়েছেন সেখানে গাছগাছালি ভরা। ওই তরুণী যদি নিজে ইচ্ছা করে গায়ে আগুন দেন। তা হলে দাঁড়িয়ে আগুন দেবেন। সেক্ষেত্রে গাছ পুড়বে। কিন্তু এক্ষেত্রে গাছের একটি পাতাও পোড়েনি। শুধু যেখানে দেহ পড়েছিল সেখানকার কিছু ছোট গাছ পুড়েছে।

পুড়ে যাওয়ার পর যন্ত্রণায় মানুষের আর্তচিৎকার বেরিয়ে আসে। কিন্তু ওই তরুণীর কোনও আর্তচিৎকার শুনতে পাননি প্রতিবেশীরা। চারিদিকে আগুনের কোনও চিহ্নও মেলেনি। গ্রামবাসী দেবাংশু বিশ্বাস, দীপঙ্কর মজুমদার বলেন, ‘‘কোনও চিৎকার না শোনায়, আর যে ভাবে দেহ উদ্ধার হয়েছে তাতে সন্দেহ আরও বাড়ছে।’’

এখন পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীরাও ময়না তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন।

—নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE